শনিবার (১১ নভেম্বর) নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রোববারের সমাবেশের ব্যাপারে ঢাকা মহানগর পুলিশের অনুমতি পাওয়ার কথা জানান।
নিজেদের ঘোষিত ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে গত ৭ নভেম্বরই এই সমাবেশটি করতে চেয়েছিলো বিএনপি।
অবশ্য, ওই সময় চলমান কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি সম্মেলনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কার কারণেই বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি বলে জানানো হয় সরকারি সূত্রে।
রবিবার বিএনপিকে সমাবেশ করতে দেয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাবই দেখাচ্ছেন সরকারি দলের নেতারা। শনিবার সকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বলেন, “বিএনপির সমাবেশ শান্তিপূর্ণ হলে সরকার সহযোগিতা করবে। তবে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। ”
মূলত চলতি মাসের শুরুতে ৭ নভেম্বর সমাবেশ করতে না পারার বিষয়টি পরিষ্কার হতেই গত ৬ নভেম্বর চিঠি দিয়ে ১২ নভেম্বর সমাবেশ করার ব্যাপারে ঢাকা মহানগর পুলিশকে জানায় বিএনপি। মাঝের দিনগুলো নীরব থেকে সমাবেশের ঠিক একদিন আগে অনুমতি প্রদান করে ডিএমপি।
শনিবার মির্জা ফখরুল জানান, জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের গণসমাবেশ অনুষ্ঠানের ব্যাপারে ডিএমপির সম্মতিপত্র তাদের কাছে এসে পৌঁছেছে। ২৩টি শর্ত দিয়ে তারা এই সমাবেশ অনুষ্ঠানের সম্মতি দিয়েছে।
সমাবেশ সফল করতে সরকারের সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, “আশা করি আপনারা সহযোগিতা করবেন। সমাবেশে বাধা দিয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশে বিঘ্ন ঘটাবেন না। ”
এছাড়া বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্য সরকারের পাতানো কোনো ধরনের ফাঁদে পা না দিতেও দলের নেতা-কর্মীদের পরামর্শ দেন বিএনপি মহাসচিব।
এদিকে সমাবেশ সামনে রেখে রাজধানী ও দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধরপাকড়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। দেশের অনেক স্থান থেকেই রাজধানীমুখী বাস ও লঞ্চ চলাচল না করার খবর পাওয়া গেছে। বিভিন্নস্থানে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারসহ পুলিশ হয়রানি করছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল।
রবিবারের এই জনসভার মধ্য দিয়ে প্রায় দুই বছর পর ঢাকায় কোনো সমাবেশে বক্তৃতা দিতে উঠবেন খালেদা জিয়া। এর আগে সর্বশেষ গত বছরের ৫ জানুয়ারি নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে জনসভায় অংশ নেন তিনি। আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খালেদার সর্বশেষ সমাবেশ হয়েছিল ২০১৪ সালের ২০ জানুয়ারি।
এদিকে সমাবেশ সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের তরফে ২৩টি শর্ত দেয়া হয়েছে বিএনপিকে। পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মহা. আশরাফুজ্জামানের স্বাক্ষরে বিএনপিকে দেওয়া চিঠিতে দুপুর ২টায় শুরু করে বিকাল ৫টার মধ্যে সমাবেশ শেষ করতে বলা হয়েছে। সমাবেশ শুরুর সর্বোচ্চ ২ ঘণ্টা আগে পুলিশ নেতা-কর্মীদের সোহরাওয়ার্দীতে ঢুকতে দেবে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, মূলত রাজনৈতিক ইস্যুগুলোর ওপরই বক্তব্য রাখবেন বিএনপি নেতারা। তবে প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ, নির্বাচন, মামলা, দ্রব্যমূল্যসহ অন্যান্য ইস্যুতেও বক্তব্য রাখতে পারেন খালেদা জিয়া।
দুপুর ২টার পর খালেদা জিয়া সমাবেশস্থলে পৌঁছাবেন বলে জানা গেছে বিএনপি সূত্রে। তবে এর আগে থেকেই সমাবেশ মঞ্চে শুরু হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৭
আরআই