সম্প্রতি ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর পর এসব সংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে আগামীতে তারা আর সংগঠনের নেতৃত্বে থাকতে পারছেন না বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো।
যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী এখন অন্তরালে রয়েছেন। গত ১১ অক্টোবর সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সভাতেও তিনি উপস্থিত ছিলেন না। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর তার ব্যাংক হিসাব তলব ও অনুমতি ছাড়া বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকেই তাকে আর সংগঠনের কোনো কার্যক্রমে দেখা যাচ্ছে না।
সূত্র জানায়, আগামী ২৩ নভেম্বর যুবলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ওই সম্মেলনে তার সভাপতিত্ব করার সম্ভাবনা নেই। সম্মেলন নিয়ে আগামী ২০ অক্টোবর যুবলীগের নেতারা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ বৈঠকেও যুবলীগের চেয়ারম্যান থাকতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রী তাকে ওই বৈঠকে যেতে নিষেধ করেছেন বলে জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ওই বৈঠকে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ প্রেসিডিয়াম সদস্য, যুগ্ম সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকেরা থাকবেন।
যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদেরও আগামী কমিটিতে থাকার সম্ভাবনা নেই। তার বিরুদ্ধে বড় ধরনের কোনো অভিযোগ না উঠলেও সম্প্রতি যুবলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে যেসব অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তার প্রতিবাদ বা প্রতিকারের উদ্যোগ নেননি বলে সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সভায় তাকে দোষারোপ করা হয়েছে। এসব অনিয়মের বিষয় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে অবহিত করার সুযোগ তার থাকলেও তিনি সেটা করেননি বলে যুবলীগ নেতাদের অভিযোগ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, আগামী ২০ অক্টোবর যুবলীগের সাংগঠনিক নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে সম্মেলনের বিষয়ে আলোচনা হবে। তার সঙ্গে সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য, যুগ্ম সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকেরা দেখা করবেন। সেখানে চেয়ারম্যান থাকবেন না। যুবলীগের কেউ প্রার্থী হয় না, নেত্রী যাকে যোগ্য মনে করেন, তাকে দায়িত্ব দেন।
এদিকে, আগামী ১৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন। এ সম্মেলনের পর সংগঠনের সভাপতি মোল্লা আবু কাউসারের আর নেতৃত্বে থাকার সম্ভাবনা নেই। সাম্প্রতিক অভিযানের পর ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে ক্যাসিনো পরিচালনার বিষয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। এতে আওয়ামী লীগসহ রাজনৈতিক অঙ্গনে মোল্লা কাউসারের ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
পংকজ দেবনাথ ২০০৩ সাল থেকে পর পর দু’বার স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন। গত সম্মেলনে তিনি সভাপতি প্রার্থী হলেও তাকে সাধারণ সম্পাদকই রাখা হয়। এবার তার আর সংগঠনটির নেতৃত্বে থাকার সম্ভাবনা নেই।
আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের একাধিক সূত্র জানায়, শুধু স্বেচ্ছাসেক লীগের পদই নয়, আগামী সংসদ নির্বাচনেও বরিশাল-৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথের দলীয় মনোনয়ন পাওয়াতেও সমস্যা হতে পারে। কারণ, সম্প্রতি মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। এই স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রতি পংকজ দেবনাথের সমর্থন ছিল বলে অভিযোগ স্থানীয় নেতাকর্মীদের।
এসব বিষয়ে জানতে মোল্লা আবু কাউসার ও পংকজ দেবনাথের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২১০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৯
এসকে/একে