মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় মুক্তি মঞ্চের উদ্যোগে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে এলডিপি সভাপতি অলি আহমদ বক্তব্যে এ কথা বলেন।
এর আগে সকালে একই হলরুমে এলডিপি নেতাদের একাংশ অলির প্রতি অনাস্থা জানিয়ে নতুন কমিটি গঠন করে। ওই কমিটির সভাপতি হিসেবে আব্দুল করিম আব্বাসী এবং সদস্য সচিব হিসেবে শাহাদাত হোসেন সেলিমের নাম ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে দল ভাঙার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে অলি বলেন, বিগত ১২ বছর ধরে আমি এই দলটি প্রতিষ্ঠা করেছি। তারা ছিল আমার দলের সদস্য সন্তান সমতুল্য। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলাটা অশোভনীয়। সুতরাং তাদের বিরুদ্ধে আমার কোনো মন্তব্য নেই।
তিনি বলেন, এলডিপি আমার নামে নিবন্ধন করেছি। এটি এক নম্বর রাজনৈতিক নিবন্ধিত দল। সুতরাং এলডিপি অন্য কারও আইনগতভাবে নেওয়ার অধিকার নেই।
গত ৯ নভেম্বর এলডিপির যে নির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, তা অগঠনতান্ত্রিক এবং সেখানে অলির বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করেন এলডিপির নতুন অংশের নেতারা। এছাড়া অলির ঘোষিত ওই কমিটিতে নেতাদের পদবঞ্চিত করার অভিযোগ। এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে অলি আহমদ বলেন, কোনো নেতাকে দল থেকে বঞ্চিত করা হয়নি। সে সবসময় নিজেকে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে লিখতেন। আমাদের গঠনতন্ত্রে কোনো সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এবং সিনিয়র সহ সভাপতির পদ নেই।
তিনি বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী হয়েছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর প্রোগ্রাম হয়েছে ২৬ অক্টোবর। সেই প্রোগ্রামে তারা উপস্থিত ছিল না এবং তারা আমার দলের সদস্য না।
‘আপনি নিজেও এলডিপি দাবি করেছেন, আবার আব্দুল করিম আব্বাসী এবং শাহাদাত হোসেন সেলিমও নিজেদের দাবি করছেন’- আসলে মূল এলডিপি কোনটা, এমন প্রশ্নে অলি বলেন, কেউ যদি তার বাপের নাম বাদ দিয়ে আমার নামে পরিচিত হতে চায়, আমার কোনো অসুবিধা নেই।
এলডিপির ওই অংশকে যদি ২০ দল স্বীকৃতি দেয়, তাহলে আপনাদের অবস্থান কী হবে? এর জবাবে অলি বলেন, আমি তো ২০ দলের ইনচার্জ না। যখন এটা হবে, তখন সেটা দেখব।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির সাবেক এই নেতা বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধির কারণে জনজীবন অতিষ্ঠ, এ বিষয়ে আপনাদের বলতে চাই। এই সরকার জনগণের স্বার্থ রক্ষা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, মানবাধিকার নিশ্চিত এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ। সুতরাং তাদের আর ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই।
তিনি বলেন, সময় এসেছে এই সরকারের পদত্যাগ করার। সরকারকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানাব এবং নতুন নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানাব। অন্যথায় সমগ্র দেশের মানুষকে বলব একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এই সরকারের বিরুদ্ধে অবরোধ মিটিং-মিছিল করার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে।
অলি বলেন, আশা করি দেশের জনগণ এবং প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে আমাদের সঙ্গে অংশগ্রহণ করবেন।
জাতীয় মুক্তি মঞ্চের অতীতের কর্মসূচিতে জামায়াত নেতাদের উপস্থিতি থাকলেও এবার তাদের দেখা যায়নি।
এলডিপি মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ সংবাদ সম্মেলন শেষে বলেন, জামায়াতকে এবার আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি জাগপার সহ সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মনির হোসেন কাসেমী, বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার সরোয়ার হোসেন, জাতীয় দলের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম, এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৯
এমএইচ/টিএ