ঢাকা: জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) পাঠ্যবই সংশোধন ও পরিমার্জন কমিটির সদস্য রাখাল রাহা ওরফে সাজ্জাদুর রহমান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে পোস্ট দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। এজন্য ধর্মাবমাননার দায়ে তাকে এনসিটিবির ওই কমিটি থেকে দ্রুত বহিষ্কারপূর্বক বিচারের মুখোমুখি করতে সরকারের কাছে দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে তারা বলেন, আমরা হতবাক হয়ে গিয়েছি, এনসিটিবির মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের কমিটিতে দায়িত্বরত একজন সদস্য কীভাবে এমন অসভ্য কুরুচিপূর্ণ ভাষায় ইসলাম অবমাননা করতে পারে! ইসলামের একটি মর্যাদাপূর্ণ নফল এবাদত তাহাজ্জুদ এবং আল্লাহ সম্পর্কে তার শব্দচয়ন ও ভাষা অসভ্যতার সব সীমা ছাড়িয়েছে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ধর্মপ্রাণ তৌহিদি জনতার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া হয়েছে বলে আমরা মনে করি। তার কাছ থেকে কোমলমতি শিশু-কিশোররা কী শিখবে তাহলে?
তারা আরও বলেন, সংখ্যালঘুর ধর্ম কিংবা সংখ্যাগুরুর ধর্ম হোক, কোনো ধর্মের অবমাননাই গ্রহণযোগ্য নয়, বরং তা আইনত শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বাংলাদেশের পেনাল কোডসহ যুক্তরাজ্য, গ্রিস, নরওয়ে, আয়ারল্যান্ড ও আমেরিকার বিভিন্ন প্রাদেশিক আইনেও ধর্মাবমাননাকে অপরাধ সাব্যস্ত করে শাস্তির বিধান রয়েছে।
হেফাজতের নেতারা বলেন, কারও ভিন্নমত থাকতেই পারে; গঠনমূলক ভাষায় তা প্রকাশ করতে কোনো বাধা নেই। গঠনমূলক সমালোচনা ও মতবিনিময় বরং একটি সমাজের সাংস্কৃতিক, বুদ্ধিবৃত্তিক ও রাজনৈতিক মনোকাঠামোর উন্নতির জন্য সহায়ক বলে আমরা মনে করি। কিন্তু গালিগালাজ, কটূক্তি ও অবমাননাকর ভাষা ব্যবহার সভ্যতার মাপকাঠির মধ্যে পড়ে না।
তারা আরও বলেন, হেট স্পিচ (বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য) বাকস্বাধীনতা নয়। বাকস্বাধীনতার সীমা-পরিসীমাগুলোও সবার জানা থাকা জরুরি। কিন্তু এদেশে মূলত ব্যক্তিগত হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতে নাস্তিকতা, মুক্তমনা ও প্রগতিশীলতা চর্চার নামে ইসলাম, রাসূল (সা.) ও মুসলমানদের নিয়ে জনপরিসরে কটূক্তি ও ঘৃণার চর্চা দেখা যায়। এটা রোধ করার দায়িত্ব সরকারের। আর বিশেষত দিল্লির যোগসাজশে অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে নতুন অস্থিরতা তৈরি করার উদ্দেশ্যে কিছু স্বার্থান্বেষী প্রগতিশীল লোক তৌহিদি জনতাকে একের পর এক উসকানি দিয়ে যাচ্ছে।
হেফাজত নেতারা সরকারকে অবিলম্বে এসব উসকানিদাতা ‘কালপ্রিটকে’ থামাতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৫
এইচএ/