ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

সিঙ্গাপুর

‘পত্রিকাগুলোকে বিজ্ঞাপন ভিক্ষা করতে হচ্ছে’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৭
‘পত্রিকাগুলোকে বিজ্ঞাপন ভিক্ষা করতে হচ্ছে’ সিঙ্গাপুর প্রেস হোল্ডিংসের হেড অব মিডিয়া সল্যিউশনস ইগনাটিউয়াস লো। ছবি: বাংলানিউজ

সিঙ্গাপুর থেকে: ১০ বছর আগেও সিঙ্গাপুরে বিজ্ঞাপনদাতারা তাদের বাজেটের ৮৬ শতাংশ খরচ করতো প্রিন্ট মিডিয়ার জন্যে। তবে ১০ বছর পর এখন পুরো পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। এখন তারা বাজেটের ৮৬ শতাংশ খরচ করে ডিজিটাল মিডিয়ায়।

সিঙ্গাপুর প্রেস হোল্ডিংসের হেড অব মিডিয়া সল্যিউশনস ইগনাটিউয়াস লো এশিয়ান জার্নালজিম ফেলোশিপের সাপ্তাহিক সেমিনারে এ তথ্য প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, এখন আর বিজ্ঞাপনদাতারা দৈনিক পত্রিকায় আগ্রহী নন।

কারণ সেটা একদিনের জন্যে। এবং পত্রিকায় ওই পাতা হয়তো গ্রাহক একবারের বেশি উল্টে দেখেন না। তবে অনলাইনে যেহেতু বিজ্ঞাপন থেকে যায় এবং সেটা কয়েকদিন বা মাস পর্যন্ত তাই ডিজিটাল মিডিয়াকেই বেছে নিচ্ছেন তারা।

সিঙ্গাপুর প্রেস হোল্ডিং এখানকার সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠান।

ইগনাটিউয়াস লো আরো বলেন, ট্রাডিশনাল মিডিয়াগুলো, বিশেষ করে দৈনিক পত্রিকাগুলো হয়তো আগামীতে সাপ্তাহিক হয়ে যাবে। কারণ দেখা যাচ্ছে, শুধু সাপ্তাহিক দিনগুলোতেই কাগজের পত্রিকার বিক্রি ভাল হচ্ছে। ফলে ট্রাডিশনাল মিডিয়াকে টিকে থাকতে হলে অনলাইনেই যেতে হবে। তবে উন্নত দেশগুলোতে ৫ বছরের বেশি দৈনিক পত্রিকা টিকবে না বলেই মনে করেন তিনি।

সিঙ্গাপুর প্রেস হোল্ডিংসের হেড অব মিডিয়া সল্যিউশনস ইগনাটিউয়াস লো।  ছবি: বাংলানিউজতিনি বলেন, প্রিন্ট মিডিয়ায় একদিনের বিজ্ঞাপনে যে খরচ ডিজিটাল মিডিয়ায় এর চেয়ে কম খরচে বেশিদিন বিজ্ঞাপণ দেয়া যায়।

তিনি বলেন, এখন সিঙ্গাপুরে বিজ্ঞাপনদাতারা ভাবেন, যে মাধ্যমে তিনি বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন, সেটি টার্গেট গ্রুপের কাছে পৌছে কিনা। দেখা গেছে, ডিজিটাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দিলে তা একশত ভাগ কাজে লাগে। কারণ টার্গেট গ্রুপই সেখানে ক্লিক করে।

ইগনাটিউয়াস আরো বলেন, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌছেছে যে, এখন পত্রিকাওয়ালাদের প্রতিদিন বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে ধর্না দিয়ে বলতে হয়, আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে বিজ্ঞাপন দিন। '

তিনি বলেন, মিডিয়াতে এখন বড় একটি বিষয় হচ্ছে কনটেন্ট মার্কেটিং। কিভাবে কনটেন্ট গ্রাহক এবং বিজ্ঞাপনদাতাদের আকর্ষণ করবে। এক্ষেত্রে ভিডিও কনটেন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আগামীতে মানুষ টেলিভিশনের সামনে বসে আর ভিডিও সংবাদ দেখতে চাইবে না। এটা নিশ্চিত।

সিঙ্গাপুর প্রেস হোল্ডিংসের হেড অব মিডিয়া সল্যিউশনস ইগনাটিউয়াস লো।  ছবি: বাংলানিউজদ্যা স্ট্রেইট টাইমসের একসময়কার দাপুটে এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, এখন মিডিয়াগুলো লোকবল কমাতে চাইছে। সিডনি মর্নিংয়ের মতো মিডিয়া তাদের সব ফটোগ্রাফারকে বাদ দিয়েছে। এখন এমন এক সময় যখন একজন সাংবাদিককে সবকিছুই করতে হবে। অনেক মিডিয়া নিউজরুম এডিটরদের বাদ দিয়েছে। এখন অনেক দেশেই নিউজরুম এডিটরদের আলাদা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেখান থেকে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিউজ সম্পাদনা করে নেয়া হয়।

তিনি বলেন, স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোকে স্থানীয় সংবাদের ওপরেই গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ আর্ন্তজাতিক গণমাধ্যমগুলোও এই কনটেন্টের ওপর নির্ভর করে। আর আর্ন্তজাতিক বাজারে স্থানীয় গণমাধ্যমের জন্যে নিউইয়র্ক টাইমস, রয়টার্স বা বিবিসি'র সঙ্গে পাল্লা দিয়ে টেকা সম্ভব হয়ে উঠবে না।

তিনি বলেন, শুধু নিউজ সার্ভিস দিয়েও অনলাইনগুলোর টিকে থাকা কঠিন হবে। সঙ্গে নতুন নতুন ধারণা যুক্ত করতে হবে। যেন ওয়েবসাইটে বেশি সময় কাটাতে পারে গ্রাহক এবং তার প্রয়োজনীয় অন্য কাজগুলোও সেরে নিতে পারেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৭
এমএন/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।