এই গল্প কেবল সাইফুলের নয়। নিউইয়র্ক এবং এর আশপাশের লাখো বাসিন্দার।
এ প্রসঙ্গে কথা হচ্ছিলো সাইফুলের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, নিউইয়র্ক সিটিতে সবচেয়ে বেশি ঝামেলার গাড়ি পার্কিং, ব্যয়বহুলও বটে। পার্কিংয়ের জন্য কোথাও কোথাও ঘণ্টায় ১৫-২৫ ডলারও শোধ করতে হয়। সেক্ষেত্রে ১২০ থেকে ১৬০ ডলার প্রতিদিন খরচ হবে। ফলে বেতনের টাকা গাড়ি পার্কিংয়েই চলে যাবে। অথচ মাত্র সাড়ে ৫ ডলার দিয়ে অফিস যাতায়াত করা যায় পাতাল রেলে। নিউইয়র্ক সিটিতে দিনরাত জটলা লেগেই থাকে। এই জটলার কারণে নানা ঝক্কি-ঝামেলা হলেও প্রায় কোটি মানুষের এ শহরে যাতায়াত ব্যবস্থা সাবলীল রেখেছে এর সাবওয়ে সিস্টেম। নগরীর পাঁচটি বরোর প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানকে রেলপথে সংযুক্ত রেখেছে এই র্যাপিড ট্রানজিট সিস্টেম। নিউইয়র্ক সিটি ট্রানজিট অর্থরিটির পরিচালনায় কোথাও পাতালপথে, কোথাও ওপর দিয়ে দিনরাত ২৪ ঘণ্টাই চলছে ট্রেন।
এখানটায় গণপরিবহণে কোনো ধরনের নগদ অর্থের ব্যবহার নেই। পাতাল, মেট্রোরেল ও বাসে চড়ার জন্য এক ধরনের মেট্রোকার্ড ব্যবহা হয়। এক মাসে ১২২ ডলারের মেট্রোকার্ড ইস্যু করা যায়। এই কার্ড দিয়ে পাতাল, মেট্রোরেল ও বাসে চড়া যায়। মেট্রোকার্ড ঘষা দিলেই খুলে যাবে সাবওয়ের প্রবেশপথ। একবারে ২ টাকা ৭৫ পয়সা কেটে নেবে মেট্রোকার্ড থেকে। একবার প্রবেশ করে সারাদিন ভ্রমণ করা যাবে, তবে স্টেশন থেকে বের হওয়া যাবে না। স্টেশন থেকে বের হয়ে নতুন করে যেতে চাইলে আবারও ২ দশমিক ৭৫ পয়সা পরিশোধ করতে হবে। অফিস আওয়ারে পাতাল রেলের কোচগুলো থাকে পরিপূর্ণ। তবে যাত্রীরা বই-পেপার পড়ে অথবা মোবাইল ফোনেই কাটিয়ে দিতে পারেন সময়। এক মিনিট পর পর মেলে ট্রেন।
নিউইয়র্ক সিটিতে নতুন হলেও সাবওয়েতে চড়তে বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না। কারণ প্রতিটা পাতাল রেলে ভ্রমণের জন্য স্টেশনের সিরিয়াল দেওয়া হয়েছে। স্টেশন থেকে কখন কোন ট্রেন পাওয়া যাবে সে বিষয়েও ঘোষণা হয় নিয়মিত।
নিউইয়র্ক সিটিতে পাতাল রেলের কারণে মনে হয় মাটির নিচে আরেক শহর। পাতাল রেলগুলোর নামও অনন্য। যেমন- ই ট্রেন, এফ ট্রেন ইত্যাদি। পাতাল রেল থেকে ওপরে ওঠার জন্য এস্কেলেটর ও সিঁড়ি রয়েছে। পাতাল রেলের স্টেশনে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের শপিং সেন্টারও। তাই ট্রেনে চেপে বসার আগে সময় পেলে করা যাবে পছন্দের কেনাকাটাও।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৯
এমআইএস/এইচএ/