ঢাকা: পাথর আমদানিতে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার প্রভাব পড়ছে রেডিমিক্স কংক্রিট খাতে। এতে পাথর আমদানিতে ব্যয় বেড়েছে প্রতি টনে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত।
এতে অবকাঠামো খাতে ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে বলে খাতসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। মানসম্পন্ন অবকাঠামো নির্মাণে পাথর আমদানিতে আরোপিত সম্পূরক শিল্প প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ রেডিমিক্স কংক্রিট অ্যাসোসিয়েশন (বিআরএমসিএ)।
বর্তমানে দেশের স্থাপনা নির্মাণ এখন রেডিমিক্স কংক্রিটনির্ভর। পরিবেশবান্ধব, সময় সাশ্রয়ী ও টেকসই বিবেচনায় নির্মাতাদের কাছে এটি যথেষ্ট গ্রহণযোগ্য।
১৯৯০ সালে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হওয়া ঊর্ধ্বমুখী বাজার চাহিদার এ খাতে অল্প সময়ে বিনিয়োগ বেড়েছে কয়েক গুণ। বর্তমানে এই খাতে ২২টি কোম্পানি রয়েছে। কংক্রিট শক্তি নির্ভর করে মিক্স ডিজাইন, সিমেন্ট, পাথর, বালি ও পানির গুণগত মানের ওপর। এগুলো ঠিকঠাক মতো না হলে কংক্রিটের শক্তি অনেক কমে যায়।
খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এমনিতেই দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর মেগাপ্রকল্পসহ বেশির ভাগ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মাণকাজ স্থবির হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে বাণিজ্যিক ও বেসরকারি আবাসনশিল্পেও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এতে রেডিমিক্স কংক্রিট খাতে ধস নেমেছে। গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর মেগাপ্রকল্পসহ রাষ্ট্রীয়ভাবে সব ধরনের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মাণকাজ স্থবির হয়ে পড়েছে।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই গত ৯ জানুয়ারি পাথরসহ শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে সরকার।
পাথর আমদানিতে ব্যয় বাড়ায় রেডিমিক্স কংক্রিট প্রস্তুতের ব্যয়ও বেড়েছে। তবে কিছু কোম্পানি দাম না বাড়িয়ে নিম্নমানের পণ্য ব্যবহার করছে। এতে অবকাঠামো খাতে ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
এই খাতের একাধিক উদ্যোক্তা জানান, চলমান দেশের অস্থিরতার কারণে এমনিতেই আবাসন অবকাঠামো খাতে নির্মাণকাজ কমে গেছে। যার কারণে ক্ষতির মুখে আছে রেডিমিক্স কংক্রিট খাত। টিকে থাকার জন্য আবার অনেকেই দাম না বাড়িয়ে কোয়ালিটিতে ছাড় দিয়ে ব্যবসা চলমান রেখেছে। নিম্নমানের পণ্য ব্যবহারে গড়ে ওঠা স্থাপনায় ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেডিমিক্স কংক্রিট অ্যাসোসিয়েশনের সচিব সুভ্রজিৎ দাস গুপ্ত বলেন, ‘পাথর আমদানিতে ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করায় রেডিমিক্স কংক্রিট কোম্পানিগুলোর খরচ বেড়ে গেছে। এরই মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যে যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে একাধিক আবেদন দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, এনবিআর বিষয়টি দ্রুত সময়ের মধ্যে বিবেচনা করবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৫
এসএএইচ