ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২১ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৬ মার্চ ২০২৫, ০৫ রমজান ১৪৪৬

অন্যান্য

দেশের সবচেয়ে বড় একগম্বুজ খুবির কেন্দ্রীয় মসজিদে

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২১ ঘণ্টা, মার্চ ৬, ২০২৫
দেশের সবচেয়ে বড় একগম্বুজ খুবির কেন্দ্রীয় মসজিদে খুবির কেন্দ্রীয় মসজিদ

খুলনা: হাজার হাজার হলুদ বর্ণের সূর্যমুখী ফুল। মৃদু বাতাসে দোল খাওয়া সূর্যমুখীর হাসি চোখে পড়ার মতো।

চোখ জুড়ানো মনোমুগ্ধকর এমন অপরূপ সৌন্দর্যের দেখা মিলবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে।

দেশের একগম্বুজ মসজিদগুলোর মধ্যে সর্ববৃহৎ খুবি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের গম্বুজটি। এ মসজিদে আসা মুসল্লিরা সূর্যমুখীর নান্দনিক হলদে আভায় মুগ্ধ হন প্রতিনিয়ত।

বর্তমানে মসজিদের উত্তর পাশে হাজার হাজার সূর্যমুখী ফুল ফুটেছে। বাতাসে দোল খেয়ে ফুলগুলো যেন মুসল্লিদের মসজিদে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে।

খুবি সূত্রে জানা যায়, আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর দৃষ্টিনন্দন মসজিদটি অসাধারণ কারুকাজে সজ্জিত। নান্দনিকতায় অনন্য খুবি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ১৪ হাজার ৫শ বর্গফুট আয়তনের একতলার এক গম্বুজ বিশিষ্ট।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর এম আবদুল কাদির ভূঁইয়া ২০০৩ সালে এ মসজিদটির নির্মাণের উদ্যোগ নেন। স্থাপত্য ডিসিপ্লিনের তৎকালীন শিক্ষক মুহাম্মদ আলী নকী মসজিদটির প্রাথমিক নকশা প্রণয়ন করেন। পরবর্তীতে একই ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক শেখ মো. মারুফ হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম মসজিদের পূর্ণাঙ্গ নকশার কাজ চূড়ান্ত করে।

২০১৪ সালে  মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। ২০২০ সালের ২৮ অক্টোবর জুমার নামাজ আদায়ের মাধ্যমে মসজিদের কার্যক্রম শুরু হয়। মধ্যপ্রাচ্যের একগম্বুজ মসজিদের আদলে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। এক ফ্লোরে একসঙ্গে নামাজ আদায় করার বৈশিষ্ট্যে এই মসজিদ তৈরি করা হয়েছে। গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ ঠান্ডা থাকে। মহানবী (স.)- এর স্মৃতি বিজড়িত মক্কা মদিনার মসজিদগুলোতেও গম্বুজগুলো বড় বড় দেখা যায়। ওপরে গম্বুজ থাকার কারণে এসি ছাড়াও প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও মসজিদের মধ্যে স্বস্তিতে নামাজ আদায় করা যায়।



বিশ্ববিদ্যালয়ের কটকা স্মৃতিসৌধের অদূরে প্রায় এক একর জায়গাজুড়ে এ মসজিদটির অবস্থান। এর অদূরেই রয়েছে ছাত্রদের তিনটি হল রয়েছে। অপরদিকে মসজিদটির উত্তর-পশ্চিমে তিনটি  একাডেমিক ভবন ও কাজী নজরুল ইসলাম কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি। ফলে ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষে এ মসজিদে নামাজ আদায়ে সুবিধা হচ্ছে। পুরুষের পাশাপাশি মসজিদটিতে নারীদেরও নামাজ পড়ার জায়গা রয়েছে। সেখানে আলাদা ওজুখানা রয়েছে। যাওয়া আসার আলাদা রাস্তা রয়েছে। ক্লাস করতে করতে নামাজের সময় হলে ছাত্রীরা কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে আসা অন্যান্যরা সেখানে গিয়ে নামাজ আদায় করতে পারেন।  আধুনিক স্থাপত্যের সঙ্গে মুসলিম ঐতিহ্যের সংমিশ্রণে নির্মিত মসজিদটি ভীষণ পছন্দ শিক্ষার্থী ও মুসল্লিদের।

এ প্রসঙ্গে মসজিদে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লি ও খুবি শিক্ষার্থী মো. শিমুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের মসজিদটি অনেক সুন্দর। এখানে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। ক্যাম্পাসে যারা ঘুরতে আসেন তারা একবার হলেও মসজিদটিতে নামাজ পরে যান। পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে আমাদের মসজিদটিতে ইফতারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম ও খতিব মুফতি আব্দুল কুদ্দুস বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশের যতগুলো ভালো দৃষ্টিনন্দন মসজিদ আছে তার ভেতরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ একটু ব্যতিক্রম। একগম্বুজ বিশিষ্ট এত বড় মসজিদ বাংলাদেশে দ্বিতীয়টি আর পাওয়া যাবে না। দেশের ভেতরে একগম্বুজ বিশিষ্ট এবং একসাথে তিন হাজার লোক একই ফ্লোরে নামাজ পড়তে পারে একমাত্র খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদে। আমাদের মসজিদের চারপাশ সূর্যমুখী ফুলসহ নানা জাতের ফুলে সুশোভিত। এই কারণে মুসল্লিদের অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করে। এখানে আছে উন্নত মানের ওজুখানার ব্যবস্থা।  
রমজানে মসজিদে কি কি আয়োজন রয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকার ২৭ দিনে কোরআনে খতমের মাধ্যমে তারাবি পড়াতে বলেছেন আমরা সেই নির্দেশনা অনুসরণ করছি। এছাড়াও আমাদের এখানে ইফতারের ব্যবস্থা আছে। তাছাড়া মুসল্লিতে তালিমের জন্য যোহরের নামাজের পরে বয়ান দেওয়া হয় শুধুমাত্র রমজান মাসের জন্য প্রতি জুমার পরে তাফসির মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। উপাচার্য মহোদয় সদয় অনুমতিতে রমজানের মধ্যরাতে কিয়ামুল লাইল পড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২১ ঘণ্টা, মার্চ ০৬, ২০২৫
এমআরএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।