ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

টাঙ্গাইলে রঙিন ফুলকপি চাষে সফল কৃষক

সুমন কুমার রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০২৩
টাঙ্গাইলে রঙিন ফুলকপি চাষে সফল কৃষক হলুদ ফুলকপি

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায় হলুদ ফুলকপি চাষে আরশেদ আলী নামে এক কৃষক সফলতা পেয়েছেন। ভূঞাপুর পৌরসভার ছাব্বিশা এলাকায় প্রথমবারের মতো পরীক্ষা মূলকভাবে রঙিন ফুলকপি চাষ করে সফল হয়েছেন তিনি।

বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক সাড়াও ফেলেছে।

এ ব্যাপারে আরশেদ আলী বাংলানিউজকে বলেন, নিজ বাড়ির আঙিনার ৩৩ শতক জমিতে প্রতি বছর নানা ধরনের সবজি চাষাবাদ করে থাকি। এবার সেই জমির অর্ধেকাংশে পরীক্ষামূলক রঙিন ফুলকপি চাষ করেছি। আমার এ জমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার না করে শুধু জৈব সার প্রয়োগে রঙিন ফুলকপি চাষ করে দ্বিগুণ লাভবান হয়েছি। আমার এমন সফলতা দেখে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সবজি চাষিরা। এছাড়া আমার এই রঙিন ফুলকপির সৌন্দর্য উপভোগ করতে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অনেকেই আসেন বাড়িতে। কেউ কেউ কিনে নিয়ে যান। আবার অনেকেই আগ্রহ থেকে পরামর্শ নেন। কেউ রঙিন ফুলকপির সঙ্গে ছবি তোলাসহ ভিডিও ধারণও করেন। আমার রঙিন ফুলকপির সাফল্যে খুশি স্থানীয় কৃষি বিভাগও।

আরশেদ আরও বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে ও কৃষি অফিস থেকে নতুন জাতের রঙিন ফুলকপির ৪০০ চারা, জৈব সার, পোকা দমন কীটনাশকসহ সব ধরনের সহযোগিতায় পরীক্ষামূলকভাবে বাড়ির পাশে মাত্র ১৫ শতক জমিতে রঙিন ফুলকপির চাষ করেছি। এতে ৪ রঙের ফুলকপি রয়েছে। চারা রোপণের ৭৫-৮০ দিনের মধ্যে জমিতে পূর্ণাঙ্গভাবে ফসলতা পেয়েছি। এই কপি বাজারে নেওয়া মাত্রই বিক্রি হয়ে যায়। দামও পাচ্ছি ভালো ।

রঙিন কপি দেখতে আসা পার্শ্ববর্তী কতুবপুর এলাকার ভুট্টাচাষি মাহমুদুল হাসান বলেন, রঙিন ফুলকপির নাম অনেক শুনেছি। কিন্তু নিজ চোখে দেখিনি। তবে আরশেদ আলীর রঙিন ফুলকপি চাষের বিষয়টি জানতে পারি। পরে তার বাগানে গিয়ে রঙিন ফুলকপির চাষ দেখেছি। তার কাছ থেকে রঙিন ফুলকপি চাষ সম্পর্কেও বিস্তারিত জেনেছি। আগামীতে আমিও রঙিন ফুলকপি চাষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

রঙিন ফুলকপি ক্রেতা রফিকুল ইসলাম রবি ও আব্দুর রহিম মিঞা বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসার ড. হুমায়ূন কবীরের ফেসবুক পোস্টে রঙিন ফুলকপির ছবি দেখে তার ক্ষেতে গিয়ে ৫০ টাকা দরে ফুলকপি কিনেছি আমরা।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চীনে এ জাতের ফুলকপি সালাদ হিসেবে খাওয়া হয়। সাদা ফুলকপির চেয়ে রঙিন ফুলকপিতে পুষ্টিগুণ বেশি। দেখতেও খুব সুন্দর। অন্যান্য ফুলকপির চাষের যে পদ্ধতি ওই একই পদ্ধতিতে রঙিনটিও চাষ করা হয়। খরচ ও সময় একই। পাশাপাশি শুধু জৈব সার ব্যবহার করেই এই ফুলকপি চাষ করা যায়। স্থানীয় হাট-বাজার রয়েছে এর অনেক চাহিদা।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ড. হুমায়ূন কবীর বলেন, উপজেলায় এই প্রথম রঙিন ফুলকপি পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। তখন কেউ আগ্রহী ছিল না। পরে আরশেদ আলী নামে এক কৃষক আগ্রহ প্রকাশ করলে তাকে কৃষি অফিস থেকে ৪০০ ফুলকপির চারা, জৈব সার, পোকারোধক কীটনাশক ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা দেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে ৪ রঙের ফুলকপি চাষ করা হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আহসানুল বাসার বলেন, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণের লক্ষ্যে জেলার ১২ উপজেলাতে পরীক্ষামূলক রঙিন ফুলকপি চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তার মধ্যে সবার আগে ভূঞাপুর উপজেলায় সফলতা পাওয়া গেছে। এ জাতের ফুলকপিতে পুষ্টিগুণ বেশি। ক্যান্সার রোধেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে এ ফুলকপি। চলতি মৌসুমে পরীক্ষামূলক চাষে সফলতা পাওয়ায় অনেক কৃষক আগামী বছরে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।