খুলনা: খুলনার কয়রা উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চলে ক্রমশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে লবণ সহিষ্ণু বোরো আবাদ। তুলনামূলক শক্ত ও লবণাক্ত জমিতে উৎপাদন ভালো হওয়ায় প্রতিবছর এ জাতের ধানের আবাদ বাড়ছে।
বোরো আবাদ বাড়ায় শীতের মাঝামাঝি সময়ে আমন ধান কাটা শেষ না হতেই চলতি মৌসুমে বোরো আবাদের কার্যক্রম শুরু করেছেন কৃষকরা। এছাড়া নতুন নতুন এলাকায় লবণ পানির চিংড়ি চাষের পরিবর্তে বেড়েছে লবণ সহিষ্ণু বিভিন্ন জাতের বোরো ধানের চাষ। যে কারণে এ মুহূর্তে এ উপজেলার কৃষকরা বোরো রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে বোরো আবাদ চাষ ব্যয়বহুল হলেও ধানের বাজার ও (গো খাদ্য) খড়কুটার দাম বাড়ায় লাভজনক মনে করছেন কৃষকরা। ফলে এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে কৃষকদের আগ্রহ বেড়ে যাওয়ায় বোরো আবাদ বেড়েছে।
কয়রা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৩৬ হাজার বিঘা জমিতে বোরো চাষ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে, যা গত বছরের তুলনায় দুই গুনেরও বেশি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না দেখা গেলে প্রায় ২৭ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হতে পারে।
উপজেলার মহারাজপুর গ্রামের কৃষক শাহাবাজ আলী জানান, তিনি ১০ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করছেন এবং রোপণ কাজ প্রায় শেষ। বোরো চাষ ব্যয়বহুল হলেও বাজার মূল্য ভালো এবং খড়কুটা বিক্রি করে লাভের মুখ দেখা যায়।
কয়রা ইউনিয়নের মদিনাবাদ গ্রামের আব্দুস সাত্তার মোড়ল অন্যের জমি তিন ভাগের চুক্তিতে অন্যান্য বছরের মতো এবারও আট বিঘা জমি চাষ করেছেন।
তিনি বলেন, উৎপাদিত ধানের দুই ভাগ তার এবং এক ভাগ জমির মালিককে দিয়েও প্রতিবছর লাভের মুখ দেখছেন। এছাড়া উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে বোরো আবাদের প্রতি কৃষকদের উৎসাহ বাড়ছে।
কারণ হিসেবে আব্দুস সাত্তার জানান, ধানের মূল্য বেশি এবং গো খাদ্যসহ খড়কুটা ঘরের কাজেও ব্যবহার করা যায়।
উপজেলা কৃষি অফিসার (অতিরিক্ত) অসীম কুমার দাস বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলায় তিন হাজার কৃষকের মধ্যে সরকারি বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার কৃষককে ২০ কেজি সার ও পাঁচ কেজি উফশী জাতের এবং দুই হাজার কৃষককে দুই কেজি করে হাইব্রিড এসএলএইটএইচ জাতের ধান দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ব্রি-২৮, ৬৭, ৭৪, ৮৪ ও বিনা ১০, ১৪, ৭ ধান লবণ সহিষ্ণু। কৃষকদের ধারণা, বড় ধরনের কোনো দুর্যোগ না হলে উপকূলীয় এ উপজেলায় বোরো উৎপাদন দেশের খাদ্য উৎপাদনে অনেকটা ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০২৩
এমআরএম/আরবি