দিনাজপুর: দিনাজপুর জেলায় শীত যেমন বেশি, তেমনি অনেক ধরনের শাকসবজির দেখাও মেলে এই শীতকালে। মুলা, গাজর, শিম, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজির চাষ হয় এ জেলায়।
তবে এবার দেখা মিললো একটু ব্যতিক্রমধর্মী রঙিন ফুলকপি ও বাঁধাকপির চাষ। কোনোটির রঙ হলুদ আবার কোনোটির রঙ বেগুনি। কোনো রকম কীটনাশক ছাড়াই চাষ হচ্ছে এসব রঙিন ফুলকপি ও বাঁধাকপি।
এক বিঘা জমিতে রঙিন ফুলকপি ও বাঁধাকপির চাষ করেছেন দিনাজপুর সদর উপজেলার ৪ নম্বর শেখপুরা ইউনিয়নের দিঘন জঙ্গলপাড়া এলাকার কৃষক আলমগীর হোসেন। প্রথমবারের মতো রঙিন ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষে সফলতা পাওয়ায় আগামীতে আরও বেশি জমিতে এই কপি চাষ করার কথা জানিয়েছেন তিনি।
কথা হলে আলমগীর হোসেন বলেন, সাধারণ হল্যান্ড জাতীয় সাদা ফুলকপি চাষ করে লোকসান হয়েছে। তাই প্রথম দিকে আমি সাধারণ বাঁধাকপি ও ফুলকপিই চাষ করতে চেয়েছিলাম। পরে মনে হলো একটু চাষ করেই দেখি রঙিন কপি কেমন হয়। পরে এক বিঘা জমিতে চাষ করি। যেখানে হলুদ রঙের ফুলকপি ২০০টি, বেগুনি রঙের ফুলকপি ১৫০ এবং বেগুনি রঙের বাঁধাকপির ২২০০টি চারা রোপণ করি। এছাড়াও চাইনিজ ক্যাবেজ নামে এক প্রকার বাঁধাকপির ১৮০০টি চারা রোপণ করি যেটা অনেকটা লেটুস পাতার মত করে খাওয়ার উপযোগী।
কোনো প্রকার কীটনাশক ব্যবহার ছাড়াই এগুলো চাষ করেছেন বলে জানান তিনি।
আলমগীর বলেন, এই কপিতে কোনো ধরনের কীটনাশক ছাড়াই নিমপাতার রস, হলুদ ও শ্যাম্পু মিশ্রিত পানি স্প্রে করে চাষ করছি। প্রতিটি রঙিন ফুলকপির ওজন দেড় থেকে দুই কেজি পর্যন্ত হয়েছে। বাঁধাকপির ওজনও প্রায় সমান। বাজারে পাইকারি ৫০-৫৫ টাকা কেজি দরে ফুলকপি বিক্রি করেছি। আর বাঁধাকপি ২০-২৫ টাকা পিস পাইকারি বিক্রি করছি। আমার এক বিঘা জমিতে চারা, সেচ, মজুরিসহ বিভিন্ন খরচ মিলিয়ে ২৫০০০ টাকার মতো খরচ হয়েছে। আর আমি সবগুলো কপি বিক্রি করতে পারলে ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকার মতো বিক্রি হবে।
এদিকে রঙিন কপি চাষ করে আলমগীরের সফলতায় ওই এলাকার অনেক কৃষক আগামীতে রঙিন ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দিনাজপুরে শুধু মাত্র সদর উপজেলাতেই রঙিন ফুলকপি ও বাঁধাকপির চাষ হয়েছে। চাষকৃত হলুদ ফুলকপিটি হচ্ছে কেরোটিনা ও বেগুনি রঙের ফুলকপিটি ভেলেনটিনা প্রজাতির। আর বেগুনি বাঁধাকপিটি রুবি কিং প্রজাতির।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, আকর্ষণীয় সবজিগুলোর মধ্যে রঙিন কপি নিঃসন্দেহে একটি আকর্ষণীয় সবজি। রঙিন কপি চাষে বর্তমানে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। আর প্রচার প্রচারণার ফলে ভোক্তা ও বিক্রেতাদের মাঝে ক্রয়-বিক্রয়ে আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। । কীটনাশক ছাড়াই চাষাবাদ করা হচ্ছে। এতে কৃষকেরা লাভবান হবেন। আশা করি আগামীতে এই সবজি চাষের পরিমাণ বাড়বে।
বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২৩
আরএ