ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

কৃষি

কোরবানির হাট কাঁপাতে প্রস্তুত ‘কালা পাহাড়’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৪ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২৩
কোরবানির হাট কাঁপাতে প্রস্তুত ‘কালা পাহাড়’

নীলফামারী: প্রস্তত ‘কালা পাহাড়’। এবারের ঈদুল আজহার অন্যতম আকর্ষণ! কোরবানির হাট কাঁপাতে লালনপালন করা হয়েছে গরুটি।

সন্তানের আদর দিয়ে লালনপালন করা ওই কৃষকের নাম নিয়ামতুল্যাহ শাহ। তিনি নীলফামারীর সৈয়দপুরের পার্শ্ববর্তী দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার ৬ নম্বর গোয়ালডিহি ইউনিয়নের দক্ষিণ দুবুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার খামারেই লালনপালন হয়েছে গরুটি।

মালিকের আশা, এবারের কোরবানির পশুর হাট কাঁপাবে ‘কালা পাহাড়’। গরুটি দেখতে আশপাশের বিভিন্ন স্থান থেকে গরু ব্যবসায়ীরা আসছেন, দাম বলছেন। তবে গরুর মালিক বলছেন, মন মতো দাম পেলেই কেবল ‘কালা পাহাড়’কে তুলে দেবেন ক্রেতার হাতে।  

জানা গেছে, কালা পাহাড়ের মাথার ওপর সারাক্ষণ ঘুরছে তিনটি ইলেকট্রিক ফ্যান। সারাদিনে তার খাদ্য লাগে হাজার টাকার। দিনে গোসল দিতে হয় সাত বার!

ইটের দেয়াল আর টিনের ছাউনি দেওয়া ঘরের এক পাশে রাখা হয়েছে বিশালদেহী কালা পাহাড়কে। শরীরে কালোর প্রভাব বেশি তাই নাম ‘কালা পাহাড়’। অবশ্য গরুটির চার পা-ই সাদা। গরুটির জন্য একজন কর্মচারী নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন। তবে নিয়ামতুল্যাহ নিজেও যত্ন নেন কালা পাহাড়ের। তিনি ছাড়া অন্যরা অবশ্য কালা পাহাড়ের সামনে আসতে ভয়ে থাকেন।

গরুটি কিনতে আগ্রহী হয়ে খামারে আসা কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, কালা পাহাড়ের ওজন ২৮-২৯ মণ বা প্রায় সাড়ে ১১শ কেজি হবে। তারা গরুটির দাম বলেছেন ৮-১০ লাখ টাকা। গরুটির মালিক নিয়ামতুল্যাহ ছাড়া আর কেউই ওই গরুর সামনে খাবার দিতে পারেন না বলেও অভিযোগ তাদের।

গোয়ালডিহি ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন লিটন বলেন, গরুর খাবারের উচ্চমূল্যের কারণে অনেক খামারি ছেড়ে দিয়েছেন এই পেশা। তারপরও আমাদের এলাকায় খামারি নিয়ামতুল্যাহ বড় আকারের গরু পালন করে আলোচনা সৃষ্টি করেছেন। তিনি ভালো দাম পেলে অনেকেই কোরবানির বড় গরু-ছাগল পালনে আগ্রহী হবেন।

গরু খামারি নিয়ামতুল্যাহ শাহ বলেন, অন্য ব্যবসার পাশাপাশি প্রায় ৬ বছর ধরে গরু লালনপালন করে আসছি। অনেক দিনের স্বপ্ন, কোরবানির হাটের জন্য বড় গরু প্রস্তুত করব। এবার আমার সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। কোরবানির ঈদকে সমনে রেখে ভালো দামে বিক্রির আশা করছি।  

দামের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেক ব্যবসায়ী গরুটি দেখতে আসেন। ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম উঠেছে। কিন্তু দাম পছন্দ হয়নি। খামারে বিক্রি করতে না পারলে হাটে তুলবো। বর্তমান গরুটি দৈনিক হাজার টাকার গো-খাদ্য খায়। গরুটির কথা শুনে অনেকে দেখতেও আসছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হুমায়ুন বলেন, ফ্রিজিয়ান জাতের গরু পালনে অনেকেই আগ্রহী হন না। তবে নিয়ামতুল্যাহ শাহ সফল হয়েছেন। গরুটির বিষয়ে আমরা খোঁজ-খবর নিয়েছি এবং গরুটিকে যাতে কোনো ওষুধ প্রয়োগ না করা হয়, সেই জন্য যোগাযোগ করেছি। গরুটি পালনে তাকে নানা পরামর্শও দিয়েছি।  

ভবিষ্যতে এ রকম গরু যদি কেউ পালন করতে চান, প্রাণীসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২৩
এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।