ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

ইউটিউব দেখে আঙুর চাষে লাভলীর চমক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৯ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২৩
ইউটিউব দেখে আঙুর চাষে লাভলীর চমক

বরিশাল: সাধারণত আমদানি করা আঙুর দেখে ও খেয়ে অভ্যস্ত মানুষ। তবে সখের বসে বাড়ির আঙিনায় অনেকেই আঙুর চাষ করেন।

এভাবেই সখের বসে আঙুর চাষ করে প্রত্যাশের চেয়ে বেশি ফলন পেয়েছেন বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের দোয়ারিকা গ্রামের লাভলী বেগম। তিনি সাবেক সেনা কর্মকর্তা আব্দুস সালামের স্ত্রী।

এ দম্পতির আঙুর বাগানের খোঁজ যারাই পাচ্ছেন, তারা সেখানে গিয়ে ভিড় করছেন। আর প্রথম আবাদে ভালো ফলন পাওয়ায় আসন্ন মৌসুমে চাষের পরিধি বাড়ানোর পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন লাভলী।

তিনি জানান, আঙুর চাষের তাদের কোনো পূর্বাভিজ্ঞতা ছিল না, ইউটিউব দেখেই উদ্বুদ্ধ হয়ে তার আঙুর চাষের কথা মাথায় আসে। সাংসারিক কাজ শেষে অবসর সময়কে কাজে লাগানোর চিন্তা থেকে এ উদ্যোগ নেওয়া। তাই অবসরে ইউটিউবে ঝিনাইদহের এক আঙুর চাষির ব্লগ দেখি প্রথমে। তার ব্লগ দেখেই মাথায় আসে আঙুর গাছ লাগানোর চিন্তা। ওই চাষির মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করে প্রতি পিস ৫০০ টাকা দরে ৪৬টি আঙুর গাছের কলম নিয়ে আসি।

বাগানের আঙুরগুলো কাশ্মীরের ছমছম প্রজাতির জানিয়ে গৃহবধূ লাভলী জানান, ২০২২ সালের মার্চ মাসের দিকে ঝিনাইদহের ওই চাষির সঙ্গে আলাপ করে বাড়ির সামনের ১২ শতাংশ পরিত্যক্ত জমি প্রস্তুত করি। মাটি প্রস্তুত করে কলম লাগাতে হয়। কলম লাগানোর সাত মাস পরে প্রথমে কয়েক থোকা আঙুর হয়। ধীরে ধীরে সবগুলো গাছেই পর্যাপ্ত আঙুর ধরে। প্রথম দিকে ভয়ে ছিলাম আঙুরগুলো মিষ্টি না টক হয়, কিন্তু ইতোমধ্যে সুস্বাদু এ আঙুর ১৪ কেজির মতো বিক্রিও করেছি।

লাভলী বেগম জানান, কাশ্মীরের মাটির সঙ্গে বরিশালের মাটির অনেক পার্থক্য। তবে আঙুর চাষ করে আমার মনে হয়েছে, সব মাটিতেই সুস্বাদু এ ফল হয়। প্রথমবার চাষে সন্তোষজনক ফলন আসায় এ মৌসুমে আরও ১২ শতাংশ জমিতে আঙুর চাষের পরিকল্পনা রয়েছে।

তিনি জানান, প্রথম চাষে আঙুর গাছের জন্য মাচা তৈরি করতে ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বাঁশ দিয়েও মাচা তৈরি করা যায়। তাতে খরচ কম হবে। এছাড়া তিনি ২০ হাজার টাকার কলম এনেছেন। এখনো গাছে যে পরিমাণের আঙুর আছে তাতে আরও ১৪ থেকে ১৫ কেজি হবে।

লাভলী বেগম জানান, আঙুরের একটি গাছ ১২ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে বলে শুনেছি। আমি সেই অনুসারে জিআই পাইপ দিয়ে মজবুত মাচা তৈরি করেছি। এখন আঙুরের পাশাপাশি ৩০০ টাকা করে এ গাছের কলমও বিক্রি করছি।

প্রতিদিনই অনেক লোক বাগান দেখতে আসেন জানিয়ে লাভলী বেগম জানান, এদের মধ্য অনেকে আঙুর ও গাছের কলম কিনে নেন।

লাভলীর দেবর আনিসুর রহমান বলেন, ভাবি প্রথমে চিন্তা করেন আঙুর চাষের। তার চিন্তার সঙ্গে একমত হয়ে আমরা পরিবারের সবাই তাকে সহায়তা করেছি।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মামুনুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, লাভলী বেগম নিজ উদ্যোগে পরিত্যক্ত জমিতে আঙুর চাষ করেছেন। তাকে বিভিন্ন সময়ে আমরা পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করেছি। তাকে দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে অন্যান্য কৃষকরা যারা আঙুর চাষ করবেন তাদেরও আমরা একইভাবে সহায়তা করবো। এভাবে ফল চাষ সম্প্রসারণ হবে। আমি আশা করছি এভাবে ফল চাষ বাড়াতে পারলে আঙুরের আমদানি করার প্রয়োজনীয়তা কমে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৮ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২৩
এমএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।