জামালপুর: জেলার সাত উপজেলায় শুরু হয়েছে বোরো মৌসুমের ধান কাটা-মারাই'র উৎসব। বিস্তীর্ণ মাঠে দেখা মিলে দলবেঁধে কৃষক-শ্রমিকরা ধান কাটা-মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ বলছে, এখনও মাঠের অর্ধেক ধান কাটা বাকি। কিছু দিন গেলেই ধানের দাম বৃদ্ধি পাবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এ বছর এক লাখ ২৯ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা থাকলেও ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ বেশি হয়েছে। আর ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১১ লাখ ৪৭ হাজার ৭১৮ মেট্রিক টন।
জেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা মিলছে মাঠে মাঠে তোড়জোড় করে ধান কাটার চিত্র। কৃষক-কৃষানি দিনভর ধান কাটা-মাড়াইয়ের পর ঘরে তোলা ও বিক্রির জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কৃষকরা বলেছেন, বোরো চাষে এক বিঘা বিজতলায় খরচ ১০০০ টাকা, রোপণ করা খরচ ২০০০ টাকা, নিরানি খরচ ২০০০ টাকা, সেচ খরচ ৪০০০ টাকা, সার-কীটনাশক খরচ ৩০০০ টাকা, কাটা-মারাই শ্রমিক খরচ ১০,০০০ টাকাসহ মোট খরচ ২২০০০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে ধান পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ২৫ থেকে ২৬ মণ।
ইসলামপুর উপজেলার কৃষক লাবলু আহমেদ বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর তীব্র তাপপ্রবাহ ও বিদ্যুৎ লোডশেডিংয়ের কারণে ধানের ফলন কম হয়েছে। ফলে একদিকে উৎপাদন কম ও খরচ বেশি। অন্যদিকে বাজারে ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় আমরা চরম দুশ্চিন্তা আর হতাশায় আছি।
রফিকুল ইসলাম নামের এক কৃষক বলেন, বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা দরে। অথচ একজন শ্রমিকের মজুরি দিতে হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। বিঘা প্রতি ধান রোপণ থেকে ঘরে তোলা পর্যন্ত তাদের মোট খরচ হয় ২২ থেকে ২৩ হাজার টাকা আর উৎপাদন হয় ২৫/২৬ মণ ধান। যেখানে সরকার নির্ধারিত ধানের মূল্য প্রতিমণ ১২৮০ টাকা ধরা হয়েছ সেখানে মাত্র ৯০০ টাকা দরে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে আমাদের। ধানের দাম আরও বাড়ানো দরকার।
জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অতিরিক্ত উপপরিচালক জেসমিন জাহান বাংলানিউজকে বলেন, ইতিমধ্যে এই জেলার ৬০ ভাগেরও বেশি ধান কাটা শেষে। মাঠে ধান কাটা সম্পূর্ণ শেষ হলে ধানের দাম বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া সরকার অনলাইনের মাধ্যমে কৃষকদের থেকে ধান কিনে নিচ্ছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪২ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২৪
এসএম