ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

বরগুনায় সংকট দেখিয়ে বেশি দামে বীজ বিক্রির অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫০ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০২৪
বরগুনায় সংকট দেখিয়ে বেশি দামে বীজ বিক্রির অভিযোগ

বরগুনা: বীজের কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা আমনের বিআর-২৩ জাতের বীজ ১০ কেজি প্যাকেটের সরকার নির্ধারিত মূল্য সাড়ে ৫শ’ টাকার বীজ ৮শ’ টাকায় বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

রোববার (২৮ জুলাই) আমতলী, গাজীপুর, কুকুয়া, কচুপাত্রা ও তালুকদার বাজার ঘুরে সংশ্লিষ্ট কৃষকদের কাছ থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, আমতলীতে এ বছর আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। ওই জমি আবাদের জন্য বীজ ধান প্রয়োজন ৫৮০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ৯৫ শতাংশ কৃষক ফলন ভালো হওয়ায় বিআর-২৩ জাতের বীজ ধানের চাষাবাদ করেন। উপজেলার মোট জমির অর্ধেক বীজ কৃষকরা মজুদ রেখে থাকেন। অবশিষ্ট অর্ধেক জমির জন্য ২৯০ মেট্রিক টন বীজের চাহিদা রয়েছে।

আমতলী কৃষি অফিস ২৯০ মেট্রিক টন আমন ধানের বীজ বরাদ্দ চেয়ে পটুয়াখালী বিএডিসি কর্তৃপক্ষকে চাহিদা পাঠিয়েছে। কিন্তু বিএডিসি কর্তৃপক্ষ ৮৭ মেট্রিক টন বীজ ধান সরবরাহ করেছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য। এতে বীজ সংকটে পড়েছেন কৃষক। এ সুবাদে উপজেলার বীজ ডিলার ও ব্যবসায়ীরা বিআর-২৩ ধানের বীজ থাকলেও কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বেশি দামে বিক্রি করছেন। বীজ না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন কৃষকরা। গত সপ্তাহে বিএডিসি কর্তৃপক্ষ দ্বিতীয় দফায় আমতলীর জন্য ২২ টন বিআর-২৩ বীজ ধান সরবরাহ করে। ওই বীজ ধানও বিক্রি শেষ হয়ে যায়। এ সুযোগে আমনের বীজতলার শেষ মুহূর্তে কতিপয় অসাধু ডিলার আর-২৩ জাতের বীজ ধান সাড়ে ৫শ’ টাকার বীজ ৮শ’ টাকায় বিক্রি করেছেন। উপায় না পেয়ে কৃষকরা ওই বীজ ধান বেশি দামে কিনে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

গাজীপুর গ্রামের হাসান হাওলাদার ও বেল্লাল আকন  বলেন, ১০ কেজি বিআর- ২৩ বীজ ধান গাজীপুর বাজারের হুমায়ুন ঢালীর কাছ থেকে ৮শ’ টাকায় ক্রয় করেছি। তবে হুমায়ুন ঢালী বেশি দামে বীজ বিক্রির কথা অস্বীকার করেছেন।

কৃষক এমদাদ বলেন, ডিলার মহিউদ্দিনের কাছ থেকে ৭শ’ টাকায় বীজ ক্রয় করেছি।  

ডিলার ইউনুস মিয়া বলেন, বিএডিসির দেওয়া ছয় মেট্রিক টন বীজ বিক্রি শেষ হয়ে গেছে। কৃষকের আরও বীজের চাহিদা রয়েছে। তবে তিনি বেশি দামে বীজ বিক্রির কথা অস্বীকার করেছেন।

ডিলার মহিউদ্দিন বেশি দামে বীজ বিক্রির কথা অস্বীকার করে বলেন, সরকার নির্ধারিত মূল্যেই বীজ বিক্রি করছি।

পটুয়াখালী বিএডিসি উপ-সহকারী পরিচালক মো. নান্নু মিয়া বলেন, আমতলীতে ৮৭ মেট্রিকটন বীজ বরাদ্দ দিয়েছি। সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বীজ বিক্রি করার সুযোগ নেই। তারপরও যদি কেউ বেশি দামে বিক্রি করে তবে উপজেলা কৃষি অফিসার তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার ঈশা বলেন, প্যাকেটের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বীজ বিক্রি করার সুযোগ নেই। আমনের বীজতলার শেষ মুহূর্তে কেউ যদি বেশি দামে বীজ বিক্রি করে থাকেন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, খোঁজ খবর নিয়ে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।