মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের পোল্ট্রি মুরগি খামারগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে রানীক্ষেত রোগের প্রকোপ। প্রায় তিনটি উপজেলার খামারে মরছে হাজার হাজার মুরগি।
ফার্ম মালিকরা জানান, তারা বিভিন্ন ধরনের ওষুধ প্রয়োগ করেও রোগটি প্রতিরোধ করতে পারেননি। ফলস্বরূপ, জেলার পোল্ট্রি ফার্মগুলোতে মারাত্মক আকারে এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। রোগের কারণে মুরগিগুলো প্রথমে ঝিমুনি দেখাতে শুরু করে এবং পরে একে একে মারা যায়।
রাজনগর উপজেলার জনতা পোল্ট্রি এবং সদর উপজেলার বর্ষিজোড়া পোল্ট্রি ফার্মে একদিনে প্রায় ২ হাজার ৫শ মোরগ মারা গেছে। একই দিনে আরও ৪ হাজার মুরগি আক্রান্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পোল্ট্রি ফার্ম মালিকরা জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহে মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় প্রায় ২০ হাজার মুরগি মারা গেছে।
পোল্ট্রি ব্যবসায়ী মো. সায়েম জানান, গত মাসের মধ্যে তার দুটি ফার্মে প্রায় ১০ হাজার মুরগি মারা গেছে। এবারের ভাইরাসের কারণে যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। আমরা করোনায়ও এমন ক্ষতির সম্মুখীন হয়নি। এবারের রোগের কারণে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছি।
অপর ফার্ম মালিক, খালেদ আহমেদ জানান, তার দুটি ফার্মে প্রায় আট হাজার বয়লার এবং লেয়ার মুরগির বাচ্চা উঠেছিল। রোজা ও ঈদে বিক্রি করে তিনি কিছু আয় করার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু এখন তার প্রায় এক হাজার মুরগি মারা গেছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম খান বাংলানিউজকে বলেন, রোগটির লক্ষণ দেখে ধারণা করা হচ্ছে এটি রানীক্ষেত। এটি এক ধরনের সংক্রামক ভাইরাস। যা মুরগিদের ভেতর দ্রুত ছড়ায়। মৌলভীবাজার জেলার সদর, রাজনগর এবং শ্রীমঙ্গল উপজেলায় এ রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আমরা নমুনা পাঠিয়েছি। আশা করছি দু-একদিনের মধ্যেই নমুনার চূড়ান্ত রেজাল্ট চলে আসবে। তখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, মৌলভীবাজার জেলায় মোট ১ হাজার ১৩৩টি পোল্ট্রি ফার্ম রয়েছে। এখন প্রতিদিনই মুরগি মারা যাচ্ছে। এই রানীক্ষেতে এ পর্যন্ত জেলায় কি পরিমাণ মুরগি মরেছে এই তথ্যটা আমরা সংগ্রহ করছি। আমরা জেলাজুড়ে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি এবং নিয়মিত খামার পরিদর্শন করে পোল্ট্রি খামারিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
রানীক্ষেত রোগটি কোনোভাবেই মুরগি থেকে মানুষের মধ্যে ছড়ায় না এবং সুস্থ পোল্ট্রি মুরগি খেতে কোনো প্রকার সমস্যা নেই বলে জানান ডা. মো. আশরাফুল আলম খান।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৫
বিবিবি/এএটি