জামালপুর: জামালপুরে সবজি চাষে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে জলবায়ু-সহিষ্ণু মালচিং প্রযুক্তি। এই পদ্ধতিতে ব্যবহৃত মালচিং পেপার কেবল আর্দ্রতাই ধরে রাখছে না, ফসলে জোগাচ্ছে প্রয়োজনীয় পুষ্টি।
সবজি চাষে সবচেয়ে বড় বাধা পোকামাকড় ও আগাছা। অন্যদিকে সবজি উৎপাদনে প্রয়োজন হয় পর্যাপ্ত পানি। এই দুই বিষয়কে সাশ্রয় করতে বেড়েছে আধুনিক কৌশল মালচিং পদ্ধতির ব্যবহার।
মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রথমবারের মতো টমেটো চাষ করেছেন জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের কৃষক নূর সালাম।
কৃষক নূর মাত্র ১০ শতাংশ জমিতে টমেটো চাষ করে পেয়েছেন দারুণ সাফল্য।
তিনি বলেন, আগে সাধারণভাবে চাষাবাদ করতাম। গত দুই বছর ধরে এই মালচিংয়ে চাষাবাদ করে অনেকটা ফলন ভালো পেয়েছি। আমার আশপাশের চাষিরা এখন আমাকে দেখে শিখছেন। আমার কাছে পরামর্শ নিয়ে যায়। ক্ষেতের আর্দ্রতা রক্ষা, আগাছা দমন খরচ কমেছে, আবার সার ও পানি কম লাগায় এই পদ্ধতিতে চাষাবাদে আশেপাশের কৃষকরাও উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
মিলন নামে আরেক কৃষক বলেন, কৃষক নূর এভাবে টমেটো চাষ করছেন আবাদও অনেক ভালো পেয়েছেন। নিড়ানি লাগে না, পানি কম লাগে। সবদিক থেকেই সুবিধা। আমরাও আগামীতে এমন করে চাষাবাদ করবো।
কৃষকদের কাছে এই পদ্ধতির সুফল জানাতে কাজ করছে অস্ট্রেলিয়ান সরকারের অস্ট্রেলিয়ান এনজিও কো-অপারেশন প্রোগ্রামের অর্থায়নে উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন ও উন্নয়ন সংঘের বাস্তবায়নে জেসমিন প্রকল্প।
ওই প্রকল্পের মাধ্যমে যুক্ত করা হয়েছে পরিবেশবান্ধব বালাইনাশক নিয়ে কাজ করা কৃষি উপকরণ বাজারজাতকারী বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
ওয়ার্ল্ড ভিশন জেসমিন প্রজেক্টের প্রকল্প ব্যবস্থাপক স্টিফেন অসীম চ্যাটার্জী বলেন, আমাদের জেসমিন প্রকল্প কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাথে কাজ করছে। জামালপুর জেলার চারটি উপজেলায় এই প্রকল্পের কার্যক্রম চলছে। ধাপে ধাপে ২৫ হাজার কৃষকের মধ্যে এই প্রযুক্তি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।
জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জাকিয়া সুলতানা বলেন, মালচিং এমন একটি পদ্ধতি যা মাটির ওপরে জৈব বা অজৈব ব্যবহার করে একটি স্তর তৈরি করা হয়। এতে জমির আর্দ্রতা অনেক অংশেই সংরক্ষণ করা সম্ভব। সর্বোপরি গাছের স্বাস্থ্য ও উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ায় এই পদ্ধতি। জেলায় এবার ২৪ হেক্টর জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ, টমেটো-বেগুনসহ বিভিন্ন সবজি চাষাবাদ করছেন দেড় শতাধিক কৃষক।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২৫
এএটি