ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

ছোলা পাচারের শঙ্কায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়

রহমান মাসুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৩ ঘণ্টা, জুন ১, ২০১৬
ছোলা পাচারের শঙ্কায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়

ঢাকা: প্রতিবেশী দেশ ভারতে ঘাটতি ও দাম বেশি থাকায় দেশ থেকে কালোবাজারির মাধ্যমে সেখানে ছোলা পাচারের আশঙ্কা করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আন্তর্জাতিক বাজারে ছোলার দাম বাড়া এবং চাহিদার তুলনায় ভারতে এ বছর ১০ লাখ টন কম উৎপাদিত হওয়ায় এ আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।


 
একই অভিযোগ বাংলাদেশ ডাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজি শফিক আহমেদেরও। তিনি বলেন, ‘গত এক মাসের ব্যবধানে ছোলার দাম বেড়েছে বস্তায় (৫০ কেজি) ১ হাজার ২শ’ টাকা। ১ হাজার ৮শ’ টাকার ছোলার দাম এখন ৩ হাজার টাকা। অথচ হিসাব বলছে, দেশে বার্ষিক চাহিদার চেয়েও ২ লাখ টন ছোলা বেশি মজুদ আছে। তাহলে আসলে হচ্ছেটা কি! নিশ্চয়ই এর পেছনে কোনো অসৎ মতলব আছে’।
 
কৃষি মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য মতে, দেশে আস্ত ছোলার চাহিদা প্রায় ৬০ হাজার মেট্রিক টন আর উৎপাদিত হয় ৭ হাজার মেট্রিক টন। বাকি ৫০ হাজার মেট্রিক টন বেশি ছোলা আমদানি করে চাহিদা মেটানো হয়।
 
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ২০১৪-১৫ সালে ডালসহ ছোলা আমদানি হয় সাড়ে তিন লাখ মেট্রিক টন। আর ২০১৫-১৬ সালে আমদানির পরিমাণ এপ্রিল পর্যন্তই কেবল ডালসহ ২ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন।
 
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত এলসি নিস্পত্তি হয়েছে দেড় লাখ মেট্রিক টনের।
 
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দাবি, চাহিদার চেয়ে ৫/৬ গুণ ছোলা আমদানি হলেও এক মাসের ব্যবধানে দাম এতো বাড়ে কি করে! আর এতো বেশি ছোলা আমদানিরই বা রহস্য কি!
 
বানিজ্য মন্ত্রণালয় সুত্র বলছে, এ বছর বিশ্ব বাজারে ছোলার উৎপাদন কমাই এর মূল কারণ। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ছোলা উৎপাদনকারী দেশ অস্ট্রেলিয়ায় এবার ছোলার উৎপাদন কমেছে ১০ লাখ টনেরও বেশি। অন্যদিকে সবচেয়ে বড় ভোক্তা ভারতেও উৎপাদন ঘাটতি ১০ লাখ টনের ওপরে। ফলে, আন্তর্জাতিক বাজারে হুহু করে বাড়ছে ছোলার দাম।
 
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে ছোলার দাম বাড়ায় দেশের ব্যবসায়ীরা তাদের মজুদ ধরে রেখে ছোলার দাম বাড়াচ্ছেন। আন্তর্জাতিক বাজারে বর্তমানে কেজিপ্রতি ছোলার দর ১০০ টাকা হওয়ায় দেশের ব্যবসায়ীরা অধিক লাভের ফাঁদ পাতছেন।
 
এক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় প্রতিবেশি দেশ ভারতে ছোলার বিপুল চাহিদা ও ঘাটতি থাকায় পাচারের আশঙ্কা করছে। ফলে বিষয়টি কড়া পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
 
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন টেলিফোনে বাংলানিউজকে বলেন, সরকার পুরো বিষয়টি নজরদারিতে রাখছে। কারা কি দামে, কখন, কোন পণ্য আমদানি করছেন, কার কাছে থেকে কোথায় কি পরিমাণ পণ্য যাচ্ছে এবং কি পরিমাণে পণ্য দেশে মজুদ আছে, ব্যবসায়ীরা কি দামে এটা বিক্রি করছেন- সেসবই নজরদারি করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে হালনাগাদ বিশ্ব বাজারও মনিটরিং করা হচ্ছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩০২ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০১৬
আরএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।