ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

সামান্য মুনাফার জন্য দেশের ক্ষতি করবেন না

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৬
সামান্য মুনাফার জন্য দেশের ক্ষতি করবেন না

ঢাকা: যেকোনো পণ্য উৎপাদন এবং বিদেশে রপ্তানি ও দেশে বাজারজাত করার ক্ষেত্রে গুণগত মান ঠিক রাখতে ব্যবসায়ীদের নির্দেশে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, সাম‍ান্য মুনাফার জন্য দেশের ক্ষতি করবেন না।

নিজেদের বিপর্যয় ডেকে আনবেন না।
 
বুধবার (২০ জুলাই) সকালে রাজধানীর খামারবাড়ির ‘কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ’ মিলনায়তনে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের (১৯-২৫ জুলাই) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। এবারের জাতীয় মৎস সপ্তাহের প্রতিপাদ্য ‘জল আছে যেখানে মাছ চাষ সেখানে। ’
 
ইউরোপে চিংড়ি রফতানি বন্ধ হওয়ার প্রসঙ্গে টেনে শেখ হাসিনা বলেন, তারা ওজন বাড়ানোর জন্য চিংড়ির মধ্যে লোহা ঢুকিয়ে দিয়েছিলো। পরবর্তী সময়ে আমরা এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি উন্নত প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে অনেকগুলো পদক্ষেপ নেই। ফলে আবারও রফতানি হচ্ছে।  
 
প্রধানমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, শুধু মাছ নয়, যেকোন পণ্য উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও রপ্তানি করার ক্ষেত্রে তার গুণগত মান ঠিক রাখতে হবে।
 
মৎস চাষ বৃদ্ধি ও যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের যে পরিমাণ সমুদ্রসীমা-নদ-নদী-খাল-বিল-হাওর রয়েছে, তাতে আরও যত্নবান হলে মৎস্য উৎপাদনে চতুর্থ নয়, প্রথম হতে পারে বাংলাদেশ।
 
মাছের উৎপাদন বাড়িয়ে দেশের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
 
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের ১ কোটি ৮২ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা মৎস্য সম্পদের সঙ্গে সম্পর্কিত। কৃষিজ আয়ের প্রায় ২৪ ভাগ আসে এ খাত থেকে। জিডিপিতে মৎস্যসম্পদের অবদান প্রায় ৪ শতাংশ। প্রাণিজ আমিষের ৬০ ভাগ যোগান দেয় মৎস্য খাত।
 
‘এসব কথা চিন্তা করে আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করেছে তখনই দেশের মৎস্য সম্পদ রক্ষা ও উৎপাদন বৃদ্ধির উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। ’
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কথায় আছে ‘মাছে-ভাতে বাঙালি’। আমরা যেখানেই যাই, যতো কিছুই খাই, শেষ পর্যন্ত মাছ-ভাত না খেলে আত্মতৃপ্তি আসে না। সুতরাং আমরা যারা মাছ খাই তারা নিজেরা খাবো, যারা খেতে পারে না, তাদেরও খাওয়ার ব্যবস্থা করবো।
 
শিক্ষিত ও বেকার যুব সমাজকে শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে প্রশিক্ষন ও সরকারের দেওয়া সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা নিয়ে মাছ চাষ করে পরিবারের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি অর্থ উপার্জন ও জাতীয় পুষ্টি চাহিদা পূরণে অবদান রাখার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
 
তিনি প্রতিটি জলাভূমিকে মৎস্য চাষের আওতায় আনারও তাগিদ দেন।

সমুদ্রসম্পদ আহরণের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, সমুদ্রসম্পদকে কাজে লাগাতে হবে। এখানে প্রচুর খনিজসম্পদের পাশাপাশি প্রচুর খাদ্য সম্পদও রয়েছে।
 
সমুদ্রসম্পদ আহরণে প্রশিক্ষিত জনবল তৈরি করা হবে বলেও জানান তিনি।
 
পর্যায়ক্রমে সব নদী ড্রেজিং করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নদীগুলোকে ড্রেজিং করতে হবে। এতে নদীর নাব্যতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পণ্য পরিবহনে সুবিধা হবে, মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততা রোধ হবে। এছাড়া বন্যা প্রবণতা হ্রাসের পাশাপাশি নদীতে পানি ধরে রাখা এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ভূমিকা রাখবে।
 
প্রশিক্ষণ, সহজ শর্তে ঋণ, জলমহাল প্রদান, গবেষণাসহ মৎস্য খাতের উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
 
দেশে মৎস্যখাতে অনন্য অবদানের জন্য অনুষ্ঠানে ২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়। এদের মধ্যে পাঁচজনকে দেওয়া হয় স্বর্ণপদক এবং ১৩ ব্যক্তি ও দুটি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয় রৌপ্য পদক।
 
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সচিব মাকসুদুল হাসান খান।
 
পরে প্রধানমন্ত্রী গণভবন পুকুরে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫১ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৬/আপডেট ১৪৫২ ঘণ্টা
এমইউএম/টিআই/এইচএ

** মৎস্য উৎপাদনে গুণগত মান রাখার তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর
** আ'লীগ মৎস্য সম্পদ উৎপাদনে গুরুত্ব দিয়েছে
** মৎস্য সপ্তাহে স্বর্ণপদক পেলেন ৫, রৌপ্য পদক ১৫ জন

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।