ক্ষেতে বসে পড়ছেন তারা। এলোমেলো বা সারিবদ্দ হয়ে ক্ষেতের আলু তুলতে ব্যস্ত সেই কৃষাণ-কৃষাণী।
সেগুলো গাছের মূল থেকে ছিড়ে ও মাটির ভেতর-ওপর থেকে উঠিয়ে ডালা বা গামলায় ভরে ক্ষেতেই স্তূপ আকারে রাখা হয়। পরে তা বস্তায় ভরে সোজা বাজারে অথবা বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
তবে উৎপাদিত আলুর দাম নিয়ে বড়ই বেকায়দায় রয়েছেন চাষীরা। খুচরা বাজারে দ্বিগুণ দামে আলু বেচাকেনা হলেও পাইকারি বাজারে তা অর্ধেক দামে বেচাবিক্রি হচ্ছে। এরমধ্যে মোকামগুলোয় পাইকারি ক্রেতার উপস্থিতিও অত্যন্ত কম। সবমিলিয়ে লোকসান ঠেকাতে মরিয়া আলুচাষীরা।
উত্তরাঞ্চলের শস্যভান্ডারখ্যাত বগুড়ার বেশ কয়েকটি উপজেলা ঘুরে আলুচাষী ও পাইকারী-খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা হলে এসব তথ্য ওঠে আসে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানায়, চলতি রবি মৌসুমে এ জেলায় ৬৭ হাজার ১৭৫হেক্টর জমিতে লাগানো হয়েছে। এরমধ্যে আগামজাতের আলু চাষ করা হয়েছে প্রায় ৫হাজার হেক্টর জমিতে। এসব জমিতে চাষ করা হয়েছে কার্ডিনাল, ডায়মন্ড, গ্যানোলা, লাল পাকড়ী, হাগড়াইসহ বেশ কয়েক জাতের আলু।
ইনছান আলী, আলমগীর হোসেন, জহিদুল ইসলামসহ একাধিক আলুচাষী বাংলানিউজকে জানান, তারা জমিতে আগামজাতের আলু লাগিয়েছিলেন। ইতোমধ্যে সেসব জমির আলু উত্তোলন কাজও প্রায় শেষ। শুরুর দিকে আলুর দাম বেশ ভালই ছিল। কিন্তু বর্তমানে আলুর বাজার মন্দা যাচ্ছে।
তারা আরো জানান, লাল পাকড়ী ও গ্যানোলা জাতের প্রতিকেজি আলু পাইকারি বাজারে ১০-১২টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আলুর মোকাম বা পাইকারি বাজারগুলোয় ব্যাপারীর সংখ্যাও অত্যন্ত কম।
এতে করে আলু বিক্রি করতেও যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে চাষীদের। বর্তমানে লোকসান ঠেকাতে ব্যস্ত আগামজাতের আলুচাষীরা যোগ করেন এসব ব্যক্তিরা। তবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে এসব জাতের আলুর দাম বেড়েছে দ্বিগুণ।
শফিকুল ইসলাম, আমজাদ হোসেনসহ একাধিক খুচরা ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে জানান, গেল সপ্তাহে তারা প্রতিকেজি আলু পাইকারী হিসেবে ১০-১২টাকা হারে ক্রয় করেছেন। সেই আলু বর্তমানে তাদের ১৬-১৮টাকা পাইকারী দরে কিনতে হচ্ছে।
খুচরা বাজারে প্রতিকেজি আলু ২০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামীদিনে আলুর বাজার আরো বাড়বে বলেও মনে করছেন এসব ব্যবসায়ীরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুর রহিম বাংলানিউজকে জানান, বর্তমানে পাইকারি বাজারে আলুর দাম কম। তবে খুচরা বাজারে আলুর দাম বাড়ছে।
তাই বাজারদর নিয়ে আলুচাষীদের ভয়ের কোনো কারণ নেই। প্রতিবিঘায় চাষীদের সব খরচ বাদে কমপক্ষে ১০-১২ হাজার টাকা লাভ থাকবে বলেও দাবি করেন কৃষি বিভাগের ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৭
এমবিএইচ/বিএস