গত বছর পাটের দাম ভাল না পাওয়ায় এবার পাট চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন চাষিরা। কেউ কেউ পাট চাষ করলেও জেলায় প্রচণ্ড খরার কারণে পাটগাছ কাটার আগেই তা মরে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন পাট চাষিরা।
আখানগর ইউনিয়নে পাট চাষি সফিকুল ইসলাম বলেন, জৈষ্ঠ্য, আষাঢ়, শ্রাবণ এই তিন মাসে অনেক বৃষ্টি হয় কিন্তু বর্তমানে এ জেলায় কোনো বৃষ্টি নেই। পাট জাগ দেয়ার মতো পানিও কোথাও নেই।
৪নং বড়গাঁও ইউনিয়নে মোলান খুড়ি গ্রামের পাট চাষি মতিয়ার রহমান বলেন, পাট জাগ দেয়ার মত পানিও পুকুরে নাই, আগে কখনো এমন খড়া দেখিনি। পুকুরে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি তুলে পাট জাগ দিতে হচ্ছে এতে আমাদের অনেক বেশি খরচ হচ্ছে। ন্যায্য দাম না পেলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো।
ভোলাহাট গ্রামের পাট চাষি শামসুল বলেন, বাড়ির পাশে দুই বিঘা জমিতে পাট লাগাইছি, প্রচণ্ড খড়ার কারণে পাট কেটে ফেলতে হল। কিন্তু আমাদের আশপাশে কোনো পুকুরে পানি নাই তাই বাড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে পাট নিয়ে যাই জাগ দেয়ার জন্য।
একই গ্রামের রহিম বলেন, আমাদের বাড়ির আশপাশে কোনো পুকুরে পানি নাই। তাই আমরা শ্যালো মেশিন দিয়ে পুকুরে পানি দিয়ে পাট জাগ দিচ্ছি। এতে আমাদের অনেক খরচ হচ্ছে। এবার পাটের ন্যায্য দাম না পেলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে চাষিরা।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কে এম মাউদুদুল ইসলাম জানান, এবার পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৯ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু আবাদ হয়েছে ৮ হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে। এখন পর্যন্ত কাটা হয়েছে ৭ হাজার হেক্টর জমির পাট। গত বছরের তুলনায় পাটের আবাদ কমে গেছে।
এদিকে খরার কারণে পাট কাটছেন না চাষিরা। এ কারণে তাদের বাড়ির পাশে গর্ত করে তার নিচে পলিথিন দিয়ে পানি ভরাট করে পাট জাগ দেয়াসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
জেলায় পাটজাত দ্রব্য শিল্পকারখানা স্থাপন ও পাট ক্রয়কেন্দ্র গড়ে উঠলে পাট চাষে আগ্রহী হবেন চাষিরা।
ন্যায্য দাম, সঠিক পরামর্শ ও কৃষি বিভাগের সহযোগিতা পেলে এ এলাকায় পাটের আবাদ বাড়বে বলে মনে করেন এলাকাবাসী।
বাংলাদেশ সময়: ১০১১ ঘণ্টা, ০১ আগস্ট, ২০১৭
আরএ