ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

আগাম জাতের আলু চাষে ব্যস্ত কিশোরগঞ্জের কৃষক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৭
আগাম জাতের আলু চাষে ব্যস্ত কিশোরগঞ্জের কৃষক আগাম জাতের আলু চাষে ব্যস্ত কিশোরগঞ্জের কৃষক। ছবি: বাংলানিউজ

নীলফামারী: আগাম জাতের আলু চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের কৃষকরা। আগাম আলু আবাদে লাভ হওয়ায় কৃষকরা কোমড় বেঁধে নেমে পড়েছেন। উপজেলার উ‍ঁচু ও ডাঙ্গা সব জমিতেই বর্তমানে আলু চাষের কাজ চলছে। কেউ জমি তৈরি করছেন, কেউবা শ্রমিক নিয়ে খেতে আলু লাগাচ্ছেন।

এই জনপদের কৃষকরা আগাম জাতের হিরা-২, ব্রি-৩৩, ব্রি-৩৯, ব্রি-৫৬ ও বীনা-৭ জাতের ধান কেটে ঘরে তুলেছেন। ফলে ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন এখানকার কৃষকরা।

উপজেলার নিতাই, গাড়াগ্রাম, বাহাগিলি, মাগুরা, চাঁদখানা প্রভৃতি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে জমিতে আলু লাগানোর জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন এই এলাকার কৃষকরা।  

এ বছর আলু বীজের দাম তুলনামূলকভাবে কম, সারের সরবরাহ স্বাভাবিক ও স্বল্প মজুরিতে কৃষি শ্রমিক মেলায় উপজেলার কৃষকরা আগাম জাতের আলু আবাদে ঝুঁকে পড়েছেন।

বাহাগিলি ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি গ্রামের কৃষক আলম হোসেন বলেন, বাজারে যার আলু যত আগে উঠবে, তার লাভ তত বেশি হবে। তাই আগে-ভাগেই আলু আবাদ করছি। আগাম জাতের আলু চাষে ব্যস্ত কিশোরগঞ্জের কৃষক।  ছবি: বাংলানিউজ

মাগুরা ইউনিয়নের কৃষক সাবেদ আলী জানান, বিঘা প্রতি জমিতে আগাম জাতের আলু রোপণে খরচ হচ্ছে ১০ হাজার টাকা। বিঘায় আলু উৎপাদন হবে প্রায় আড়াই হাজার কেজি। আগাম আবাদে আগাম বাজার ধরতে পারলে আলুর কেজি বিক্রি হবে প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। এতে বিঘা প্রতি আলু বিক্রি করে খরচ বাদ দিয়ে লাভ পাওয়া যাবে প্রায় ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা।

তাছাড়া ৬০ থেকে ৬৫ দিনের মধ্যে আলু খেত থেকে তোলা যায় বলে এ আলু চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেশি। গ্রামাঞ্চলে কৃষিকাজ না থাকায় বেকার থাকতে হতো শ্রমিকদের। কিন্তু নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে আগাম আলু চাষ হওয়ায় কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলার গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের পূর্ব দলিরাম গ্রামের কৃষি শ্রমিক শাহজাহান আলী জানান, আগে বেকার থাকতে হতো আর এখন আলু খেতে কাজ করে প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা মজুরি পাওয়া যাচ্ছে। একই কথা জানালেন আরও কয়েকজন শ্রমিক। আগাম জাতের আলু চাষে ব্যস্ত কিশোরগঞ্জের কৃষক।  ছবি: বাংলানিউজএলাকাবাসী জানায়, এই উপজেলার জমিগুলোতে একসময় কাশবনের চাষ করা হত। ১৯৯০ সালে উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের এক কৃষক বাড়ির পাশের জমিতে খাওয়ার জন্য আগাম আলুর চাষ শুরু করেন। ভাল ফলন পাওয়ায় সেখান থেকে এই অঞ্চলের কিশোরগঞ্জ উপজেলাসহ আশপাশের এলাকায় আগাম আলু চাষাবাদ করা হয়। এলাকার কৃষকরা আলু উৎপাদন করে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে থাকেন। এতে অন্যান্য ফসলের লোকসান কৃষকরা পুষিয়ে নেন।

কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এনামুল হক বলেন, উপজেলায় এবার ১৪ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। জমির আগাম জাতের ধান কাটা হয়ে গেছে। বর্তমানে কৃষকরা আগাম জাতের আলু আবাদে নেমে পড়েছেন। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা আগাম আলু চাষে ভাল ফলনের আশা করছেন।

এই আগাম জাতের আলু বিদেশে রপ্তানি করে কৃষকরা আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারে সেজন্য সচেতনমহল সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০১০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৭
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।