মৌসুমের আষাঢ় মাস থেকে শুরু হওয়া চারা উৎপাদন চলতি কার্তিক মাসের শেষ অবধি চলবে। এতে একই জমিতে তিন বার পর্যন্ত বীজ অঙ্কুরোদগমের মাধ্যমে চারা উৎপাদন করছে কৃষকরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সবজি চাষে নামকরা যশোর সদর উপজেলার হৈবতপুর ও চুড়ামনকাঠি ইউনিয়ন। ওই দুটি ইউনিয়নে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়। অধিকাংশ জমিতে উন্নত পদ্ধতিতে মাচায় সবজি চাষ করা হয়। তবে সবজি চাষের পাশাপাশি দুই ইউনিয়নের শতাধিক কৃষক ঝুঁকেছেন চারা উৎপাদনে।
চুড়ামনকাঠি ও হৈবতপুর এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মৌসুমের আষাঢ় মাস থেকে বীজতলা প্রস্তুত করে বাঁধাকপি ও ফুলকপির বীজ বপন করা হয়। ওই বীজ অঙ্কুরোদগমের মাধ্যমে চারা গজালে তা পরিচর্যা করে এক মাস বয়সে তুলে অন্য কৃষকদের কাছে বিক্রি করা হয়। বর্তমানে বাজারে প্রতিটি ভালো মানের প্রতিটি ফুলকপির চারা ১ টাকা ৮০ পয়সা এবং বাঁধা কপির চারা মানভেদে ৫৫ পয়সা থেকে ৭৫ পয়সা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। যশোরের ঝিকরগাছা, গদখালী, নাভারণ, চৌগাছা, মণিরামপুর ছাড়াও পাশ্ববর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গার জীবনডাঙ্গা, আলমডাঙ্গা, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ, নড়াইল, লোহাগড়া, সাতক্ষীরা, শ্যামনগর, কালীগঞ্জ এলাকার কৃষক ও সবজি চারার পাইকারি ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
সদর উপজেলার চুড়ামনকাঠি ইউনিয়নের পোলতাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, জন্মের পর জ্ঞান হওয়া থেকেই বাবা-দাদার হাত ধরে কৃষি কাজে নেমেছি। চলতি মৌসুমে তিনি নয় বিঘা জমিতে সবজির চাষ করছেন। তবে, গত দুই বছরের মতো তিনি এবার তিন বিঘা জমিতে বীজ বোপনের পর চারা উৎপাদন করে অন্য কৃষকদের কাছে বিক্রি করেছেন। এতে তিনি লাভের মুখ দেখেছেন তিন লাখ টাকা।
চারা উৎপাদনকারী কৃষকরা বাংলানিউজকে জানান, প্রতি বিঘা জমিতে ফুলকপির বীজ বপন করে চারা উৎপাদন পর্যন্ত (এক মাস) অন্তত দেড় লাখ টাকা ব্যয় হয়। তবে এতে তিন লাখ চারা উৎপাদন করে আনুসাঙ্গিক খরচ বাদেও অন্তত তিন লাখ টাকা বিক্রি হয়। পরবর্তীতে ওই চারা অন্য কৃষকরা কিনে অন্তত তিনমাস পরিচর্যা করে বিক্রির উপযোগী করে তোলে।
এছাড়া, প্রতি বিঘা জমিতে বাঁধাকপির বীজ বপন করে চারা উৎপাদন পর্যন্ত (এক মাস) অন্তত ৯০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা খরচ হয়। তবে এতে উৎপাদিত চারা দুই লাখ থেকে দু্ই লাখ ২০ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। তবে বীজ থেকে চারা উৎপাদনের পাশাপাশি এ সকল কৃষকরা সবজি উৎপাদন (খাওয়ার উপযোগী) করে বাড়তি আয়ও করছেন।
কৃষকদের মতে, ধানের তুলনায় সবজি চাষে বেশি লাভবান হওয়ায় তারা দিনদিন চাষের পরিধি বাড়াচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৫২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৭
এনটি