ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতলী মৎস্যঘাট সংলগ্ন বিস্তীর্ণ জমিতে এভাবেই সবজি চাষে নীরব বিপ্লব ঘটেছে। অন্য কাজের ফাঁকে বিকল্প এ কর্মসংস্থানে স্বাবলম্বী হয়েছেন অনেকেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নদী ভাঙনের শিকার জেলে, দিনমজুর ও কৃষকের বসবাস শহররক্ষা বাঁধের পাশে। গৃহহারা এসব মানুষের নিজস্ব জমিও নেই। তাই সরকারি জমিতেই সবজি ফলাচ্ছেন অন্তত ৩০ জন নারী-পুরুষ। কেউ কেউ সবজি তোলা আর বাকিরা ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সনাতন পদ্ধতিতে মাচায় সবজির চাষ করে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন সহায়-সম্বলহীন প্রায় ৩০টি পরিবারের ওই মানুষেরা, দূর করেছেন আর্থিক অসচ্ছলতা। বিকল্প এ পেশায় সংসারে যোগ হওয়া বাড়তি আয়ে ভাগ্যও বদলে নিতে পেরেছেন অনেকে।
নিজেদের পরিচর্যায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন জানিয়ে সবজিচাষি নাছির উদ্দিন বলেন, ‘গত বছর ৫ গণ্ডা জমিতে আবাদ করেছিলাম, বিক্রি হয়েছে ৮৬ হাজার টাকা। এ বছরও ফলন অনেক ভালো’।
হাসেম বলেন, ‘বাঁধের ১৬ শতাংশ জমিতে শীতকালীন সবজির আবাদ করেছি। গত বছরের চেয়ে ফলন অনেক ভালো’।
বশির ৮ শতাংশ, কামাল দুই কড়া, সিডু এক কড়া, সিরাজ তিন কড়া জমিতে করলা, বটবটি, লাউয়ের চাষ করেছেন, লাভের আশা করছেন তারাও।
আকবর ও ফাতেমাসহ আরও অনেকে বলেন, ‘সবজির ক্ষেতে রোগ বা পোকার আক্রমণ নেই। নিজেরাই পরিচর্যা করেছি, এখন ক্ষেতের অবস্থা অনেক ভালো। কিছুদিনের মধ্যে বিক্রি করতে পারবো’।
গৃহিণী ফাতেমা বেগম বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব জমি নেই। তাই বাঁধের পতিত জমিতে সবজির চাষ করেছি, ফলন অনেক ভালো’।
মনির উদ্দিন বলেন, ‘৮ কড়া জমিতে করলা, রেখা ও লাউয়ের চাষ করেছি। সবজি বিক্রির টাকায় দুই ছেলে ও এক মেয়ের পড়ালেখার খরচ যোগাচ্ছি’।
ভোলা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘বাঁধের পাশের পতিত জমিতে কিছু সংখ্যক নারী-পুরুষ যে সবজির আবাদ করছেন, সেটি আমাদের জানা রয়েছে। তাদেরকে পরামর্শ দিয়ে সবজি চাষের আরো প্রসার ঘটানোর চেষ্টা করছি’।
এ বছর উপজেলায় ৮০০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৬০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৭
এএসআর