এদিকে সকালের শীত উপেক্ষা করে সন্ধ্যা অবধি বোরোর জমি প্রস্তুত ও চারা রোপণ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। কেউবা জমিতে হাল চাষ দিচ্ছেন।
চারা রোপণের প্রতিটি কাজ ঠিকমতো করলেও মনে শান্তি নেই কৃষকদের। সবার মনেই রয়েছে হতাশা। ধানের ন্যায্য দাম না পেলে লোকসান গুনতে হবে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের চাষি রবীন বলেন, কিছুদিন ধরে ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে আমাদের। তাই ধান চাষাবাদ করে আমরা সব সময় হতাশার মধ্যেই থাকি। আবার মাঝেমধ্যে আশায় বুকও বাঁধি, না জানি কখন ধানের দাম বেড়ে যায়।
আউলিয়াপুর ইউনিয়নের কচুবাড়ি গ্রামের বিজয় রায় জানান, ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় আমরা এবার বোরো ধান লাগানো কমিয়ে দিয়েছি। আগে যখন ধানের দাম পেতাম তখন আমরা ১০ থেকে ১২ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ করতাম। এখন আমরা শুধু সারা বছরের ভাতের জন্য যে চাল প্রয়োজন সেই পরিমাণ জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ করছি। এবার বোরো ধান লাগানো কমিয়ে দিয়ে বিভিন্ন শাক-সবজি চাষাবাদ করছি।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা মন্টু রাম জানান, বোরো ধান লাগাতে দিন-রাত পরিশ্রম করতে হয়। এছাড়া বোরো আবাদে খরচও বেশি হয়। বোরো ধান লাগানোর পর থেকে তিন-চার দিন পর পর সেচ দিতে হয়। তারপরও যদি ন্যায্য দাম না পাই তবে লোকসানের মুখে পড়তে হবে আমাদের। তাই সরকারের কাছে আমাদের আবেদন। বোরো আবাদে যেন আমাদের ভর্তুকি দেওয়া হয়।
ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলায় ৬৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর জেলায় ৬০ হাজার ৩১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের ১২ হাজার ৯৪ হেক্টর ও উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের ৪৮ হাজার ২১৫ হেক্টর।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আফতাব উদ্দীন বলেন, জেলায় সবেমাত্র বোরো ধান রোপণ শুরু হয়েছে। গত কয়েকদিনের আবহাওয়ার গড় সর্বনিম্ন ১০ এবং সর্বোচ্চ ২৫ বিরাজ করছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে এবং গভীর নলকূপগুলো সচল হলে খুব শিগগিরই বোরো ধান রোপণ শেষ হবে এবং আমরা কাঙ্ক্ষিত লক্ষে পৌঁছাতে পারবো বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২০
আরএ