ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

তরমুজের বাম্পার ফলনে চাষিদের মুখে হাসি

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২০
তরমুজের বাম্পার ফলনে চাষিদের মুখে হাসি

ভোলা: একদিকে তরমুজের বাম্পার ফলন অন্যদিকে বাজার দাম ভালো পাওয়ায় খুশি ভোলার তরমুজ চাষিরা। কেউ ক্ষেত থেকেই তরমুজ বিক্রি করছেন আবার কেউবা পাইকারি বাজারে বিক্রি করছেন। উৎপাদন খরচ পুষিয়ে লাভবান হচ্ছেন তারা। 

লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আবাদ কম হলেও ফলন নিয়ে সন্তুষ্ট কৃষি বিভাগ। ইতোমধ্যে ৮৫ ভাগ তরমুজ কেটে বিক্রি হয়ে গেছে।

চাষিরা জানান, বিগত বছরে তরমুজ চাষে আর্থিকভাবে লোকসান হলেও এবার লাভের মুখ দেখছেন তারা। এ বছর ক্ষেতে ফলনে বিপর্যয় নেই। করোনা ভাইরাসের কারণে বাজার দাম বা পরিবহন নিয়ে কিছুটা চিন্তিত থাকলেও তার কোন প্রভাব পড়েনি তরমুজের বাজারে। ফলে সন্তুষ্ট তরমুজ চাষিরা।

ভোলা সদরের ভেদুমিয়া ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ জমিতে এ বছরও তরমুজের ব্যাপক চাষাবাদ হয়েছে। এখনকার চাষিরা তরমুজ ও ধান আবাদ করে থাকেন। বিশেষ করে তরমুজ আবাদের প্রতি আগ্রহ অনেক বেশি।  

ভেলুমিয়া এলাকায় তরমুজ চাষি মুমিন বলেন, তরমুজের ফলন অনেক ভালো। তরমুজ বাজারে করোনার প্রভাব পড়েনি। আমরা মোটামুটি দাম ভালো পাচ্ছি।  

তিনি বলেন, এ বছর আমি ৬৪০ শতাংশ জমিতে তরমুজের আবাদ করেছি। উৎপাদন ও পরিবহন খরচ হয়েছে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা। কিছু তরমুজ বরিশালের বাজারে এবং কিছু তরমুজ ক্ষেত থেকেই বিক্রি হয়েছে। এ পর্যন্ত সাড়ে ৩ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি হয়েছে।  

বৃহস্পতিবারও (২৩ এপ্রিল) নতুন করে তিনি আরো ২০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন বলে জানান।

আরেক তরমুজ চাষি আকবর জানান, ৮৮ শতাংশ জমিতে তরমুজ চাষ করতে গিয়ে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে কিন্তু লাভ হয়েছে ৪৮ হাজা টাকা। এ দাম নিয়ে সন্তুষ্ট তিনি। কারণ গত বছর তরমুজ আবাদ করে লোকসান গুনতে হয়েছিল তাকে।

তরমুজ ক্ষেতে চাষিরা।  ছবি: বাংলানিউজ বাঘমারা এলাকার তরমুজ চাষি নুরুল হক জানান, ৮০ শতংশ জমিতে তরমুজ আবাদ করতে গিয়ে তার ২৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে কিন্তু ক্ষেতে বসে সেই তরমুজ বিক্রি করেছেন ৩২ হাজার টাকা। বাজারে করোনার প্রভাব নেই। ফলে দাম ভালো পাচ্ছেন বলে তিনি জানান।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এ বছর তরমুজের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিলো ১০ হাজার ৫০০ হেক্টর। তার মধ্যে আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ৭২২ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে চরফ্যাশন উপজেলায়। ওই উপজেলায় ৬৮৯০ হেক্টর জমিনে তরমুজের আবাদ হয়েছে।  

এছাড়া সদর উপজেলায় ৬২০ হেক্টর, দৌলতখান উপজেলায় ৩০ হেক্টর, বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ১৩০ হেক্টর, তজুমদ্দিন উপজেলায় ১২ হেক্টর, লালমোহন উপজেলায় ৩৯ হেক্টর ও মনপুরা উপজেলায় ১ হেক্টর। জেলায় এ বছর তরমুজ উৎপাদন হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার ৬৫৬ মেট্রিক টন।

এ ব্যাপারে ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ হরলাল মধু জানান, তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে,  করোনার প্রভাব নিয়ে কিছুটা চিন্তিত থাকলেও এখন সেই সমস্যা নেই। তাছাড়া বাজার দামও সন্তোষজনক। জেলার তরমুজ বরিশাল, ঢাকা, নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম যাচ্ছে। ইতোমধ্যে জেলার ৮৫ ভাগ তরমুজ কাটা হয়ে গেছে। এ বছর বাম্পার ফলনে তরমুজ চাষে আগ্রহ বেড়েছে চাষিদের।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২০
রএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।