ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

ফুলকপির উৎপাদন ব্যয় তুলতেই হিমসিম খাচ্ছেন চাষিরা

সাজিদুর রহমান রাসেল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২০
ফুলকপির উৎপাদন ব্যয় তুলতেই হিমসিম খাচ্ছেন চাষিরা

মানিকগঞ্জ: আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মানিকগঞ্জ জেলায় এ চলতি মৌসুমে ফুলকপির ফলন ভালো হলেও আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় উৎপাদন ব্যয় তুলতে হিমসিম খাচ্ছেন চাষিরা।

ফুলকপির হাটে আমদানি বেশি হওয়ায় এর দাম কমে গেছে।

প্রতি মণ ফুলকপি পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে তিনশ’ টাকা করে। মণ হিসেবে প্রতিটি কপির দাম দাঁড়াচ্ছে সাড়ে ৭ টাকা। অন্যদিকে, একেকটি ফুলকপি উৎপাদন করতে খরচ হয়েছে ১০ টাকারও বেশি। লোকসান হলেও বাধ্য হয়েই চাষিরা তাদের জমিতে উৎপাদিত ফুলকপি বিক্রি করছেন আড়তে।

বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জেলার গোলড়া পাইকারি আড়তে গিয়ে ফুলকপি কম দামে বিক্রির এমন চিত্র দেখা যায়।

ভোর থেকে চাষিরা তাদের জমি থেকে ফুলকপি কেটে ভ্যানে করে আড়তে নিয়ে আসছেন এবং পাইকারদের সঙ্গে দর-দাম করছেন। যে দাম পাচ্ছেন, সে দামেই বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন, কারণ নাহলে পুরোটাই লোকসান হবে। পাইকাররা চাষিদের কাছ থেকে ফুলকপি কিনে প্যাকেট করে ট্রাকযোগে তা রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাচ্ছেন।

সাটরিয়া উপজেলার হরগজ এলাকার লুৎফর মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রতিটি ফুলকপির চারা কিনতে ব্যয় হয়েছে ৩ টাকা। তারপর জমিতে বপন থেকে শুরু করে সার, কীটনাশক এবং ফলনের পর কাটা থেকে শুরু করে প্রতিটি ফুলকপিতে খরচ হয়েছে প্রায় ১০ টাকারও বেশি কিন্তু আড়তে এসে সেই কপি বিক্রি করতে হচ্ছে ৭ টাকা করে। লোকসান হলেও বিক্রয় করছি কারণ তা নাহলে পুরোটাই লোকসান হয়ে যাবে। ঋণ করে জমিতে আবাদ করেছিলাম এখন কীভাবে ওই টাকা পরিশোধ করবো তা সৃষ্টিকর্তাই জানেন। ’

আজিজ নামে আরেক চাষি বলেন, ‘আমি এ বছর ৯০ শতাংশ জমিতে ফুলকপির আবাদ করেছি। ভাবছিলাম বন্যায় যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নিতে পারবো, কিন্তু এখন দেখি বন্যায় যে ক্ষতি হয়েছিল, তার চেয়ে বড় ক্ষতি হয়ে গেল। ’

আকবর নামে এক পাইকার বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন এ গোলড়া আড়ত থেকে ফুলকপি কিনে ঢাকার আমিন বাজার, সাভার, বাইপাইলসহ গাজীপুরে সরবরাহ করে থাকি। প্রথমদিকে ফুলকপির প্রচুর দাম ছিল কিন্তু গত কয়েকদিন যাবত আমদানি বেশি হওয়ায় দাম কমে গেছে। ’
গোলড়া পাইকারি আড়তের পরিচালক এস এ রাজ্জাক কবির বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার এ আড়ত থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ফুলকপিসহ বিভিন্ন সবজি পাইকাররা কিনে সরবরাহ করে থাকে। বন্যার পরপরই চাষিরা আগাম ফুলকপির আবাদ করেছেন। ফলে এখন আড়তে আমদানি বেশি হওয়ায় ফুলকপির দাম এতোটাই কমে গেছে যে, চাষিরা উৎপাদন ব্যয়ও তুলতে পারেননি। ’

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২০
এফএম


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।