ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

স্বপ্ন বুনছেন চরাঞ্চলের চাষিরা

খোরশেদ আলম সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২০
স্বপ্ন বুনছেন চরাঞ্চলের চাষিরা ক্ষেতে কাজ করছেন কৃষক। ছবি: বাংলানিউজ

লালমনিরহাট: বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নতুন স্বপ্ন বুননে ব্যস্ত সময় পার করছেন লালমনিরহাটের চরাঞ্চলের চাষিরা।  

জানা গেছে, তিস্তা, ধরলা আর সানিয়াজান নদী বেষ্টিত লালমনিরহাটের প্রায় অর্ধশত চরাঞ্চল রয়েছে।

নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় নদীর বুকে জেগে ওঠা এসব বালু চরে চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক পরিবারের সদস্যরা। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিবারের সব সদস্য একযোগে কৃষি কাজে মাঠে নেমে পড়েন। পুরুষদের সঙ্গে পরিবারের নারী সদস্যরাও গৃহস্থলীর কাজ শেষ করে কৃষি কাজে যোগ দেন। চরাঞ্চলের বালুময় জমিতে কঠোর পরিশ্রম করে ফসল ফলানোই এক মাত্র আয়ের উৎস চরবাসীর। তাই ফসলের ভালো ফলন পেতে দিনভর মাঠে কঠোর পরিশ্রম করেন তারা।  গতবারের বন্যায় আমন ধানের ক্ষেত বন্যা আর ভারী বৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে। অনেক কৃষকের গোলা শূন্য হয়ে পড়েছে। খাদ্যের যোগান ও সংসারের খরচ মেটাতে বালুময় জমিতে ফসল ফলানোর সংগ্রামে নেমে পড়েছেন চরবাসী। চরাঞ্চলের এসব বালু জমিতে প্রচুর সেচ দিয়ে আলু, ভুট্টা, বাদাম, মিষ্টি কুমড়া, তরমুজ, তামাক, মরিচ, রসুন ও পেঁয়াজসহ নানান জাতের সবজি চাষাবাদ করেন চরবাসী।

তবে সেচ ব্যবস্থায় চরাঞ্চলের চাষাবাদে সব থেকে বড় সমস্যা। বালু জমি হওয়ায় সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ফসলের ক্ষেতে সেচ দিতে হয় চরাঞ্চলের চাষিদের। তার ওপর প্রত্যেক চাষির সেচ পাম্প নেই। ফলে ভাড়ায় চালিত শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে পানি পলিথিনের বিশেষ পাইপ দিয়ে প্রতি ঘণ্টা ১০০ টাকা দামে ক্রয় করতে হয় তাদের। যা ব্যয় বহুল ও পরিশ্রমের। এভাবেই কঠোর শ্রম ও অর্থ ব্যয় করে স্বপ্ন বুনেন চরাঞ্চলের চাষিরা। শুস্ক মৌসুমের চাষাবাদে অর্জিত আয়ে বন্যাকালীনসহ বাকী সময় চলে চরবাসীর প্রতিটি পরিবারের সংসার।  তিস্তার চরাঞ্চল কালীগঞ্জের চর বৈরাতি গ্রামের মমিনুল আনোয়ারা কৃষক দম্পত্তি বাংলানিউজকে বলেন, বাপ-দাদার ভিটে-মাটি সব তিস্তার হিংস্রো স্রোতে বিলিন হয়েছে। গোয়াল ভরা গরু আর গোলা ভরা ধান ছিল আমাদের। বর্তমানে কিছুই নেই। যা আছে সবই ধূ ধূ বালুর চর। তবে সংসার চালাতে কনকনে ঠাণ্ডাকে উপেক্ষা করে এই বালু চরে পানি সেচ দিয়ে ভুট্টা, রসুন, পেঁয়াজ ও আলুর চাষাবাদ করছি।  

একই চরের আফজাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এক সময় জমি-জিরাত (ফসলের মাঠ) সবই ছিল। তিস্তা যা কেড়ে নিয়েছে। শীত মৌসমে পানি কমে যাওয়ায় সেই বসত-ভিটার জায়গা আবার জেগে উঠেছে। আর সেই বসত-ভিটায় এখন তাংকু (তামাক) আবাদ করছি। তাংকু বিক্রি করে সারা বছর সংসারের খরচ চালাবো।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২০
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।