ব্রাহ্মণবাড়িয়া: নীল আকাশের নিচে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠজুড়ে হলুদ সরিষা ফুল। সকালের সূর্যের কিরণ প্রতিফলিত হবার সঙ্গে সঙ্গেই সরিষা ফুলের সমারোহে হেসে ওঠে চারদিক।
একাধিক কৃষকের সঙ্গে বলে জানা যায়, এক সময় জেলায় ব্যাপক পরিমাণে সরিষার আবাদ হতো। সয়াবিনের ওপর নির্ভরতা বাড়ায় বর্তমানে অনেকটাই কমে গেছে সরিষার আবাদ। তবুও ধান চাষের পাশাপাশি ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সরিষার চাষ হয়ে থাকে। জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ১১ হাজার ৮২৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। আবাদও হয়েছে ১১ হাজার ৮২৭ হেক্টর জমিতে। জেলায় ১৫ হাজার ৯৬৩ মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদিত হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। কৃষক ফুল মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, সরিষা চাষ করতে প্রতি কানি জমিতে ৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। লাভ হবে প্রতি কানিতে ৫ হাজার টাকা। সরিষা চাষে যে সার আমরা ব্যবহার করি, পরবর্তীকালে ইরি ধান রোপনের সময় সার বেশি দেওয়া লাগে না। এতে আমাদের খরচ কিছুটা কমে যায়। এবার মেঘ-বৃষ্টি না হলে আমরা লাভবান হবো।
অপর কৃষক বাচ্ছু মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমি এবার ৭ কানি জমিতে সরিষা চাষ করেছি। খরচ হয়েছে ২২ হাজার টাকা। তবে কৃষি অফিস থেকে কোনো সহযোগিতা পাইনি। নিজের টাকা দিয়ে সার কিনেছি। পোকার আক্রমণ হলে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারি।
কৃষক সাদ্দাম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ফুল আসা শুরু হয়েছে মাত্র। কার্তিক মাসে বীজ বুনেছি, পৌষ-মাঘ মাসের দিকে সরিষা তুলবো। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক রবিউল হক মজুমদার বাংলানিউজকে বলেন, এক সময় সরিষা আবাদ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্য ছিল। সয়াবিনের ওপর নির্ভর হওয়ার কারণে সরিষার আবাদ এখন অনেকটা বিলুপ্তির পথে। আমরা তেল জাতীয় ফসল আমদানি করার জন্য সরিষা চাষকে গুরুত্ব দিচ্ছি। দুই ফসলি জমিকে তিন ফসলি করারও চেষ্টা করছি।
বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০২১
এসআরএস