ঢাকা: কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, কৃষিতে যে অভাবনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে বঙ্গবন্ধুই তার ভিত্তি রচনা করেন। বঙ্গবন্ধুর গৃহীত কৃষিনীতির পথ ধরেই বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) সন্ধ্যায় ভার্চ্যুয়ালি ‘মুজিববর্ষে শতঘণ্টা মুজিবচর্চা’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মেহেরপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল প্ল্যাটফর্মে ধারাবাহিক ‘মুজিববর্ষে শতঘণ্টা মুজিবচর্চা’ অনুষ্ঠানের এ পর্বের আলোচনার বিষয় ছিল ‘কৃষকের বঙ্গবন্ধু’।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও খাদ্য নিরাপত্তার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই সবুজ বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। কৃষি উন্নয়নে নিয়েছিলেন যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। বঙ্গবন্ধু উৎপাদন বৃদ্ধিতে আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি, সেচ সুবিধার সম্প্রসারণ, উন্নত বীজের ব্যবহারে পদক্ষেপ নেন। বিদেশ থেকে ট্রাক্টর, সেচযন্ত্র আনার ব্যবস্থা নেন। কৃষিতে নতুন নতুন প্রযুক্তি ও উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবনের জন্য গবেষণায় গুরুত্ব দিয়ে কৃষি গবেষণা কাউন্সিলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত করেন। চাকরিতে কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণির পদমর্যাদা দেন। এসব উদ্যোগের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু কৃষি উন্নয়নের যে ভিত্তি রচনা করেছিলেন, সেটিকে অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কৃষিক্ষেত্রে ও খাদ্য নিরাপত্তায় বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ও ‘মুজিববর্ষে শতঘণ্টা মুজিবচর্চা’ প্রোগ্রামের মুখ্য উপদেষ্টা ফরহাদ হোসেন এমপি।
মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সাবেক সংসদ সদস্য মো. মকবুল হোসেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক স্বপন কুমার খাঁ, গাংনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম শাহিন ও প্রফেসর হাসানুজ্জামান মালেক।
এ সময় কৃষিমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের ‘মুজিববর্ষে শতঘণ্টা মুজিবচর্চা’ অনুষ্ঠানকে ব্যতিক্রমী, সৃজনশীল ও অনন্য উদ্যোগ বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, মুজিববর্ষে আমাদের সবচেয়ে বড় কাজ হবে বঙ্গবন্ধুর জীবনের নানা দিক সম্পর্কে আরও বেশি করে জানা। বঙ্গবন্ধুর জীবন হলো মহাকাব্য। আমাদের বঙ্গবন্ধুর দেশপ্রেম, দূরদর্শিতা, ত্যাগ, জীবনসংগ্রাম, সাহস, প্রজ্ঞা, নেতৃত্ব ও মানবপ্রেমসহ সার্বিক গুণাবলী সম্পর্কে আরও বেশি করে জানতে হবে এবং তা তরুণ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। এতে দেশ ও জাতি উপকৃত হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও চেতনা সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ বিশেষভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে মেহেরপুর জেলা প্রশাসন চলমান ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপনের অংশ হিসেবে ‘মুজিববর্ষে শতঘণ্টা মুজিবচর্চা’ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। গত ৩০ আগস্ট ২০২০ জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
এ আলোচনা অনুষ্ঠানে দেশের খ্যাতিমান রাজনীতিবিদ, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, ইতিহাসবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তি, বরেণ্য সাহিত্যিক ও লেখক জুম প্ল্যাটফর্মে সংযুক্ত থেকে বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শের বিভিন্ন দিক উপস্থাপন করেন। এ প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সৎ, আদর্শবান, নিঃস্বার্থ, নির্লোভ, নির্মোহ, নিরহংকার ও নির্ভীক এবং মাধুর্যসম্পন্ন ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তোলাই এ কর্মসূচির লক্ষ্য।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২১
এমআইএস/আরবি