মাগুরায়: হাড়ভাঙা খাটুনির পর এবার আমন ধানে ফলন ভালো পেয়েছেন মাগুরার কৃষকেরা। এবার সোনালী ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
মাগুরার বিভিন্ন ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, সোনালী রঙা পাকা ধানে মাঠ ভরে গেছে। সেই ধান কেটে ঘোড়ার গাড়িতে তোলা হচ্ছে বাড়ি নেওয়ার জন্য। যাদের বাড়ি মাঠের কাছেই, তারা ধান কেটে মুঠি (গোছা) বেঁধে বাঁশে লাঠিতে ঝুলিয়ে কাঁধে করেই বাড়িতে ধান নিয়ে যাচ্ছেন।
চলতি মৌসুমে মাগুরা সদর উপজেলা, শালিখা, শ্রীপুর, মহম্মদপুরসহ চার উপজেলায় আমন ধানের ব্যাপক ফলন হয়েছে।
কুয়াশার চাদর ভেদ করে উঁকি দিচ্ছে সকালের সোনারোদ। হেমন্তের মৃদু বাতাসে দোল খাচ্ছে মাঠ ভরা সোনালী আমন ধান। সেই ধান কাটা হচ্ছে এখন।
কৃষি বিভাগ বলছে, মাগুরায় এ বছর আমন ধানের ব্যাপক ফলন হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় জেলায় খাদ্য সংকট দেখা দেবে না এবার। এ বছর ৬১ হাজার ৪৫৬ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আমন ধানের আবাদ হয়েছে ৬১ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে।
মাগুরা সদর উপজেলার মঘি গ্রামের কৃষক কাশেম হোসেন বলেন, দুই বিঘা জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছি। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবার ফলন ভালো হয়েছে। প্রথমে ইউরিয়া সারের সমস্যা থাকলেও পরে তা ঠিক হয়। তবে তেলের দাম বাড়ায় ভবিষ্যতে ধান চাষে লোকশানের আশঙ্কা করছি। ধানের ন্যায্য মূল্য যদি আমরা পাই, তাহলে আমরা লাভবান হবো বলে আশা করছি।
একই এলাকার কৃষক ইকামত হোসেন বলেন, আমন মৌসুমে ধানের দাম ভালো হয়েছে। তবে ধান পাকার সময় দুইবার পানির সেচ দেওয়া দরকার ছিল, কিন্তু তেলের দাম বাড়ায় সেচ দিতে পারিনি। তেলের দাম যদি সরকার না কমায়, আমরা কীভাবে ধান চাষ করব? আগামীতে ধান চাষ অল্প পরিমাণে করব।
এখন মাঠের পাকা ধান কেটে ঘরে তুলছেন কৃষকেরা। ফেলে গ্রামাঞ্চলে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। তবে কৃষকেরা বলছেন, ধানের উৎপাদন ভালো হলেও ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে রয়েছে শঙ্কা।
মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সুশান্ত প্রামাণিক বলেন, এ বছর আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে। রোগ, পোকা মাকড়ের আক্রমণ কম থাকার পাশাপাশি আবহাওয়াও ছিল অনুকূলে। এরই মধ্যে মাঠে মাঠে চলছে ধান কাটার উৎসব। কৃষকেরা আমন ধান নিবিঘ্নে ঘরে তুলছেন। আশা করছি, তারা ধানের ন্যায্য মূল্য পাবেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৭১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২১
এসআই