ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চাষাবাদের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে। এবারই প্রথম প্রণোদনার আওতায় এ জেলায় পরীক্ষামূলকভাবে সমলয় পদ্ধতিতে হয়েছে বোরো ধানের আবাদ।
বীজ বপন, চারা রোপণ, ধান কেটে ঘরে তোলা- সবই হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে। ফলে কমেছে শ্রমিক নির্ভরতা ও উৎপাদন খরচ। যান্ত্রিক এ পদ্ধতিকে সমলয় বলা হয় ।
কৃষি বিভাগ বলছে, সমলয় পদ্ধতিতে চাষাবাদের ফলে কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। এতে কৃষকের উৎপাদন খরচ কমার পাশাপাশি উৎপাদিত ধানের অপচয়, জমিতে পোঁকা-মাকরের বিস্তার, রোগ-বালাই দমন সহজতর হবে।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি মওসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বোরো আবাদ হয়েছে ১ লাখ ১১ হাজার ১৫ হেক্টর জমিতে। কৃষিতে শতভাগ যন্ত্রের ব্যবহার নিশ্চিতে জেলার দুই উপজেলার ৩৩৩ বিঘা জমিতে প্রণোদনার আওতায় বোরোর আবাদ হয়েছে সমলয় পদ্ধতিতে। জেলা সদর ও নবীনগরে সমলয় পদ্ধতিতে আবাদ হওয়া জমি থেকে যন্ত্রের মাধ্যমে দ্রুত চলছে ফসল ঘরে তোলার কাজ।
সমলয় পদ্ধতির প্রশংসা করে কৃষক মাহফুজ মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, এ পদ্ধিতে যেমন দ্রুত গতিতে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে চারা রোপণ সম্ভব। তেমনি যে কোনো দুর্যোগকালে কৃষক দ্রুত ফসল ঘরে তুলতে পারবেন।
অপর কৃষক বাহার মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, এ পদ্ধতি আমাদের জন্য আশির্বাদ হয়েছে। আগে ফসল বপণ ও কাটায় অনেক শ্রমিক প্রয়োজন হতো। প্রায়ই শ্রমিক সংকট দেখা দিত। তাছাড়া ফসল মাড়াইসহ ধানের উৎপাদিত ফসল ঘরের তোলার সময় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ধানের অপচয় হতো। কিন্তু এ পদ্ধিতে অল্প সময়ে ধান রোপণ করা যাচ্ছে, ফসল ঘরে তোলার কাজটিও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। মেশিনের মাধ্যমে সরাসরি ধান ঘরে তোলা যাচ্ছে।
প্রবীণ কৃষক রহিছ মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আগে আমাদের প্রতি কানি জমিতে ধান চাষ করতে খরচ হতো প্রায় চার হাজার টাকা। সমলয় পদ্ধিতে তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। এ পদ্ধতির প্রসার ঘটলে বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে ফসলহানি কমবে। সেই সঙ্গে কমবে উৎপাদন খরচ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রবিউল হক মজুমদার বাংলানিউজকে বলেন, আমরা প্রণোদনার আওতায় পরীক্ষামূলকভাবে দুই উপজেলায় সমলয় পদ্ধতিতে আবাদ শুরু করেছি। এটি সফল হলে ধান আবাদে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসার পাশাপাশি কৃষকরা লাভবান হবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২২
এসআই