ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

ভারী বৃষ্টিতে চায়ের সুদিন

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৬ ঘণ্টা, জুন ২, ২০২২
ভারী বৃষ্টিতে চায়ের সুদিন নতুন কুঁড়িতে হাসছে চা-বাগান। ছবি: বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন

মৌলভীবাজার: বর্ষা মৌসুমের প্রেক্ষাপট শুরু হয়ে গেছে আগেই। বিরামহীন বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে সিলেটে দেখা দিয়েছিল বন্যা।

আবাদি জমিতে কৃষির উৎপন্নজাত পণ্যের অভাবনীয় ক্ষয়-ক্ষতিসহ বেড়েছে মানুষের চরম দুর্ভোগ। তবে আশার কথা, দেশের অন্যতম প্রধান চা শিল্পাঞ্চল সিলেটে এ বৃষ্টিপাত চা পাতার জন্য বয়ে এনেছে দারুণ সুফল।  

সম্প্রতি সরেজমিন দেখা গেছে, উতলা বৃষ্টির বিরতীহীন স্পর্শ পেয়ে বাগানের চা-গাছগুলো সতেজ ও উৎপাদন নির্ভর হয়ে রয়েছে। চায়ের গাছে গাছে যেনো আজ কুঁড়িদের উৎসব। চা-গাছের ছড়ানো বিস্তৃর্ণ গালিচার মাঝে কচি কোমল কুঁড়িদের মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকার দৃশ্য – ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছে চা উৎপাদনে।  

বিশেষজ্ঞের মতে, এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে বছর শেষে চা উৎপাদনে রেকর্ড করবে বাংলাদেশ।  

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর, সিলেট এর তথ্য মতে, চলতি বছরের মে মাসে বৃহত্তর সিলেটে বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৪৫৩ মিমিমিটার। যা গত বছরের মে মাসের তুলনায় ৮৫৩ মিমিমিটার বেশি। অর্থাৎ ২০২১ সালের মে মাসে পুরো সিলেটে বৃষ্টিপাতের পরিসংখ্যান ৬০০ মিলিমিটার।  

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশীয় চা সংসদের (বিটিএ) সিলেট ব্রাঞ্চ চেয়ারম্যান জিএম শিবলী বাংলানিউজকে বলেন, এক মাসেই ১৪৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত চায়ের জন্য দারুণ খবর। চলতি বছরের শুরুটা হয়েছিল খরা দিয়ে। খরার জন্য চা উৎপাদনে আমরা কিছুটা পিছিয়ে গিয়েছিলাম, এখন ভারী বৃষ্টিতে সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠছি।  

তিনি আরও বলেন, চায়ের ভালো উৎপাদনের জন্য শুধুমাত্র বৃষ্টিপাত হলেই হবে না। খরা এবং অতিবৃষ্টি দুটোই চায়ের জন্য হুমকি। চা গাছের পরিপূর্ণ শারীরিক বৃদ্ধিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ সানলাইট (সূর্যালোক) লাগবে। চলতি বছরের পরবর্তী মাসগুলোতেও যদি এই বৃষ্টির ধারাবাহিকতা বজায় থাকে এবং পর্যাপ্ত ও প্রয়োজনীয় সানলাইন পাই তবে এবারও আমরা গতবারের মতোই রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদন করতে পারবো।   

এক সময় আমাদের দেশে অন্যতম রপ্তানিপণ্য ছিল চা। তবে দেশে চায়ের অভ্যন্তরীণ চাহিদা ব্যাপকভাবে বাড়ায় বিগত বছরগুলোতে চা রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ ছিল। প্রাকৃতিক কৃতজ্ঞতাবশত অনুকূল পরিবেশে চায়ের উৎপাদন যদি চাহিদার অতিরিক্ত বৃদ্ধি পায় এবং চা বাগানগুলোতে যদি চায়ের বাম্পার ফলন হয় তাহলে চা রপ্তানির বিষয়ে আবারও বাংলাদেশে অগ্রসহ হতে পারে বলে জানান ‘বিটিএ’র অভিজ্ঞ টি-প্লান্টার জিএম শিবলী।  

বাংলাদেশ চা বোর্ড সূত্র জানায়, সঠিক ব্যবস্থাপনার ফলে করোনাকালেও ২০২১ সালে দেশের ১৬৭টি চা বাগান এবং ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান থেকে রেকর্ড পরিমাণ মোট ৯৬ দশমিক ৫০৬ মিলিয়ন কেজি (৯ কোটি ৫৬ লাখ কেজির কিছু বেশি) চা উৎপাদিত হয়। এর মধ্য দিয়ে চা শিল্পের ১৬৭ বছরের ইতিহাসে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বকালের রেকর্ড করেছিল বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৬ ঘণ্টা,জুন ০২, ২০২২
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।