[A Song for Simeon কবিতাটি এলিয়টের ‘অ্যারিয়েল পোয়েমস’ গোত্রের কবিতাগুলোর একটি। এটি প্রকাশিত হয় ১৯২৭-২৮ সালের দিকে।
এ কবিতার যে নায়ক, নাম তার সিমেওন। জেরুসালেমের এক ইহুদি ধর্মালয়ের পুরোহিত সিমেওন জীবনসায়াহ্নে এসে যিশুর জন্মের প্রতীক্ষায় থাকে। কেননা ঈশ্বর তাকে কথা দিয়েছেন, যিশুকে দেখার সৌভাগ্য হবে তার; এবং সেটা হয়ও। বেথলেহেমে ইহুদিদের সিনেগগে আট দিন বয়সী যিশুকে আনা হলে তাকে কোলে তুলে নেওয়ার সুযোগ হয় সিমেওনের : “Simeon took him in his arms” (Luke 2: 28) ।
একই সঙ্গে সিমেওনের কণ্ঠে উচ্চারিত হয় অমোঘ এক ভবিষ্যদ্বাণী। যিশুর ভাগ্যে ভবিষ্যতে কী ঘটবে, ক্রুশবিদ্ধ হয়ে যে তাকে প্রাণ দিতে হবে এবং মা মেরি আকাশ-বাতাস ভরিয়ে তুলবেন বিলাপে, সে কথাও বলে দেওয়া হয়েছে আগাম।
নিচের দু`টি চরণে সে আভাস মেলে:
Before the time of cords and scourges and lamentation…
Before the certain hour of maternal sorrow …
যিশুকে হত্যার ইঙ্গিত Journey of the Magi কবিতাতেও পাই। আকাশে তিনটি গাছের উপস্থিতি মানে যে তিনটি ক্রুশ সেটা বুঝতে বুদ্ধিমান হওয়ার দরকার পড়ে না : “three trees on the low sky”
সব মিলিয়ে সূচনা ও যবনিকা, জন্মের বিপরীতে মৃত্যু, আর জীবনের অনিবার্য ক্লেশ সবই A Song for Simeon কবিতায়---- সিমেওনের জবানিতে--- নানা ইমেজে -ইঙ্গিতে মূর্ত।
আর হ্যাঁ, কবিতাটিতে এলিয়টের নিজের জীবনেরও ছায়াপাত ঘটেছে ; দেশ ছেড়ে বিদেশে ঠাঁই গাড়া, নানা অনিশ্চয়তা, স্ত্রী ভিভিয়েনের অসুখ, দাম্পত্যের নানা টানাপোড়েনসহ ব্যক্তিগত নানা বেদনা-বিপর্যয়ের পরোক্ষ ইঙ্গিতও আছে। এক সময় অ্যাংলিকান চার্চের দীক্ষাও নেন আধুনিককালের বিশ্বকবিতার মুকুটহীন রাজা এলিয়ট। খ্রিস্টীয় বিশ্বাসের ছাপ আর বাইবেলের কাহিনী দুটোই মুখ্য ও মুখর হয়ে ওঠে তার শেষ দিককার কবিতায়। এ কবিতাটিও তারই স্মারক।
২৬ সেপ্টেম্বর ছিল এলিয়টের জন্মদিন। এই অনুবাদ তাঁর জন্মদিনের নিবেদন। আগ্রহী পাঠকের জন্য সবশেষে জুড়ে দেওয়া হলো মূল কবিতাটিও। ]
প্রভু, টবে টবে স্ফূটমান রোমদেশি হায়াসিন্থ ফুলের বিথার
এবং শীতের সূর্য হামা দ্যায় তুষার-পাহাড়ে;
একগুঁয়ে ঋতু তার গেড়েছে শেকড়।
হাতের চেটোয় ধৃত পালকের মতো পল্কা জীবন আমার
পথ চেয়ে বসে আছে মরণ-হাওয়ার।
রৌদ্রালোকে ধূলি আর কোণে কোণে স্মৃতি
মৃতভূমি পানে চলা হিমেল হাওয়ার ক্ষণ গোনে ।
শান্তি তব আমাদেরে করো তুমি দান।
কতো না বছর আমি এ-নগরে হেঁটে বেড়িয়েছি,
আস্থা আর উপবাস রেখেছি অটুট, দীনজনে থেকেছি সহায়,
দিয়েছি সম্মান-স্বস্তি আর নিজে পেয়েছিও তা-ই।
আমার দুয়ার থেকে কখনো যায়নি কেউ ফিরে।
আমার বাড়ির কথা মনে পড়বে কার, কোথায় থাকবে হায় সন্তানের সন্ততি আমার
যখন ঘনাবে সেই বেদনা-প্রহর?
গড্ডলিকা পথ ধরে তারা যাবে শেয়ালের ঘরে,
পালিয়ে বেড়াবে তারা ভিনদেশি মুখ আর ভিনদেশি তলোয়ার থেকে।
ঘনাবার আগে সেই চাবুক শেকল আর বিলাপ-প্রহর
শান্তি তব আমাদেরে করো তুমি দান।
নিরাশার গিরিতীর্থে পৌঁছাবার আগে,
মাতৃবিলাপঘেরা অমোঘ সে’ প্রহরের আগে,
মরণের এ-প্রসবলগ্নে এসে আজ,
এখনো অভাষবাণী, এখনো অবোল
শিশুটি শোনাক তাকে ইসরেলের আশ্বাসের বাণী
আশিটি বছর যার কেটে গেছে আর ভবিষ্যৎ নেই যার কোনো ।
তোমারই বাক্য অনুসারে,
তোমার বন্দনা তারা ক’রে যাবে আর যুগপৎ গর্বে-অবজ্ঞায়
প্রজন্ম প্রজন্ম ধরে হবে তারা ক্লেশের শিকার,
আলোকের ’পরে আলো, ঋষির সোপান বেয়ে ওঠে।
এ-আমার জন্য নয় আত্মবলিদানের গৌরব, কোনোরূপ আরাধনা আর কোনো ভাবের পুলক,
পরম দিব্যজ্ঞান সে নয় আমার।
শান্তি তব করো হে, আমায় তুমি দান।
(হৃদয় তোমার, হৃদি তব ভেদ ক’রে চলে যাবে
এক তলোয়ার)।
নিজের জীবনে আমি হয়েছি কাহিল আর তাদেরও জীবনে যারা পেছনে আমার,
নিজের মরণে আমি মুমূর্ষু আজ আর তাদেরও মরণে যারা পেছনে আমার।
দেখে যেতে দাও তারে তোমার নির্বাণ,
দাসানুদাসকে প্রভু আজ্ঞা করো যেতে।
পড়ুন মূল কবিতা :
A Song for Simeon
T.S. Eliot
Lord, the Roman hyacinths are blooming in bowls and
The winter sun creeps by the snow hills;
The stubborn season has made stand.
My life is light, waiting for the death wind,
Like a feather on the back of my hand.
Dust in sunlight and memory in corners
Wait for the wind that chills towards the dead land.
Grant us thy peace.
I have walked many years in this city,
Kept faith and fast, provided for the poor,
Have taken and given honour and ease.
There went never any rejected from my door.
Who shall remember my house, where shall live my children’s children
When the time of sorrow is come ?
They will take to the goat’s path, and the fox’s home,
Fleeing from the foreign faces and the foreign swords.
Before the time of cords and scourges and lamentation
Grant us thy peace.
Before the stations of the mountain of desolation,
Before the certain hour of maternal sorrow,
Now at this birth season of decease,
Let the Infant, the still unspeaking and unspoken Word,
Grant Israel’s consolation
To one who has eighty years and no to-morrow.
According to thy word,
They shall praise Thee and suffer in every generation
With glory and derision,
Light upon light, mounting the saints’ stair.
Not for me the martyrdom, the ecstasy of thought and prayer,
Not for me the ultimate vision.
Grant me thy peace.
(And a sword shall pierce thy heart,
Thine also).
I am tired with my own life and the lives of those after me,
I am dying in my own death and the deaths of those after me.
Let thy servant depart,
Having seen thy salvation.
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ২০১০, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১০