ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

কবিতা ও কথনে তরুণ সাহিত্যিকদের ভাবনা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২৩
কবিতা ও কথনে তরুণ সাহিত্যিকদের ভাবনা

ঢাকা: নবীনদের সাহিত্যচর্চা ও সাধনাকে সঞ্জীবিত করছে আইএফআইসি কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার। তারই ধারাবাহিকতায় এবার এই পুরস্কার প্রদান উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের।

বৃহস্পতিবার দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার প্রথম দিনের আয়োজন ‘কবিতা ও কথন’ শীর্ষক কবিতা পাঠ ও আলোচনা অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। সন্ধ্যায় রাজধানীর বেঙ্গল শিল্পালয়ে এই আয়োজনে বিগত বছরগুলোতে ‘কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার’ বিজয়ী কবি ও লেখকরা অংশগ্রহণ করেন।

আয়োজনে কবিতা পাঠ ও কথনে অংশ নেন কবি ও সাহিত্যিক ওবায়েদ আকাশ, শাকিরা পারভীন, পিয়াস মজিদ, মোশতাক আহমেদ, টোকন ঠাকুর, রঞ্জনা বিশ্বাস এবং রাজিব হাসান।

কথা সাহিত্যের কারণে কবিতা পাঠকের কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে ওবায়েদ আকাশ বলেন, কবিরা এখন পুরনো জায়গা থেকে বের হয়ে আসতে চাইছে। তারা নতুন শব্দ, কবিতার নতুন ধরন, নতুন গঠন চান। এজন্য তারা পাঠের মধ্যে থেকে সেই অনুযায়ী নতুন কিছু করার চেষ্টা করেন। অর্থাৎ একটা রূপান্তরের মধ্যে থাকেন তারা। পাঠককেও সেদিকে আসতে হবে। পাঠককেও সাধনার ভেতরে থাকতে হবে; নয়তো পাঠকের কাছে কবিতা কঠিন হয়ে আসতে পারে।

বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মানসম্মত বই হচ্ছে না, ঘাটতি কোথায় এমন কথনে লেখক মোশতাক আহমেদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যারা লিখছেন, তারা তিন চারটি মিডিয়া পার হয়ে তারপর লিখছেন। ফলে একই ঘরানার তথ্য উঠে আসছে। আরও একটি বড় কারণ হলো এর পেছনে লেখক ধৈর্য ধরে যথেষ্ট সময় দিচ্ছেন না, রিসার্চ করছেন না। ফলে এমন কথা শোনা যাচ্ছে। তবে ১০০টা বই এলে তার মধ্যে ১০টা বই অবশ্যই মানসম্মত থাকে। আর আমাদের উচিত মুক্তিযুদ্ধের নতুন নতুন দিক বের করে সেগুলো নিয়ে যথেষ্ট সময় ধরে কাজ করা।

শিশু সাহিত্য নিয়ে কথা বলতে গিয়ে লেখক রাজিব হাসান বলেন, শুধু শিশু সাহিত্য নয়, আমরা এমন একটা সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, যেখানে সকল সাহিত্যেই এক ধরনের হাহাকার চলছে। বই লিখে যা অর্থ পাওয়া যায়, তার থেকে ৩ বা ৪ গুন বেশি অর্থ পাওয়া যায় একটা নাটক বা সিনেমার স্ক্রিপ্ট লিখে। ফলে লেখকরা সেদিকে যাচ্ছেন। আবার পাঠকও ছাপার অক্ষর ছাপিয়ে ডিজিটাল ডিভাইস মাধ্যমে চলে আসছে। সব মিলিয়ে মুদ্রণ শিল্প একটা ঝুঁকির মধ্যে।

নিজের কথনে ‘কবিতার সঙ্গে অর্থের সংযোগ ঘটানো প্রয়োজন’ বলে মন্তব্য করেন কবি টোকন ঠাকুর। তিনি বলেন, একটি কবিতা লিখে এক প্লেট ভাত হয় না, তাহলে কবিরা কেন লিখবে, কবিতার জন্য না হোক, কবিদের জন্য তো অর্থের প্রয়োজন আছে। আমাদের এখানে আজও কবিতার সঙ্গে অর্থের সংযোগ হয়নি। তবে এটা প্রয়োজন। আমি মনে করি, সরকারের পক্ষ থেকে লেখকদের জন্য একটি ভাতা চালু করা উচিত।

আয়োজনে উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানান কালি ও কলম সম্পাদক সুব্রত বড়ুয়া। আয়োজন সঞ্চালনা করেন আশফাক খান। এ সময় নিজেদের লেখালেখি নিয়ে আরও কথা বলেন এবং কবিতা পাঠ করেন শাকিরা পারভীন, পিয়াস মজিদ এবং রঞ্জনা বিশ্বাস। আয়োজনে বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকরা উপস্থিত ছিলেন।  

সাহিত্য, শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ক মাসিক পত্রিকা কালি ও কলম বাংলাদেশের নবীন কবি ও লেখকদের সাহিত্যের সৃজনধারায় গতি সঞ্চারের উদ্দেশ্যে ২০০৮ সাল থেকে ‘কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার’ প্রদান করে আসছে। এ পর্যন্ত ৫৪ জন কবি ও লেখক এ পুরস্কার অর্জন করেছেন।

২৮ জানুয়ারি (শনিবার) বিকেল ৫টায় প্রদান করা হবে ‘কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার ২০২২’। এতে সভাপতিত্ব করবেন কালি ও কলমের সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। প্রধান অতিথি থাকবেন বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী হাশেম খান।  

এছাড়া উপস্থিত থাকবেন এবারের বিচারকমণ্ডলী ইমদাদুল হক মিলন, আবুল মোমেন ও খালেদ হোসাইন। অনুষ্ঠানটির দ্বিতীয় পর্বে মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘বীরাঙ্গনা কাব্য’ অনুসরণে শুভাশিস সিনহার নাট্যরূপ ও নির্দেশনায় ‘কহে বীরাঙ্গনা’ পরিবেশিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২৩
এইচএমএস/এসআইএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।