‘নারী রাতে চুল আঁচড়াতে পারবে না, মুখে নিতে পারবে না স্বামী ও ভাসুরের নাম’; ‘শিব পূজা করলে বলিষ্ঠ স্বামী পাবে কুমারী নারী’; ‘নারীর বুকে লোম থাকা অশুভ’; ‘স্বামীর আগে ভাত খেলে অকালে মারা যায় স্বামী’; ‘প্রসূতি নারীর ঘরে ঢোকা ও তাকে ছোঁয়া নিষিদ্ধ’; ‘নিঃসন্তান দম্পতির কোলে শিশুকে দেওয়া অমঙ্গল’; ‘কলা পড়া খাওয়ালে গর্ভবতী হন বন্ধ্যা নারী’; ‘মাসিকের সময় স্ত্রীকে বিছানা আলাদা করে দাও’; ‘ছেলেদের সোনার আংটি পরা নিষিদ্ধ’; ‘খেতে বসে বিষম খেলে মনে করছে কেউ’; ‘গায়ে প্রজাপতি বসলে প্রেম কিংবা বিয়ে হয়’।
এমন হাজারও কুসংস্কার এই দেশে প্রচলিত।
প্রচলিত কুসংস্কার নিয়ে এবারের বই মেলায় প্রকাশিত হয়েছে, ‘আমাদের যত কুসংস্কার’ শীর্ষক একটি বই। লিখেছেন, আইয়ুব হোসেন। সমাজের বিভিন্ন স্তরে যেসব কুসংস্কার প্রচলিত, তা জানতে বইটি পড়া খুব জরুরি।
ক্ষেত্র ভাগ করে কুসংস্কারগুলো সুনিপুণভাবে তুলে এনেছেন লেখক। বইটিতে আছে আঠারোটি পরিচ্ছেদ। পরিচ্ছেদগুলো হচ্ছে—কুসংস্কারের দানব, কুসংস্কারের আদিপর্ব, কুসংস্কারের বিস্তার, কুসংস্কারের ভিত, বিজ্ঞানী ও শিক্ষক এবং কথাসাহিত্যে কুসংস্কার। এছাড়াও আছে পুরুষ, নারী, শিশু, চিকিৎসা, প্রতিকার, যাপিত জীবন, শরীর, প্রাণি, খাদ্য, প্রকৃতি, আদিবাসী ও বিবিধ পরিচ্ছেদ। বইটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আট শতাধিক কুসংস্কার।
আইয়ুব হোসেন একজন বিশিষ্ট সাংবাদিক। নীতিনির্ধারণী ও নেতৃত্বস্থানে কাজ করেছেন বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকায়। এই সময়ের একজন জনপ্রিয় প্রথাবিরোধী লেখক ও গবেষক। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৯০। তার বেশির ভাগ বই গবেষণা ধর্মী। এবং বইগুলো অতিপ্রয়োজনীয়। গবেষকদের মধ্যে তার বই খুব জনপ্রিয়।
বাংলাদেশের দার্শনিক আরজ আলী মাতুব্বরকে তিনিই খুঁজে বের করেছিলেন। এবং তার রচনাবলীও সম্পাদনা করেছেন তিনিই।
আইয়ুব হোসেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধে যখন যোগ দেন, তিনি তখন কিশোর। যুদ্ধ করেছেন ৭ নম্বর সেক্টরে। যুক্ত ছিলেন বাম রাজনীতিতে। রাজনীতির জন্য একাধিকবার জেলও খেটেছেন। তিনি একজন মুক্তচিন্তক। বুদ্ধিজীবী।
‘আমাদের যত কুসংস্কার’ বইটি প্রকাশ করেছে ‘শিলালিপি’। দাম ৩০০ টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৩
এমজেএফ