বই বিপণনে প্রচলিত ধ্যানধারণা অনেক বদলে গেছে এ সময়ে এসে। ইন্টারনেট প্রযুক্তির প্রসারের ফলে ঘরে বসেই সারা দুনিয়ার দূরদূরান্তের পাঠক তার প্রিয় বইটি সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করতে পারছেন।
মুদ্রিত বইয়ের প্রকাশ সম্পর্কে পশ্চিমা বিশ্ব যখন এরকম দ্বিধান্বিত, তখন ৫ অক্টোবর মঙ্গলবার রাতে উদ্বোধন করা হলো জার্মানির ৬৩তম ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক বইমেলা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই জার্মান প্রকাশকদের উদ্যোগে প্রথম শুরু হয় এ মেলা। ফ্রাঙ্কফুর্ট শহরের পাশেই মাইনস নামের শহরতলীতে ৫০০ বছর আগে মুভেবল মুদ্রণযন্ত্র আবিষ্কার করেন গুটেনবার্গ। গুটেনাবার্গের প্রেস থেকেই প্রথম ছাপা হয় একটি জার্মান কবিতার বই ও ১৪টি বাইবেল।
এ বছর মেলায় বিশ্বের ১১১টি দেশ থেকে প্রায় ৭৫৩৩টি প্রকাশনা সংস্থা অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ৭৩৩টি ব্রিটিশ ও ৬০৭টি আমেরিকান ইংরেজি বইয়ের প্রকাশক অংশ নিচ্ছে। এ বইমেলায় প্রতিদিনই আসবেন অসংখ্য খ্যাতিমান লেখক-প্রকাশক-অনুবাদক-এজেন্ট-প্রচ্ছদশিল্পীসহ লেখালেখি ও প্রকাশনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা।
বেশ কয়েক বছর ধরেই ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় একটি নির্দিষ্ট দেশকে অতিথি দেশ হিসেবে আমন্ত্রণ জানানোর রেওয়াজ রয়েছে। একেক বছর একেকটি দেশকে গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি সে দেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে আলাদাভাবে গুরুত্বের সাথে তুলে ধরা হয়। এবার অতিথি দেশ হিসেবে এ বইমেলায় অংশ নিচ্ছে আর্জেন্টিনা। মজার ব্যপার হলো, এ উপলক্ষে কোনো কোনো স্টলে দেখা গেছে কিংবদন্তি আর্জেন্টাইন খেলোয়াড় ম্যারাডোনার পোস্টার। মেলা উপলক্ষে প্রায় ৩৫০০টি সভা, সেমিনার ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মেলায় যোগ দেন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা ক্রিশ্চনার।
ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় প্রতি বছর শতাধিক দেশ থেকে প্রকাশক, বইবিক্রেতা, এজেন্ট, পাঠক ও লেখকসহ হাজার হাজার কৌতূহলী মানুষ অংশ নেন। এখানে সাধারণত আন্তজার্তিকভাবে বইয়ের কপিরাইট, অনুবাদ রাইট বিক্রি হয় বিভিন্ন দেশের প্রকাশকদের মধ্যে। মেলা শেষ হবে ১০ অক্টোবর।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৮২০, অক্টোবর ০৬, ২০১০