ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

মহামারিকালের স্মৃতির দলিল ‘করোনাপঞ্জি’

শিল্প-সাহিত্য ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২৩
মহামারিকালের স্মৃতির দলিল ‘করোনাপঞ্জি’

লেখক ফারাহ জাবিন শাম্মীর ‘করোনাপঞ্জি’ বই নিয়ে একটি আলোচনা অনুষ্ঠান হয়েছে। গত শনিবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সারা বিশ্ব যখন করোনার ভয়াল থাবায় ঘরবন্দী, তখন লেখক ফারাহ জাবিন শাম্মী কিছুটা সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই করোনা সময়ের ঘটনাগুলো রোজনামচার আকারে লিখতে শুরু করেন। শুধু প্রতিদিনের তথ্যই নয়, একইসঙ্গে ব্যক্তিগত আবেগ-অনুভূতি, সামাজিক পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক বিপর্যয়, গুজব, বিশ্বনেতাদের করোনা নিয়ে রাজনীতি, উদ্ভট তথ্য—সবকিছুই স্থান পেয়েছে ৫৬০ পৃষ্ঠার এ বইয়ের মলাটে।

আলোচনা অনুষ্ঠানে করোনাপঞ্জি লেখক ফারাহ জাবিন শাম্মী বলেন, করোনাকালীন সমাজে এবং সারা বিশ্বে নানা ধরনের ইস্যু তৈরি হয়েছে এবং বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটেছে, যা আমি খুব সাধারণ একজন মানুষ হিসেবে ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করেছিলাম। টানা এক বছর নয় মাস ১০ দিনের করোনাকালের কথা প্রকাশিত হয়েছে বইয়ে। ২০২৩ সালের বইমেলায় ‘স্বপ্ন ৭১’ প্রকাশনী থেকে বইটি প্রকাশিত হয়েছে। করোনার তথ্য ছাড়াও ছোট ছোট কবিতা, গল্প, স্মৃতি ও নানা ধরনের ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। ব্যক্তিগত ডায়েরি বই আকারে প্রকাশ করার বিষয়টা আমার কাছে অবশ্যই ভালো লাগার, আনন্দের ও দারুণ অভিজ্ঞতারও। আমার লেখা এই বই নিয়ে অনেকেই ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন, যা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে, করছে।

বইটি নিয়ে আলোচনায় সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার ও আজকের পত্রিকার সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রহমান বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির ভয়ানক স্মৃতি ফারাহ জাবিন শাম্মী রোজনামচার আকারে উপস্থাপন করেছেন, একইসঙ্গে সেই সময়ের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও মানবিক বিষয়গুলোকে মনের গভীর থেকে উপলব্ধির চেষ্ট করেছেন। প্রতিদিনের এসব বিবরণ শুধু তথ্যবহুলই নয়, বরং যেকোনো পাঠকের অনুভূতিকে ছুঁয়ে যাবে অতলে। এই বইয়ের কোনো কোনো ঘটনা আমাকে কাঁদিয়েছে।

তিনি আরও যোগ করেন, অনেক বড় একটি বই হলেও এর প্রতিটা পৃষ্ঠা অন্য একটি পৃষ্ঠা পড়ার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করে।

ব্র্যাকের অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর শরিফুল হাসান বলেন, করোনাপঞ্জি বইটি একটা বড় রকমের ডকুমেন্ট হয়ে গেল। বইটি গবেষণার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে এ ধরনের বই যত বেশি লেখা হবে ততই আমাদের জন্য সময়ের একটি দলিল তৈরি হবে। এই বইয়ের সবচাইতে বড় যে বিষয়টি আমাকে বিস্মিত করেছে, লেখক একদিনের জন্যও এই ডায়েরি লেখা বন্ধ করেননি। বাবার মৃত্যু, নিজের করোনা আক্রান্ত হওয়া, সেসব সময়েও তিনি লেখা থামিয়ে রাখেননি।

আলোচনা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশনাল সাইকোলজি অ্যান্ড কাউন্সেলিং বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. আজহারুল ইসলাম, গণযোগাযোগ  ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাইফুল আলম চৌধুরী, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণা সহযোগী হোমায়রা আহমেদ প্রমুখ।

তথ্যবহুল, গবেষণামূলক এই বই সংগ্রহ করার জন্য পাঠকদের আহ্বান জানিয়ে স্বপ্ন ’৭১ প্রকাশনের প্রকাশক আবু সাঈদ অনুষ্ঠান শেষ করেন।  

এই আয়োজনের সঙ্গে সহ-আয়োজক হিসেবে ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সংগঠক ‘মুক্ত আসর’ ও বইবিষয়ক ম্যাগাজিন ‘বইচারিতা’।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২৩
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।