‘চৌরঙ্গী’, ‘কত অজানারে’র মতো বহু জনপ্রিয় বইয়ের লেখক মণিশংকর মুখোপাধ্যায়। লেখক হিসেবে তিনি মূলত শংকর নামেই পরিচিত।
২১ অক্টোবর বিকাল ৫টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল তার ‘চৌরঙ্গী’, ‘আশা-আকাক্সক্ষা’ ও ‘কথামন্থন’-এর বাংলাদেশি সংস্করণের প্রকাশনা উৎসব। বইগুলো প্রকাশ করছে বাংলাদেশের ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল)।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে ইমদাদুল হক মিলনের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন ইউপিএলের প্রকাশক মহিউদ্দিন আহমেদ। শংকরের সাহিত্য বিষয়ে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আহমদ কবির। তিনি প্রবন্ধে শংকরের গল্প-উপন্যাসের বিষয়-বৈচিত্র্য নিয়ে আলোচনা করেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জিল্লুর রহমান সিদ্দিক, ব্যারিস্টার রফিকুল হকসহ দেশের অনেক বিশিষ্টজনের পাশাপাশি শংকরের বহু পাঠক।
শংকর তার বক্তব্যে বলেন, ‘১৯৫৫ সালে আমার প্রথম বই প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশে আমার আসার ইচ্ছে অনেক আগেই ছিল। আমি মনে করি এখানে আমার অনেক পাঠক রয়েছে। তবু ঢাকায় আসতে প্রথম বইয়ের পর আমার ৫৫ বছর লেগে গেল। আমার কোনো বই-ই এর আগে এভাবে উদ্বোধন হয়নি। বাংলাদেশেই আমার বইয়ের প্রথম এভাবে উদ্বোধন হলো। ’
শংকরের বক্তব্যের শেষে তার বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। এরপর শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। এ পর্বে লেখক শংকরকে তার লেখালেখি, জীবন-যাপন, ব্যক্তিগত চিন্তা-জগৎ এবং তার গল্প-উপন্যাসের বিষয়ে প্রশ্ন করেন তার ভক্ত পাঠকরা। শংকর একে একে পাঠকদের প্রত্যেকটি প্রশ্নের জবাব দেন, যার মধ্য দিয়ে উঠে আসে লেখক শংকরের জীবনের অনেক অজানা বিষয়। শংকর কলতায় ফিরবেন ২৪ অক্টোবর।
আইইউবিতে শংকরের বক্তৃতা
এর আগে ২০ অক্টোবর বুধবার বিকেলে ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি)-র স্থায়ী ক্যাম্পাস বসুন্ধরায় তার বিখ্যাত উপন্যাস ‘চৌরঙ্গী’ রচনার প্রোপটসহ লেখকজীবনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি আইইউবির আমন্ত্রণে ছয় দিনের এক সফরে ১৯ অক্টোবর মঙ্গলবার ঢাকায় আসেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে তার পরিচিতি তুলে ধরেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ও আধুনিক ভাষা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক রাজিয়া সুলতানা খান। আলোচনা অনুষ্ঠানে লেখক শংকরকে সম্মানসূচক ‘উত্তরীয়’ পরিয়ে দেন আইইউবির উপাচার্য অধ্যাপক বজলুল মোবিন চৌধুরী। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইইউবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ওমর রহমান। বক্তৃতার পর লেখক উপস্থিত দর্শক- শ্রোতাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এর আগে সকালে তিনি আইইউবিতে ‘একজন লেখকের সুখ-দুঃখ’ নিয়ে কর্মশালা পরিচালনা করেন। কর্মশালায় তিনি একজন লেখকের সুখ-দুঃখ এবং সাহিত্যে তার উপস্থাপনা বিষয়ে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, একজন লেখক জীবনমন্থনবিষ যত তীব্র পান করেন তত তার কথামালা জীবন ও পাঠক হৃদয়স্পর্শী হয়। তবে আত্মপ্রসাদ কোনও লেখককে স্পর্শ করলে তার বিষময় ফল ফলতে বাধ্য। আইইউবিতে তার সফরের সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও সাহিত্যিক ড. আকিমুন রহমান।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ২১৫০, অক্টোবর ২১, ২০১০