বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান কবি শামসুর রাহমানের ৮১তম জন্মবার্ষিকী উপলে বাংলা একাডেমী ২৪ অক্টোবর রোববার বিকেলে বাংলা একাডেমী প্রকাশিত ‘শামসুর রাহমান স্মারকগ্রন্থ’র প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করে। একাডেমীর সেমিনার কে জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরীর সভাপতিত্বে উৎসবে আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর ও অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ।
শামসুজ্জামান খান বলেন, শামসুর রাহমান আমাদের কালের এক প্রধান কবি-পুরুষ। তাঁর হাত ধরেই বাংলাদেশে আধুনিক কবিতা জনপ্রিয় হয়েছে। তাঁর কবিতায় আমাদের কালের আশা-নিরাশা, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা অমর বাণীরূপ লাভ করেছে। শামসুর রাহমানের ৮০তম জন্মবার্ষিকী উপলে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বাংলা একাডেমী ‘শামসুর রাহমান স্মারকগ্রন্থ’ প্রকাশ করেছে। স্মারকগ্রন্থে অধিকাংশ লেখকের লেখা নতুন এবং অধিকাংশ লেখকই তরুণ। এই গ্রন্থে চেষ্টা করা হয়েছে কবি শামসুর রাহমানকে নতুন লেখায় নতুনভাবে মূল্যায়ন করার।
অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, শামসুর রাহমান বাঙালির প্রধান কবি। তাঁর কাব্যে ‘রোমান্টিক বাস্তবতা’র চিত্রকল্প অঙ্কিত হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে শামসুর রাহমানের কবিতা সমান্তরালভাবে অগ্রসর হয়েছে। তিনি ঘটে-যাওয়া-ঘটনা অসামান্য ব্যঞ্জনায় তাঁর কবিতায় তুলে ধরেছেন।
অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর বলেন, শামসুর রাহমান তাঁর কবিতার মাধ্যমে সবাইকে স্পর্শ করতে পেরেছিলেন। শামসুর রাহমান যে একজন বড়ো মাপের কবি মুক্তিযুদ্ধকালে রচিত ‘বন্দী শিবির থেকে’ কবিতাসহ আরও অনেক কবিতায় তার প্রমাণ পাওয়া যায়। ঢাকায় যখন স্বৈরাচারী মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল ঠিক তখন শামসুর রাহমানের কবিতাগুলো ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। তাঁর মতো কবিতা তিরিশের কবিরা লেখেননি, আবার বর্তমান প্রজন্মের কবিরাও কবিতা লেখেন না। তাই শামসুর রাহমান সবার থেকে আলাদা। তিনি বলেন, স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের মাধ্যমে বাংলা একাডেমী একজন শ্রেষ্ঠ মানুষকে জনসমে তুলে ধরেছে, এটা নিঃসন্দেহে একটি মহৎ কাজ।
সভাপতির ভাষণে অধ্যাপক কবীর চৌধুরী বলেন, বিশ্বসাহিত্যকে স্বদেশের সাহিত্যের সঙ্গে এক করে উপস্থাপন করেছেন কবি শামসুর রাহমান। তিনি তাঁর কবিতায় পাশ্চাত্য ও আধুনিক ভাবনার সংমিশ্রণ ঘটিয়েছেন। শুধু কবিতা নয়, গদ্য রচনা করেও তিনি বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। তিনি আমাদেরকে শূন্য করেননি, বরং দিয়েছেন পূর্ণতা।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ২১৩০, অক্টোবর ২৪, ২০১০