সত্তর দশকের প্রথাবিরোধী কবি ও সাংবাদিক দাউদ হায়দার আর নেই। তিনি রোববার (২৭ এপ্রিল) বাংলাদেশ সময় ভোরে জার্মানির রাজধানী বার্লিনের একটি বৃদ্ধাশ্রমে পরলোকগমন করেন।
বার্লিনে কবির একজন সুহৃদ নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, অভিমানী কবির মরদেহ দাফন করা হবে না। এমনকি জার্মানি থেকে বাংলাদেশে পাঠানো হবে কি না সে ব্যাপারেও এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। কবির মরদেহ জার্মানির মেডিকেলে দান করা হতে পারে।
জানা গেছে, প্রথাবিরোধী কবি দাউদ হায়দার বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত কবি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৩ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে কবিতা লেখার জন্য তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ১৯৭৪ সালের ২০ মে কবিকে ভারতে নির্বাসনে পাঠানো হয়। নির্বাসনের আগে কবি দৈনিক সংবাদের সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ভারত থেকে কবি নব্বইয়ের দশকে জার্মানি চলে যান।
বার্লিনে বসবাসরত কবির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সুহৃদ জানান, গত বছর রাস্তায় পড়ে গিয়ে আঘাত পান নিঃসঙ্গ ও চিরকুমার এ কবি। এরপর থেকে তিনি বার্লিনের বয়স্ক নিবাসেই ছিলেন।
কবি দাউদ হায়দার ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একাধারে কবি, লেখক এবং সাংবাদিক। দাউদ হায়দারের ভাইদের মধ্যে প্রয়াত হয়েছেন নাট্যকার জিয়া হায়দার, কথাশিল্পী রশীদ হায়দার ও কবি মাকিদ হায়দার। অন্যদের মধ্যে রয়েছেন জাহিদ হায়দার, আবিদ হায়দার ও আরিফ হায়দার। সবাই সাহিত্য-সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত।
‘জন্মই আমার আজন্ম পাপ’- কবিতাগ্রন্থের জন্য খ্যাত দাউদ হায়দারের উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে- ‘জন্মই আমার আজন্ম পাপ’, ‘সম্পন্ন মানুষ নই’, ‘নারকীয় ভূবনের কবিতা’, ‘যে দেশে সবাই অন্ধ’, ‘ধূসর গোধূলি ধূলিময়’, ‘আমি ভালো আছি, তুমি?’
তার প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে আরও রয়েছে-‘নির্বাসিত’, ‘সংগস অব ডেস্পায়ার’, ‘এই শাওনে এই পরবাসে’, ‘বানিশম্যান্ট’, ‘আমি পুড়েছি জ্বালা ও আগুনে’, ‘এলোন ইন ডার্কনেস অ্যান্ড আদার পোয়েমস’, ‘হোল্ডিং অ্যান আফটারনুন অ্যান্ড আ লিথ্যাল ফায়ার আর্ম’, ‘অবসিডিয়ান’।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২৫
এইচএ/