আজ ২ জানুয়ারি কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমানের জন্মদিন। এই দিনে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার সবল সিংহপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৯১৭ সালে।
প্রয়াত হুমায়ুন আজাদ শওকত ওসমানকে বলতেন `অগ্রবর্তী আধুনিক মানুষ`। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর তিনি চলে আসেন পূর্ববঙ্গে। কলকাতায় থাকতেই পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন বেশ কিছু লেখা দিয়ে। যেমন_`বনি আদম`, `ওটেন সাহেবের বাংলো`, `তস্কর-লস্কর` ইত্যাদি। তাঁর বিখ্যাত সব সাহিত্য সৃষ্টির মধ্যে অন্যতম হলো_`জননী`, `ক্রীতদাসের হাসি`, `জাহান্নাম হইতে বিদায়` ইত্যাদি। তিনি স্বীকৃতিস্বরূপ একুশে পদক (১৯৮৩), বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬২), আদমজী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৬), পাকিস্তান সরকারের প্রেসিডেন্ট পুরস্কার (১৯৬৭) সহ এমন আরো অনেক পুরস্কার পান।
শওকত ওসমান নিজেকে মনে করতেন ঝাড়ুদার। সমাজের সব জঞ্জাল লেখনীর মাধ্যমে ঝেঁটিয়ে বিদায় করবেন- এ ব্রত থেকেই বলতেন তাঁর এই পরিচয়। যেমন করে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে কলমপেষার মজুর মনে করতেন। সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে আজীবন লড়াই করেছেন এই কথাসাহিত্যিক তাঁর লেখনী দিয়ে। দ্রোহী ব্যক্তিসত্তা ও লেখকসত্তায় সত্যিকার অর্থেই শওকত ওসমান অনন্য ব্যক্তিত্ব। আইয়ুবী সামরিক শাসন আমলে শাসক আর শাসিতের চিত্র সফলভাবে প্রতীকী গল্পে তুলে ধরেছেন `ক্রীতদাসের হাসি` উপন্যাসে! `জননী` উপন্যাস শওকত ওসমানের শক্তিশালী রচনার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। প্রখর সমাজ সচেতনতায় শ্লেষ-ব্যাঙ্গবিদ্রুপ আর রসবোধে জারিত করে তিনি গড়ে তোলেন তাঁর সাহিত্যকর্ম। তাই শওকত ওসমানের রচনা একই সাথে রসঘন ও দ্রোহী।
সব্যসাচী কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমান ১৪ মে, ১৯৯৮ সনে মৃত্যু বরণ করেন।
বাংলাদেশ সময় : ০১৩০ ঘণ্টা, ০২ জানুয়ারি ২০১২
এমজেএফ/ [email protected]