ক্ষতিস্বীকার
নারীপুরুষ, তোমাদের সঙ্গে বর্ধমান লোকালে
আলাপ করতে ইচ্ছে করে
নিজের সিট ক্ষতিস্বীকার ক’রে পাশাপাশি বসিয়ে দিতে
সেই সূত্রে যদি গল্পে গল্পে বাকিটা পথ, আর
ঠিকানা-বিনিময়, আর ‘একদিন চলে আসুন না’
তবে কোনো দুর্দান্ত দুপুরবেলা তোমাদের সূচীভেদ্য
হাসির ভেতরে ঢুকে ফাল হয়ে বেরিয়ে আসতে
তোমাদের দুটি ভিন্ন ভিন্ন উৎপাদকে বিশ্লেষণ করে দিতে
আর ইচ্ছে করে না
বরং হাত গুটিয়ে নিতে ইচ্ছে হয়
কিউবা থেকে, কন্দহর থেকে
হাত চারভাঁজ করে খামে ভরে পাঠাতে, যে খাম বলবে—
নারীপুরুষ, তোমাদের মাঝখানে ‘রিপু’ শব্দটি
শুয়ে আছে, খেয়াল করেছ!
তাকে জাগাও, তাকে দম্পতির ঠিকানা বলে দাও
শিরদাঁড়ার গান
বাড়িটি রেখেছে মাথা আশ্বিনের বুকে
বিস্ফোরণে নাড়িভুঁড়ি মেঘ ছিঁড়ে গিয়ে
ভেতরে সে-আকাশের হাড় দেখা যায়
শবাগ্নির মতো রোদ, চণ্ডাল রোদ্দুর দেখে
নারকোলপাতা ঝুঁকে ঘরের কপাল ঢেকে রাখে
এমন ভাবুক বাড়ি— নিঃঝুম লাটাই হয়ে মাথার ওপর
মেলে দেয় আকাশঘুড়িকে, আর
বাড়ির মস্তিষ্ক জুড়ে ফোঁটা ফোঁটা দিনবিন্দু রাত্রিবিন্দু পড়ে
ঘরের ঘনিষ্ঠ কাছে লেগে থাকা পেঁপেগাছ
গা-ভরা সবুজ স্তনে সমস্ত মেয়ের চেয়ে বেশি অহংকারী
এমন রোমশ দুধ চোখে গেলে— যে কোনও সাধক—
তুমি অন্ধ হয়ে যাবে
বাড়ি অন্ধ বোবা হবে রাত বারোটায়
তারও অতিরিক্ত পরে চাঁদ থেকে টর্চ-ধরা হাত নেমে
আলো ফেলেছে বাড়ির ফুঁসফুঁসে
উঁচু মুখ, ছ’আঙুলে নিজের শিরদাঁড়া বাজিয়ে
বাড়িটি গাইছে তার গান
শ্মশানকমিটি
জলের ট্যাঙ্কের নিচে এ-পাড়ার সমস্ত খুন হয়।
তার পাশে মিষ্টান্নভাণ্ডার, পাড়ার সব বিয়ের মিঠাই
এই দোকান থেকে
তার গায়ে পার্টি অফিস, তরকারি-হাটের তোলা
এখানে বসে ভাগ-বাঁটোয়ারা
তার পেছনে ওষুধ-দোকান, ছোট ও বাঁকা ডাক্তার বলছে:
নতুন বৌমার চরিত্রে দোষ আছে
তার ওপরে তিনতলা বাড়ি, সে-বাড়ির ছেলে
বৌকে নাইট শো সিনেমা দেখাবে বলে
তুলে আনছে জলের ট্যাঙ্কের ঠিক নিচে
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৪
শিল্প-সাহিত্য
তিনটি কবিতা | চন্দন ভট্টাচার্য
কবিতা / শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।