নাচো প্রেতাত্মারা
নাগরিক ঝোঁপেঝাড়ে দারুণ অন্ধকার লেপ্টে আছে
এখনই প্রশস্ত সময়; নাচো প্রেতাত্মারা
নগ্ন নৃত্যে ছড়িয়ে পড়ো ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল জুড়ে
আজাজিল শয়তান যখন ঋষিদের কানে
কুমন্ত্রণায় ব্যস্ত, তখন তোমরা ধ্বংসের শিঙায় রাখো
মন্ত্রসিদ্ধ ঠোঁট, ধসে যাক সমূহ সুউচ্চ পাহাড়
একে একে ধসে পড়ুক মন্দির, মসজিদ, গির্জা
আর আত্মার শুদ্ধতার পবিত্র অহম
হাতে নিয়ে সেই প্রাচীন অনল
যারা আজো পুড়িয়ে খায় মোহ-মাতাল হরিণের হাড়
তাদের কর্ণকুহরে জমুক জিগীষার বিদগ্ধ কুহক
প্রবৃত্তির অবাধ মুক্ততায় কদর্য পৃথ্বির কাদায়
পা রাখো আত্মার কারাগারে বন্দি নীল অভীপ্সারা
নিহত সুন্দরের দেহ ঝুলে থাক কাঁটাতারে
অনন্ত অন্ধকারের মঞ্চ গড়ে তোমরা নেচে যাও
নির্ভয়ে, হে রক্ত-পিপাসু অতৃপ্ত আত্মারা..
জলের ভেতর অন্য এক আগুন
ঘুমিয়েই তো ছিলাম। কোনো এক দুর্বোধ্য স্বপ্ন-ইঙ্গিতে জানালে
এখন জেগে থাকার দুর্বিনীত কাল
চিরকাল জলকে জল বলেই জেনে এসেছি
আগুনকে কখনো ডাকিনি অন্য নামে
তুমি বললে, জলের ভেতরও অন্য এক আগুন থাকে
আর আগুনের বুকে নাচে ভিন্নতর জল
প্রণয়ের সমস্ত খনন শেষে উঠে আসে বিরল গরল
একটি মুদ্রার এক পাশে প্রেম, অন্য পৃষ্ঠায় ঘৃণা লিখে বললে—
কোনটি নেবে হে মানব-সন্তান?
ইশারায় প্রেমকেই চিহ্নিত করি
তুমি টস দিয়ে বললে— তবে ঘৃণাই তোমার আজন্ম নিয়তি...
আহত ঈগল
কত রক্ত-নদী পেরোতে হয় তোমাকে পেতে
গোলাপের কতটা কাঁটায় বিদ্ধ হলে
তবে তুমি সাড়া দাও?
হে উড়ালপ্রিয় মীন মেয়ে
কর্তিত ডানার স্পর্ধা নিয়ে আমি আজ আহত ঈগল
ক্ষরিত রক্তের নীলে নুয়ে পড়ি মৃত্তিকায়
তবু বুকে থাকে আকাশ ছোঁয়ার অসূর্যম্পর্শী অভিলাষ
কত মেঘ, চূর্ণ রোদ গলে পড়ে শরীরে আমার
ঈর্ষাপ্রবণ পাখিদের শিসে ঝরে পড়ে নাগিনীর বিষ
কোনোদিন অবেলার একফোঁটা বৃষ্টি হয়ে হে সুদূরিকা
আসবে কি নেমে বর্ষণরিক্ত রক্তাক্ত হৃদয়ে আমার?
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৪
শিল্প-সাহিত্য
তিনটি কবিতা | আহমেদ বাসার
কবিতা / শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।