কোনো কোনো মৃত্যু আমাদের মর্মমূলকে প্রবলভাবে ঝাঁকুনি দিয়ে যায়। আমরা অসহায় বোধ করি।
‘হৃদয়ে আমার সাগর দোলার ছন্দ চাই
অশুভের সাথে আপোসবিহীন দ্বন্দ্ব চাই। ’
একজন কবি সব সময় তাঁর নিজের কথা বলেন। কিন্তু প্রকৃত বড়মাপের কবির ব্যক্তিগত অনুভূতি সকল মানুষের হৃদয়ের আর্তিকে ধারণ করে। তাই কবির লেখার সঙ্গে সকল মানুষ আত্মীয়তা বোধ করে। এ সামর্থ্য যে কবির যত বেশি, তিনি তত বড় কবি। শামসুর রাহমানের কবিতায় আমাদের ব্যক্তিগত আনন্দ ও বেদনা অত্যন্ত সার্থকভাবে রূপায়িত হয়েছে বলেই তিনি সকল শুভচেতনাসম্পন্ন মানুষের আপনজন হয়ে উঠেছেন। শামসুর রাহমানের কবিতা আমাদের জাতিগত ইতিহাস হয়ে উঠেছে।
আমাদের জাতীয় জীবনে যত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে, শামসুর রাহমানের কবিতায় তা ফুটে উঠেছে অনাবিলভাবে। আমাদের ভাষা আন্দোলন, আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলন, আমাদের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের ইতিহাস শামসুর রাহমানের কবিতার বিষয় হয়ে উঠেছে। ১৯৭১ সালে দেশ রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন করেছে, কিন্তু মানুষের স্বপ্ন পুরোপুরি বাস্তবায়ত হয়নি। এ দেশ নানা রকম রাজনৈতিক জটিলতায় ঘুরপাক খেয়েছে। নেমে এসেছে স্বৈরাচারী শাসন। প্রতিবাদ করেছে নূর হোসেনের মতো অনেক মানুষ। সেই নূর হোসেনকে নিয়ে তিনি কবিতা লিখেছেন।
স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় তিনি অবরুদ্ধ ছিলেন বাংলাদেশে। পাকিস্তানি শাসকদের অত্যাচার, আমাদের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে তিনি তখন তাঁর কবিতায় রূপদান করেছেন। সেই সব কবিতা মুক্তিযুদ্ধে আমদের অনুপ্রাণিত করেছে। তিনি লিখেছেন,
‘স্বাধীনতা, তোমার জন্যে
হাড্ডিসার এক অনাথ কিশোরী শূন্য থালা হাতে
ব’সে আছে পথের ধারে।
...
পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে জ্বলন্ত
ঘোষণার ধ্বনি-প্রতিধ্বনি তুলে,
নতুন নিশান উড়িয়ে, দামামা বাজিয়ে দিগ্বিদিক
এই বাংলায়
তোমাকে আসতেই হবে, হে স্বাধীনতা। ’
আমরা জানি, শামসুর রাহমান কেবল পঞ্চাশের দশকের বাংলাদেশের প্রধান কবি নন, বাংলা ভাষারই প্রধান কবি। ‘প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে’ তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ। এখানে আমরা তাঁকে বিবিক্তবোধে আলোড়িত হতে দেখি। বহমান জীবন-বাস্তবতার সঙ্গে যেন তিনি কিছুতেই নিজেকে মেলাতে পারছেন না। বোঝা যায়, এ অনুভূতি নিজের কাছেই তাঁকে অপরাধী, অন্তত অনুতপ্ত করে তুলেছে :
‘মনে হয় আমি যেন সেই লোকশ্রুত ল্যাজারস
তিন দিন ছিলাম কবরে, মৃত-পুনর্জীবনের
মায়াস্পর্শে আবার এসেছি ফিরে পৃথিবীর রোদে।
... কিন্তু তবু
পারি না মেলাতে আপনাকে প্রমোদের মোহময়
বিচিত্র বিকট স্বর্গে। ’
সমস্ত প্রতিপার্শ্বই তাঁর কাছে প্রতিকূল হিসেবে বিবেচিত হয়। উপর্যুপরি নৈঃসঙ্গ্যের যন্ত্রণায় কবি যেন যাপন করেন এক দুঃস্বপ্নময় জীবন। মৃত্যু ছাড়া বিকল্প কোনো নিয়তিই যেন নেই। সম্ভবত গণবিচ্ছিন্নতার কারণেই সব সাংগীতিকতা হারিয়ে ফেলেছে জীবনবেদ, সমস্ত সুরেই তিনি শুনতে পান মৃত্যুর আহ্বান:
‘মাংস ছিঁড়ে নিতে আসে—আমি তাকে পারি না ফেরাতে।
আর চেয়ে দেখি মৃত্তিকায় করোটিতে জ্যোৎস্না জ্বলে
বিষণ্ন স্মৃতির মতো, দ্বিতীয় মৃত্যুর ধ্বনি ভাসে। ’
কিন্তু তাঁর প্রাথমিক পর্যায়ের কাব্যসম্ভার বিশুদ্ধ রোমান্টিকতাস্নাত হলেও অনতিবিলম্বে তাঁর কবিতাবিশ্বের প্রধান উপজীব্য হয়ে ওঠে সময়, সমাজ ও মনুষ্যত্ব। মূলত নাগরিক মধ্যবিত্তের জীবনের আবেগ ও চিন্তন, তাদের জীবনযাপনের অনুপুঙ্খ অচিন্ত্যপূর্ব এক মহিমায় রূপায়িত হয়েছে তাঁর কবিতায়। কিন্তু কেবল ব্যক্তিকেন্দ্রিক আনন্দ-বিষাদ নয়, সমাজবাস্তবতার মর্মমূলে নিহিত যে রাজনৈতিক বাস্তবতা, তার বিস্তারও অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে তাঁর কবিতায়, আমাদের তৎকালীন রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনার কারণে। ষাটের দশকের আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক বাস্তবতার চালচিত্রে পরিণত হয় শামসুর রাহমানের কবিতাপুঞ্জ। ২০০৬ সালে তাঁর মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তাঁর কবিতা—স্পষ্টভাবে বা রূপকের অন্তরালে—হয়ে উঠেছে আমাদের সামাজিক ইতিহাসের নান্দনিক দলিল। কিন্তু ব্যক্তির অনিকেত-মনোভঙ্গি, তাঁর নৈঃসঙ্গ্য, বিষণ্নতা ও বিপন্নতার বোধও মিছিল বা জনসভার পাশাপাশি জায়গা করে নিয়েছে কবিতার অন্তর্লোকে। ‘রুপালি স্নান’ কবিতাটির কথা মনে পড়ে। ব্যক্তিক রোমান্টিকতায় সমাচ্ছন্ন হয়েই তিনি লিখেছিলেন, ‘যদিও আমার দরজার কোণে অনেক বেনামি/প্রেত ঠোঁট চাটে সন্ধ্যায়, তবু শান্ত রুপালি স্বর্গ-শিশিরে স্নান করি আমি। ’ কিন্তু কবিকেও সামাজিক জীবন স্বীকার করতে হয়। পরিপার্শ্বকে ঠাহর করে দেখতে হয়। চারপাশের মানুষজনের জীবনের অন্ধকার ও অন্তরঙ্গতার আলো আবিষ্কার করতে হয়। শিশির ছেড়ে অগ্নিসমুদ্দুরে ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়। তাঁকে অনুধাবন করতে হয়, ‘সঙ্গীত সাধক, কবি, চিত্রকর অথবা ভাস্কর, কাউকেই/খুব বেশি ভালো থাকতে নেই। /খুব বেশি ভালো থাকা মানে/মোহের নাছোড় লতাগুল্মসমেত স্রোতের টানে/সেখানেই অনিবার্য খর ভেসে যাওয়া,/যেখানে কস্মিনকালে বয় না শিল্পের জল-হাওয়া। ’ (‘খুব বেশি ভালো থাকতে নেই’)। বা, কখনো না-দেখা নীল দূর আকাশের/মিহি বাতাসের/সুন্দর পাখির মতো আমার আশায়/হৃদয়ের নিভৃত ভাষায়/দুঃখ তার লেখে নাম। (‘দুঃখ’)।
কাব্য চৈতন্যগত এই স্তরান্তর ঘটে গিয়েছিল স্বল্পসময়ের ব্যবধানেই—সময়, সমাজ আর মনুষ্যত্বের দায়বদ্ধতার কারণে। বিবিক্ত ব্যক্তির মধ্যেও সামাজিক লীলা মুদ্রিত হয়ে যায়। কিন্তু তা বিচূর্ণিত বলে অসম্পূর্ণ হতে বাধ্য। গণমানুষের পারস্পরিক বিনিময়ের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়াই সমাজের স্বাভাবিকতা, কিছু অগ্রহণযোগ্য উপাদান সত্ত্বেও তাকে মেনে নিলেই তাদের আবেগের মৌল প্রবণতাকে নিজের করে নেওয়া যায়, বা তা নিজের হয়ে ওঠে। শামসুর রাহমানের ক্ষেত্রে যা প্রাকৃত শোভনতায় সম্ভব হয়ে উঠেছিল। কিন্তু এর ফলটা হয়েছিল প্রতিবাদে প্রোজ্জ্বল—বারুদগন্ধময়। সাতচল্লিশ-পরবর্তী সামাজিক ইতিহাসের প্রামাণ্য দলিল হয়ে উঠেছে তাঁর কবিতা। তার মানে এই নয় যে ব্যক্তিক রোমান্টিকতা তাঁকে আর আকর্ষণ করতে পারেনি। তা কোনো কবির ক্ষেত্রেই সত্য হয়ে উঠতে পারে না। শামসুর রাহমানের ক্ষেত্রেও নয়। তাও আমৃত্যু ফল্গুধারার মতো বয়ে চলেছে। তারও নানা বাঁক-বিবর্তনের সাক্ষ্য হয়ে আছে শামসুর রাহমানের কবিতা : ‘আজো আছে চিরকস্তুরীটুকু লুকোনো মনে :/সেই সৌরভে উন্মন তুমি, তখন জানি/দেয়ালে তোমার কাঠকয়লার আঁচড় পড়ে॥ (‘আত্মজীবনীর খসড়া’)।
দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে গড়া পাকিস্তানি নব্য উপনিবেশের প্রথম আক্রমণটা এসেছিল আমাদের ভাষার ওপর। শামসুর রাহমান লিখলেন ‘বর্ণমালা, আমার দুঃখিনী বর্ণমালা’। যে বর্ণমালা ‘নক্ষত্রপুঞ্জের মতো জ্বলজ্বলে পতাকা উড়িয়ে’ কবির সত্তায় মিশে থাকে, তার করুণ পরিণতি তাঁকে বিচলিত ও অস্থির করে তোলে, ‘এখন তোমাকে নিয়ে খেঙরার নোংরামি/এখন তোমাকে ঘিরে খিস্তি-খেউড়ের পৌষ মাস! তোমার মুখের দিকে আর যায় না তাকানো,/বর্ণমালা, আমার দুঃখিনী বর্ণমালা। ’ রাষ্ট্রনৈতিক নিপীড়ন, অর্থনৈতিক শোষণ, সামাজিক ভারসাম্যহীনতায় কবির কাছে জীবনের অর্থময়তারই বদল ঘটে গেল : ‘জীবন মানেই/তালে তালে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে চলা, নিশান ওড়ানো,/জীবন মানেই/অন্যায়ের প্রতিবাদে শূন্যে মুঠি তোলা...’ (ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯)।
জাতীয় জীবনের যাবতীয় ব্যর্থতার কলুষকে আড়াল করে দিল ‘আসাদের শার্ট’ : ‘আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা/সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক; আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা। ’
আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অবরুদ্ধ ছিলেন শামসুর রাহমান স্বদেশেই। দেশ তখন বন্দীশিবির। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সবচেয়ে সফল কবিতাগুলো লেখা হলো তাঁর মাধ্যমেই। কেবল ‘স্বাধীনতা তুমি’ বা ‘তুমি আসবে বলে হে স্বাধীনতা’ বা ‘গেরিলা’ নয়, ‘বন্দী শিবির’-এর প্রতিটি কবিতায় মুক্তিযুদ্ধ বহুমাত্রিক কৌণিকতায় দৃষ্ট ও বিশ্লেষিত হয়েছে। যুদ্ধের ধাতব ঝংকারের মধ্যে, রক্তবন্যার মধ্যে, মা-বোনের সম্ভ্রম-হারানো আর্তনাদের মধ্যে এমন একটি কাব্য রচিত হওয়ার আর কোনো নজির কোথাও নেই। আমাদের সমাজ-ইতিহাসের নানা প্রসঙ্গ ও অনুষঙ্গকে তিনি উপমিত করেছেন স্বাধীনতার সঙ্গে, নজরুল-রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে সেখানে ঠাঁই করে নিয়েছে গ্রামীণ মানুষ ও প্রকৃতি। ‘নাগরিক কবি’ হিসেবে অভিহিত কবির সৃষ্টিসম্ভারে প্রকৃতি ও মানুষের সমন্বিত যে নিবিড় চিত্র আঁকা হয়েছে, নির্মমতার বিপরীতে সেই ঐতিহ্যময় নির্মলতা আমাদের চিত্তকে স্পর্শই কেবল করে না, অদ্ভুত এক আবেশে মোহ্যমানও করে তোলে। নাগরিক জীবনের প্রয়োজনীয়তাকে স্বীকার করে নিয়েও আমাদের আবহমান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সমৃদ্ধ ও স্বকীয় মর্যাদায়ও অভিষিক্ত হয় :
‘স্বাধীনতা তুমি
ফসলের মাঠে কৃষকের হাসি।
স্বাধীনতা তুমি
রোদেলা দুপুরে মধ্যপুকুরে গ্রাম্য মেয়ের অবাধ সাঁতার।
স্বাধীনতা তুমি
মজুর যুবার রোদে ঝলসিত দক্ষ বাহুর গ্রন্থিল পেশী।
(স্বাধীনতা তুমি : ‘বন্দী শিবির থেকে’) (১৯৭২)
মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের জীবন ও তার পরিপার্শ্বের অবস্থা তখন আমূল বদলে গিয়েছিল। চেনা স্বদেশকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না কোথাও। পথে-প্রান্তরে রিক্ততা আর হাহাকারের চিহ্ন দুমড়েমুচড়ে দিচ্ছিল মানুষের মন:
‘গ্রাম্য পথে পদচিহ্ন নেই। গোঠে গোরু
নেই কোনো, রাখাল উধাও, রুক্ষ সরু
আল খাঁ খাঁ, পথপার্শ্বে বৃক্ষেরা নির্বাক
নগ্ন রৌদ্র চতুর্দিকে, স্পন্দমান কাক, শুধু কাক।
আর কোথায় হারিয়ে গেছে এদেশের স্বজনেরা?
বন্ধুরা অনেকে
দেশান্তরী, বস্তুত প্রত্যহ
হচ্ছে বাস্তুত্যাগী
সন্ত্রাসতাড়িত
হাজার হাজার লোক, এমনকি অসংখ্য কৃষক
আদি ভিটা জমিজমা ছেড়ে
খোঁজে ঠাঁই যেমন তেমন ভিন দেশে। ’
এ অবস্থার অবসান ঘটেছিল। এ দেশের মানুষ কী অপরিমেয় ত্যাগের বিনিময়ে অর্জন করেছে এ দেশের স্বাধীনতা তা আজ বলা বাহুল্য। কিন্তু এ কথাও ঠিক, স্বাধীনতা মানুষের মনে যে মায়া-অঞ্জন মেখে দিয়েছিল, সেই বাস্তবতার অনেকটাই আজ সুদূরপরাহত। শামসুর রাহমানের কবিতায় তারও অজস্র চিহ্ন মুদ্রিত হয়ে আছে:
‘কী আমরা হারিয়েছিলাম সেই সন্ত্রস্ত বেলায়
নিজ বাসভূমে?
কী আমরা হারিয়েছিলাম?
নৌকোর গলুইয়ের শান্তি, দোয়েলের সুরেলা দুলুনি,
ফসলের মাঠের সম্ভ্রম,
শহুরে পথের পবিত্রতা,
আর গাঙচিলের সৌন্দর্য’
(রক্তসেচ : ‘ফিরিয়ে নাও ঘাতক কাঁটা’)
এমনকি ‘বন্দী শিবির থেকে’ কাব্যেও তিনি দেশবাসীর আত্মত্যাগের যে কার্যকারণ নির্ণয় করেছিলেন, তার মধ্যেও এ সম্ভাব্য বেদনাবোধ সংগুপ্ত হয়েছিল:
‘যাকে ভালোবাসি সে যেন পুকরঘাটে ঘড়া রোজ
নিঃশঙ্ক ভাসাতে পারে, যেন এই দুরন্ত ফিরোজ,
আমার সোদর, যেতে পারে হাটে হাওয়ার হাওয়া,
বাজান টানতে পারে হুঁকো খুব নিশ্চিন্তে দাওয়ায়,
তাই মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও এই এঁদো গণ্ডগ্রামে
ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম কী দুর্বার সশন্ত্র সংগ্রামে। ’
(গ্রামীণ : ‘বন্দী শিবির থেকে’)
কবিমাত্রই ব্যক্তিগত রোমান্টিকতায় আক্রান্ত। এই ধারাটি শামসুর রাহমানের চৈতন্যে আমৃত্যু সংলগ্ন হয়ে ছিল, কিন্তু একটি পর্যায় থেকে তা আর প্রাধান্য বিস্তার করতে পারেনি। আমরা লক্ষ করি, সমষ্টিচেতনাই শেষ পর্যন্ত শামসুর রাহমানের কবিতার প্রাণপঙ্ক। তিনি আমাদের ব্যক্তিজীবনের পাশাপাশি সমষ্টিগত জীবনেও সাগর দোলার ছন্দ সঞ্চারিত করে দিয়েছেন। আর এ গুণেই তিনি আমাদের মন ও প্রাণ দখল করে আছেন। থাকবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৪