ভাষাতরু
পাণ্ডববর্জিত সেই গ্রামে ঢুকতেই অকৃত্রিম নারীভাষা শুনি
যে রকম বলেছেন সুকুমার সেন—
জোরালো প্রস্বর, সমাসের ছড়াছড়ি
জনান্তিকে ইতর গালির সমাহার
এক তরুণী বধূকে বয়স্কা রমণী ‘নাঙ-সোহাগী’ বলতেই
প্রত্যুত্তরে শোনা গেল— ‘ মর্ লো ভাতারখাগী, বেবুশ্যে নিলাজ। ’
চুলোচুলি শুরু হতে আমরাও সরে পড়ি , নিরাপদে
তবু যেন মনে হলো , ভাষাতরু এখানে সরস
জলাশয়ে যতো পাঁক তার চেয়ে বেশি পদ্ম ফুটে আছে
এহন আমারে দেইখা
এহন আমারে দেইখা দরোজা আইজাও
আগে তো এমুন ছিলা না, কৈতর!
সামনে পইড়া গ্যালে ভেচকির লগে
ঠ্যাস-মারা কথা
গালে ঠোনা দিয়া আর করো না আদর
ফলনা দফনার লগে মিঠা মিঠা বুলি
আচুক্কা ছুরির পাড় ভাঁজ পাই দিলের ভিতর
এহন ত্যান্দর কও, আগে ভাবছিলা কিরিষ্ণ ঠাউর
কাইঠার মতো রাইতে পইড়া থাকি বিছানায়
দিয়াবাতি জ্বালি, তামুকের ধোঁয়া ওড়ে
আসমানে নীল তারা জ্বলে
পাহাড়ের কাছে
পাহাড়ের কাছে যেতে সম্মিলিত কণ্ঠস্বর শোনা গেলো, সাপ-ধরা মন্ত্রের মতোন।
গাইড জানালো— গুহার ভেতরে আছে অধ্যাপক, পুরোহিত, বিজ্ঞানী ও ব্যবসায়ী
চিকিৎসক, ব্যবহারজীবী— শুধু কবিদের প্রবেশ নিষেধ
তারা এক মৃত মানুষের গুণগানে রত— ভোগী শরীরের মতো চিন্তা ও দর্শন
অনেক আগেই মরে গেছে যার— হিংসা আর ক্ষোভে ভারী হয়ে উঠেছিল
ধোঁয়া-ভরা সীমিত বাতাস
ভেতরে ঢুকিনি, বাইরে তখন বেশুমার প্রজাপতি, গাছে ধরে আছে ফল
মেঘের আকার ভেঙে জায়মান অচেনা চেহারা
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৪।