ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

সোয়াজিল্যান্ডে ভ্রমণ

স্টোন কটেজ (২) | মঈনুস সুলতান

ভ্রমণ / শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০১৫
স্টোন কটেজ (২) | মঈনুস সুলতান

প্রথম কিস্তির লিংক

ইয়োরগান ক্যাম্পফায়ারে পুরানো পত্রিকায় ম্যাচকাঠি ঘষে আগুন জ্বালানোর উদ্যোগ নেয়। মি. ককোসোর গাছের ডালে ডালে কয়েকটি প্যারাফিন তেলের লণ্ঠন ঝুলিয়ে দিলে মৃদু আলোয় জায়গাটি রহস্যময় হয়ে ওঠে।



ট্রেলারে একটি ফ্যামিলি সাইজ টেন্ট ছাড়াও পাওয়া যায় কার্লার জন্য শিশুতোষ একটি তাঁবু; এবং জিনিসপত্র রাখা, রান্নাবান্না এবং ডাইনিংরুম হিসাবে ব্যবহার করার জন্য আরেকটি মাঝারি মাপের তাঁবু। খাবারের তাঁবুটির দেয়াল সিল্কের নেটে জালি জালি। প্রচুর আলোবাতাস ঢুকে বলে তা আমার পছন্দ হয়। কিন্তু শুকা নদীর তীরে তা খাটাতে গিয়ে দড়িদড়ায় আমি তালগোল পাকিয়ে ফেলি। একটু পর ফ্লাশলাইট নিয়ে আমার উদ্ধারে ব্রিজিত এগিয়ে আসে। সে হাতে করে নিয়ে এসেছে উইনচেস্টার রাইফেলটি। তা ডলারাইট রকের বোল্ডালের উপর রেখে ফ্লাশলাইট দেখিয়ে বলে, ‘আমি তাঁবু খাটিয়ে দিচ্ছি, তুমি ততক্ষণে এ আলোতে নল সলতে দিয়ে ক্লিন করে তাতে টোটা ভরে ফেলো তো। আমি বিছানার পাশে লোডেড রাইফেল রেডি রেখে ঘুমাতে পছন্দ করি। দিস ইজ বুশক্যাম্প, যতই ইলেকট্রিক তার দিয়ে ঘেরা হোক, রাতের বেলা বন্যজন্তুর আক্রমণের কথা ভেবে প্রস্তুত হয়ে ঘুমাতে হয়। ’ এ ধরনের কাজ আমি ইহজন্মে কখনও করিনি, তাই ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকি রাইফেলের দিকে। বিষয়টি লক্ষ করে তাঁবুর দড়িদড়া রেখে ব্রিজিত ফিক করে হেসে কাছে এসে আমার চুল মুঠি করে বলে, ‘ইউ আর অ্যা ট্যোটাল স্টুপিড, কিভাবে বন্দুক পরিষ্কার করতে হয়, এ ঘোড়ার ডিমও জানো না, আবার এসেছো আফ্রিকান জঙ্গলে বুশক্যাম্পে রাত কাটাতে। অ্যা ট্যোটাল.. ট্যোটাল স্টুপিড। ’ না, চুলে সে ঠিক বিলি কাটে না, তবে আঙ্গুল দিয়ে আমার কপালে হিজিবিজি কী যেন লিখে। ভাষাটি আমি ঠিক ধরতে পারি না, তবে অনুমান করি আমাকে তার বলার কিছু একটা আছে। মাথায় এ ভাবনা আসতেই আমার মেরুদণ্ড দিয়ে শিহরণ খেলে যায়।

এদের ট্রেলারে ভাঁজ করে রাখা যায় এরকমের কিছু ফার্নিচারও আছে। ইয়োরগান ক্যাম্পফায়ারের পাশে ক্যানভাসের চেয়ার পেতে বসলে ব্রিজিত খুব আহ্লাদী ভঙ্গিতে তার কোলে বসে। তারপর সে পিছলে দু পায়ের ফাঁক গলে চেয়ারে পিঠ ঠেকিয়ে চোখ মুদে বসলে ইয়োরগান তার খোলা কাঁধ ম্যাসেজ করে দেয়। তারা কনইয়াগি জিন পান করতে করতে দৈহিক অন্তরঙ্গতায় ক্রমাগত নিবিড় হয়ে ওঠে। এ জার্মান যুগল রাতের বেলা আহারাদির বিষয় সম্পূর্ণ ভুলে গেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, খাওয়া দাওয়ার চেয়েও শরীরী শৃঙ্গার তাদের কাছে অধিক কাম্য। আমি বাঙালি, অনাহারে থাকা আমার জন্য আত্মহননের চেয়েও কঠিন। কিছুদিন ধরে আমি স্বপাকে খাচ্ছি বলে আমার ব্যাগে খাবারদাবারের খানিকটা সরবরাহ আছে। তো আমি হাড়িতে চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজের সাথে অলিভ ওয়েল, কারি পাউডার ও গরম মশল্লা দিয়ে খিঁচুড়ি রান্না করি। দুজনে তা উৎসাহের সাথে খেয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে যেন উল্কা কিংবা নক্ষত্র খোঁজে। ব্রিজিত কনিইয়াগি জিন কুলকুচা করে আগুনের দিকে ছুড়ে দিলে উস্কে ওঠে নীল শিখা। আর ঠিক তখন সাসেজ বৃক্ষের ঝুপসি ডালপালার ভেতর দিয়ে কামানের গোলার মত বেরিয়ে আসে লালচে রঙের চাঁদ।



ব্রিজিত ইয়োরগানের গলা জড়িয়ে ধরে আমাকে দেখিয়ে বলে, ‘হানি, নাউ শো হিম ইউ লাভ মি সিরিয়াসলি। ডু সামথিং স্ট্রেঞ্জ এন্ড টেরিবোল। ’ ইয়োরগান চেয়ার ছেড়ে আগুনের কুণ্ডের কাছে এসে সত্যিই একটি স্ট্রেঞ্জ আচরণ করে। সে পোড়ামোড়া লাকড়ি থেকে এক টুকরা জলন্ত অঙ্গার ভেঙ্গে নিয়ে তা রাখে তার হাতের তালুতে। ‘দিস ইজ ট্রুলি টেরিবোল!’ বলে ব্রিজিত খিলখিলিয়ে উঠলে ইয়োরগান এলসেশিয়ান কুত্তার মত মৃদু মৃদু হাঁপায়। তার হাতের তালু পুড়ে যাচ্ছে কিন্তু সে তা ঝেড়ে ফেলে দেয় না। ব্রিজিত এবার তার হাতে ঝটকা মেরে অঙ্গার ফেলে দিয়ে ‘দিস ইজ এনাফ হানি’—বলে তাকে টেনে নিয়ে যায় স্টোন কটেজে। নদীর ওপারে কয়েকটি হায়েনা রক্তাক্ত চাঁদের দিকে তাকিয়ে হেসে ওঠে খিকখিকিয়ে। আর আমি বুনো জোৎস্নায় ক্যাম্পফায়ারের পাশে বসে ভাবি—স্রেফ কপালগুণে ব্রিজিতের প্রেমিক হইনি। সে সম্ভবত তার পুরুষকে এখন মশারির ভেতর শুইয়ে হাতের তালুতে মলম মাখিয়ে দিতে দিতে সহমরণে পুড়ে মরার প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিচ্ছে।

বেশ খানিকক্ষণ একটানা গতকালকের ঘটনা লিখে আমি একটু ব্রেক নেই। ঠিক তখনই ওয়াকিটকিতে ক্রেকলিং সাউন্ড হয়। আমি সতর্ক হয়ে উঠে দাঁড়াই। ইয়োরগান ও ব্রিজিত এখনও ফিরে আসেনি। কার্লার দেখভালের দায়িত্ব আমার ওপর।   ঘুম ভেঙ্গে কেঁদে উঠলে খেলনা গিটার বাজিয়ে শিশুটিকে এন্টারটেইন করতে হবে আমাকে। কিন্তু না, মেয়েটি কেঁদে ওঠে না। সে স্বপ্নের ঘোরে জার্মান ভাষায় দু তিনটি শব্দ উচ্চারণ করে সশব্দে হেসে ওঠে ঘুমিয়ে পড়ে পুনরায়।

আমি আবার ফিরে যাই নোটবুকে জার্নাল লেখায়। মনযোগ দেই আজ সকালের ঘটনাবলীর দিকে। ব্র্যাকফার্স্টের বন্দোবস্ত করেন মি. ককোসোর। তিনি আগুন জ্বালিয়ে হাড়িতে কর্ণ পরিজ রেঁধে তৈরি করেন তপ্ত কফি। মি. ককোসোর উঠে যেতেই কী কারণে জানি ঘোরতর বসচা বাধে ব্রিজিত ও ইয়োরগানের মধ্যে। তর্কাতর্কি করতে গিয়ে ক্যাম্পফায়ার ছেড়ে দুজনে উঠে কার্লাকে নিয়ে চলে যায় স্টোন কটেজে। ওখানে বিষয়টি হাতাহাতিতে গড়ায়। এসব দেখার আমার কোনও আগ্রহ না থাকলেও স্টোন কটেজে দেয়াল না থাকার ফলে তাদের পক্ষে পারিবারিকভাবে আব্রু রক্ষা করে সংঘাত চালিয়ে যাওয়া মুশকিল হয়ে পড়ে। এ বাবদে তাদের প্রাইভেসি নিশ্চিত করা কর্তব্য বিবেচনা করে আমি চলে আসি বুশক্যাম্পের ইলেকট্রিক তার দিয়ে ঘেরা ফেন্সের বাইরে। খানিক হাঁটাচলা করে সময় কাটাতে গিয়ে দেখি সড়কের পাশে মাঠের বাদামি ঘাসে চরছে চারটি বুনো মোষ। তাদের পিঠে ও কানের কাছে বসে এঁটেল খুটে খাচ্ছে রঙচঙে কটি পাখি। যেন টাকাপয়সা পাবে এ রকম পাওনাদারের মত তাকিয়ে তাকিয়ে একটি মোষ আমার দিকে অগ্রসর হলে আমি দৌড়ে অন্য দিকে পিঠটান দেই। কিন্তু মখাইয়া গাছগুলোর তলা দিয়ে বেশি দূর যেতে পারি না। রেগে যাওয়া উলা-বিলাইয়ের মত গরগর করে ওঠে আরেকটি জানোয়ার। দেখি করচোরাস বুবাতি ঝাড়ের ঘন পাতার নিচে বসে শিকার করা হরিণের রান ছিড়ে রক্ত দিয়ে আচমন করছে বৃদ্ধ থুরথুরে গোছের এক সিংহ। সাহসের খামতি আছে বলে আমার খানিকটা দুর্নাম আছে, এ সুযোগে দুঃসাহস প্রদর্শন করে তা মোচনের কোনও প্রয়োজন বোধ করি না। তো চোরের মতো চো চো দৌড়ে ফিরে আসি বুশক্যাম্পে।



স্টোন কটেজের কাছাকাছি আমি ফিরে এসেছি দেখে ক্যাম্পফায়ারে বালতি ভরা ময়লা পানি ছুঁড়ে দেয়ার মত ছ্যাৎ করে তাদের ঝগড়াঝাটি আতকা নিভে যায়। ব্রিজিত ও ইয়োরগান অর্থবোধক দৃষ্টিতে পরস্পরের দিকে তাকায়। ঘণ্টাখানেক পর দুধে ব্র্যান্ডি মিশিয়ে তারা কার্লাকে ঘুম পাড়িয়ে আমার হাতে রেডিও মনিটরের ওয়াকিটাকি ধরিয়ে দিয়ে দুজনে ল্যান্ডরবার হাঁকিয়ে বেরিয়ে যায়। মাঁচার উপর বসে রেডিওতে বনি এম-এর গান শুনতে শুনতে দেখি তারা শুকানদীর ওপারের সড়কে খুব ধীরে ধীরে ড্রাইভ করে এগিয়ে যাচ্ছে। সড়কের বাঁকে ল্যান্ডরাবার করোচোরাস বুবাতি ঝোপের আড়ালে চলে গেলে ভাবি, আমার উপস্থিতিতে বোধ করি যুত-মত ঝাগড়াঝাটি কনটিনিউ করতে তাদের অসুবিধা হচ্ছিল। এবার ল্যান্ডরবারের প্রাইভেসিতে দ্বন্দ্বযুদ্ধ ইচ্ছা মাফিক বিস্তারিত হবে।

আমি কেবল মাত্র নোটবুকে আঁকিবুকি করছি। দেখি সড়কের কাছে বেরিয়ে এসেছে বয়সে খুবই তরুণ চ্যাংড়া গোছের দুটি সিংহ। তারা পরস্পরের সাথে খুনসুটিতে মেতে উঠলে তাদের দেখায় স্কুল পালিয়ে নির্জন মাঠের প্রান্তে গাছতলায় অন্তরঙ্গ হওয়া কিশোর কিশোরীর মত। খানিকপর ল্যান্ডরবারটি সড়কে সার্কোল কেটে ফিরে আসে আগের জায়গায়। স্কুলশিক্ষকের নজরে পড়লে যে রকম বালক বালিকারা অন্তরঙ্গতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয় দ্রুত, সে রকম—গাড়ির আওয়াজে সিংহ দুটি আলাদা হয়ে ইনোসেন্ট মুখে এসে সড়কে দাঁড়ায়।   ল্যান্ডরবারে ব্রিজিত ও ইয়োরগানের সাথে গার্ড মি. ককোসোরকে বসে থাকতে দেখে একটু অবাকও হই। তাকে বোধ করি এরা ড্রাইভ করতে করতে পথে গাড়িতে পিক করেছে। উঠতি বয়সের যুগল সিংহ সড়ক ধরে আস্তে ধীরে হাঁটে। তাদের পেছন পেছন গড়িয়ে গড়িয়ে মোরামের উপর দিয়ে মচমচিয়ে পথ ভাঙ্গে জলপাই রঙের ল্যান্ডরবার।



খানিক পর ল্যান্ডরবারটি বুশক্যাম্পে ফিরে আসতেই আমি নোটবুক গুটিয়ে ফেলি। স্টোন কটেজের দিকে যেতে যেতে দুজনে হাত নেড়ে আমাকে ওয়েভ করে। অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় দ্বন্দ্বযুদ্ধের অবসান হয়েছে, ব্রিজিতকে চনমনে দেখায়, বুঝতে পারি বিজয় তার হয়েছে, এখন চলছে সাময়িক সন্ধি, আর ইয়োরগানকে গৃহবন্দীর মত বিধ্বস্থ দেখায়।

কার্লা জেগে ওঠে। আমি রেডিও মনিটরে তাদের কথাবার্তা ও শিশুটির আধো আধো বোল পরিষ্কার শুনতে পাই। ইয়োরগান গিটারে টুংটাং ধ্বনি তুললে নুড়িপাথরে বয়ে যাওয়া ঝর্ণার মত খলখলিয়ে হাসে কার্লা। কটেজের বাইরে এসে ব্রিজিত সসেজ গাছের কাণ্ডে বেঁধে ঝুলিয়ে দেয় হ্যমোক বা দড়ির দোলনা। তাতে বসে দোল খেয়ে সে পরীক্ষা করে নেয় বাঁধন শক্তপোক্ত হয়েছে কি না।

হঠাৎ আমার ভেতরে নেমে আসে অবসাদ। বুঝতে পারি কেটে যাচ্ছে নোপেপ্ট ট্যাবলেটের ঘোর। এসব ড্রাগের সমস্যা এটা, মেয়াদ শেষ হলে ক্লান্তিতে ছেয়ে যায় শরীর। দেখি সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে আসছে ব্রিজিত। সে টুলে বসে নব ঘুরিয়ে রেডিও মনিটর অফ করে আমাকে খুঁটিয়ে দেখে। জিন্সের ওপর কোমরে সে ফিতা দিয়ে অ্যাপ্রোনের মত করে জড়িয়েছে ছোট্ট একটি হরিণের চামড়া। ওয়াকিটকি হাতে কার্লার দেখভালের দায়িত্বে থাকার জন্য সে আমাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানায়। মনে হয় তার আরও কিছু বলার আছে। তবে আমি এনগেইজ হতে চাই না। তাই হাই ছেড়ে হাতে তুলে নেই সোয়াজিল্যান্ড নিয়ে লেখা একটি পর্যটন পুস্তক। ব্রিজিত বেল্টে আটকানো পাউচ থেকে ধারালো কাঁচি বের করে হরিণের চামড়ার অ্যাপ্রোন থেকে কেটে নেয় একটি টুকরা। কাটাকুটি করে সে তাতে ক্রিসমাস ট্রি’র শেইপ দিয়ে আমার হাতে তুলে দিতে দিতে বলে, ‘ইউ লাভ বুকস্, পাতা মুড়ে রেখেছো কেন? দিস ইজ অ্যা ব্যাড হেবিট, তোমার বুকমার্কার ব্যবহার করা উচিৎ। টেক দিস অ্যাজ অ্যা বুকমার্কার। ’ আমি হরিণের চামড়ায় সদ্য তৈরি বুকমার্কারের মসৃণ পশমে আঙ্গুল বোলাতে বোলাতে ভাবি—মায়াময় চোখের প্রাণীটিকে ব্রিজিত কতদিন আগে রাইফেল দিয়ে শুট করেছে? তবে মুখে কিছু বলি না। আমার নীরবতায় একটু অবাক হয়ে সে বলে, ‘ইউ আর টায়ার্ড, আনচু?..ভেরি টায়ার্ড, আই ক্যান সি দ্যাট। ’ আমি ঘাড়ে হাত বুলাতে বুলাতে বলি, ‘বালিশ হারিয়ে গেছে তো, তাই কাল রাতে তাঁবুতে শুধু বেডরোল পেতে ঘুমাতে গিয়ে মনে হয় ঘাড় বাঁকা হয়ে গেছে। ’

আমার হাত ধরে মৃদু টানতেই আমি তার সাথে নেমে আসি মাঁচা থেকে। সে ট্রেলার থেকে খুঁজেপেতে একটি বাতাস ভরা এয়ার-পিলো বের করে তা ফোলাতে ফোলাতে বলে, ‘হ্যাভ অ্যা নেপ, হ্যামোকে শুয়ে ঘুমিয়ে নাও একটু। ’

গোধূলি গাঢ় হয়ে ওঠার মুখে আমার ঘুম ভাঙ্গে। হ্যামোকে বসে দুলতে দুলতে আমি পর্যটন পুস্তক থেকে বের করে আনি বুকমার্কারটি। আর তীব্রভাবে স্বপ্নে দেখা দৃশ্যের কথা ভাবি সাথে সাথে। কাজল চোখের শিশু হরিণের ইমেজটি স্বপ্নে এতই স্পষ্ট ছিল যে—তাকে বাস্তব বলে বিভ্রম হয়। মায়ামৃগটি হ্যামোকের কাছে এসে ছলছল দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল তার চামড়ায় তৈরি বুকমার্কারের দিকে।

[সমাপ্ত]



বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।