ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

মেলাতেই প্রতিবাদ ধ্বনিত হতো | সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

বইমেলা / শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৫
মেলাতেই প্রতিবাদ ধ্বনিত হতো | সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

এবার বইমেলা একটা প্রতিকূল পরিবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হচ্ছে মানুষ।

অনেকের কাছে এটা খুব একটা বইবান্ধব সময় নয়, তারপরও মানুষ আসছে প্রাণের টানে। এ মেলা তো আসলে বই বিক্রি আর কেনার মেলা নয়, প্রাণের মেলা। এ উচ্ছ্বাস থাকে, বাঙালি সংস্কৃতির মেলা। সবচেয়ে বড় কথা এটা প্রতিবাদী মেলা। এরশাদের আমলে যখন মেলা হতো, এই মেলাতেই প্রতিবাদ ধ্বনিত হতো। এ মেলাকে কেন্দ্র করে অনেক প্রতিবাদ আমরা পৌঁছাতে পেরেছি। এ মেলা এলে কেন্দ্র একেবাবে অগোছালো হয়ে যেত।

সেজন্য আমার মনে হচ্ছে, একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক আছে, এত মানুষ আসছে, এত প্রতিকূল পরিবেশেও, ওই একটা কারণে। অন্তরের যোগাযোগ যাকে বলে। আর দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, এবারের পরিসর অনেকটা ভালো, গত বছরের মত। গত বছরের থেকেও ভালো। বিশেষ করে বেশ কিছু প্যাভিলিয়ন আমরা পেয়েছি। আমার তো মনে হচ্ছে আমরা যাচ্ছি ওদিকে। তবে আলোটা আরও বেশি হওয়া উচিত বলে আমার মনে হয়েছে। বিশেষত ঢোকার মুখে আলোর বড্ড অভাব। আলোটা আরও বেশি হওয়া উচিত। আলো যত বেশি হবে, তত বেশি প্রাণ থাকবে। আরেকটা হচ্ছে, এখানে হাঁটতে হাঁটতে মানুষ ক্লান্ত হয়। এখানে একটু বিশ্রাম এবং চা খাওয়ার একটু ব্যবস্থা থাকলে ভালো হতো। কয়েকটা ফুড স্টোর থাকার প্রয়োজন ছিল। কিছু চেয়ার থাকতে পারত, বিশেষ করে সামনের দিকের যে খালি জায়গাটা আছে। তাহলে আরেকটু উন্নত মেলা আমরা পেতাম।

এখানে অনেক নতুন বই বেরিয়েছে। এই কয়েকদিনে কিন্তু গত বছরের থেকে বিক্রি-বাট্টাও কম নয়। প্রকাশকদের খুশি দেখলাম। প্রকাশকদের মুখে হাসি দেখতে মনে হয় (তারা মুখে যাই বলুন না কেন), তাদের বই কিনছে, মানুষ বই কিনছে। আরেকটা বিষয় হলো, অন্যান্য বছর যে পরিমাণ মানুষ আসে, তার ২৫/৩০ ভাগ মানুষ হয়ত বই কেনে। কিন্তু এবার যারা আসছে, তাদের ৬০ ভাগকেই দেখলাম বই কিনছে।   অর্থাৎ বই কেনার প্রত্যয় নিয়ে মানুষ আসছে, বই কিনে বাড়ি যাচ্ছে। তবে এবার পরিবারসহ আসার পরিমাণ একটু কম দেখলাম। বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে মা-বাবার আসার পরিমাণ একটু কম দেখছি। এক্ষেত্রে আমার মনে হয়েছে, মেলার সময়টা যদি দুপুরের দিকে এগিয়ে আনা যায়, তাহলে পরিবারের সবাই মিলে আসার প্রবণতা বাড়বে। সন্ধ্যার পর আসার বিষয়ে অনেকে হয়ত আগ্রহটা পায় না।

এবারের মেলায় আমার দুটা বই বেরুচ্ছে। দুটাই গল্প সংকলন—অন্যপ্রকাশ থেকে ‘মেঘশিকারি’  শিরোনামে গল্পগ্রন্থটি আসবে ১১ তারিখে। এছাড়া প্রথমা থেকে বেরুচ্ছে ‘তালপাতার সেপাই ও অন্যান্য গল্প’। এই গল্পগুলো আমি গত তিন বছরে লিখেছি। ‘মেঘশিকারি’র কিছু গল্প অবশ্য পুরনো গল্প। এর মধ্যে ১৯৭৩ সালে লেখা আমার প্রথম গল্পটি এটায় স্থান পেয়েছে, এছাড়া ১৯৮৪ সালে আরেকটা গল্প লিখেছিলাম। তখন লন্ডনের একটা পত্রিকায় ছাপা হয়, দেশে ছাপানোর সাহস হয়নি, সে গল্পটিও স্থান পেয়েছে।



বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।