আহমদ ছফা প্রয়াত হয়েছেন প্রায় এক দশক হতে চলল। অথচ তার লেখা সম্পর্কে সৃজনশীল ও চিন্তাশীল পাঠকের আগ্রহ একটুও কমেনি।
এ বছর একুশের বইমেলায় আহমদ ছফার অগ্রন্থিত প্রবন্ধ ও সলিমুল্লাহ খানের ৪টি নিবন্ধ নিয়ে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করেছে ছোটকাগজ ‘প্রতিবুদ্ধিজীবী’। এটি ‘প্রতিবুদ্ধিজীবী’র ১২তম সংখ্যা।
১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে আহমদ ছফা কলকাতা চলে যান। মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে সেখান থেকে ‘দাবানল’ পত্রিকা প্রকাশ করেন। ওই সময় কলকতায় প্রকাশিত হয় ‘ঢাকায় যা দেখেছি যা শুনেছি’ ও ‘পাকিস্তানের শিক্ষানীতি’ শিরোনামে আহমদ ছফার গুরুত্বপূর্ণ দুটি দীর্ঘ প্রবন্ধ।
প্রথম লেখাটিতে ছফা ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে ঢাকার রাজনৈতিক কী নির্মম চিত্র দেখেছেন তাই তুলে ধরেছেন। লেখাটিতে পাঠক দেখতে পাবেন এক যুদ্ধ-বিধ্বস্ত, অস্থির ঢাকার চেহারা। ‘ঢাকায় যা দেখেছি যা শুনেছি’ প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৭১ সালের জুলাই মাসে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ সহায়ক সমিতির পক্ষে যতীন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ’তে।
দ্বিতীয় লেখাটি তৎকালীন পাকিস্তানের বাংলাদেশের প্রতি বৈষম্যমূলক শিক্ষানীতি নিয়ে। এ লেখাটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৭১ সালেরই আগস্ট মাসে কলকাতার ‘রক্তাত্ব বাংলায়’। আহমদ ছফার রচনাবলীতে এখন পর্যন্ত দুর্লভ এ লেখা দুটি প্রকাশ পায়নি।
‘প্রতিবুদ্ধিজীবী’র এই সংখ্যায় ছাপা হওয়া সলিমুল্লহ খানের চারটি লেখার শিরোনাম হচ্ছে ‘পরিবার গোষ্ঠী রাষ্ট্র’, ‘ আহমদ ছফার বাংলা মদ’, ‘জাতীয় মুক্তির সংগ্রাম’ ও ‘বাঙালি মুসলমানের ফাঁড়া’। নিবন্ধগুলি সবই আহমদ ছফার কয়েকটি বইয়ের আলোচনা উপলক্ষে বিভিন্ন সময়ে লেখা। এগুলির মধ্যে ‘আহমদ ছফার বাংলা মদ’ শিরোনামের লেখাটি এখানে প্রথম ছাপা হলো।
এ কথা আজ অকপটে স্বীকার করা যায়, সলিমুল্লাহ খান আহমদ ছফার লেখা ও চিন্তাজগৎকে বিভিন্ন দিক থেকে যেভাবে বিশ্লেষণ করেছেন, এভাবে আর কেউ করেননি। ফলে আহমদ ছফা সম্পর্কে সলিমুল্লাহ খানের লেখা সবসময়ই আলাদা গুরুত্বের দাবি রাখে।
প্রতিবুদ্ধিজীবীতে প্রকাশিত আহমদ ছফার দুটি দুর্লভ প্রবন্ধ ও সলিমুল্লাহ খানের আহমদ ছফার সাহিত্য নিয়ে বিশ্লেষণাত্মক ৪টি নিবন্ধ পাঠকের চিন্তাজগতকে অনেকখানি সমৃদ্ধ করবে বলেই আশা রাখি।
প্রতিবুদ্ধিজীবী, সম্পাদক : সাদাত উল্লাহ খান
অতিথি সম্পাদক : আবুল খায়ের মোহাম্মদ আতিকুজ্জামান
প্রচ্ছদ : শিবু কুমার শীল, প্রকাশকাল : ফেব্রুয়ারি ২০১০
মূল্য : ১০০ টাকা
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৫৫০, জুলাই ২৮, ২০১০