ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

প্রতিদিনের ধারাবাহিক

১৯৮৪ | জর্জ অরওয়েল (খণ্ড ২ কিস্তি ৫৫) || অনুবাদ: মাহমুদ মেনন

অনুবাদ উপন্যাস / শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫০ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৫
১৯৮৪ | জর্জ অরওয়েল (খণ্ড ২ কিস্তি ৫৫) || অনুবাদ: মাহমুদ মেনন

George_Orwell_inner১৯৮৪ (নাইনটিন এইটি ফোর)—বিখ্যাত ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক, সাহিত্য সমালোচক ও সাংবাদিক জর্জ অরওয়েলের অমর গ্রন্থ। ১৯৪৯ সালে তার মৃত্যুর এক বছর আগে উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়।

২০০৪ সালে ‘দি গার্ডিয়ান’র জরিপে উপন্যাসটি বিশ্বের চিরায়ত গ্রন্থের তালিকায় উঠে আসে সবার উপরে। ইংরেজি ভাষার এই উপন্যাসটি কালজয়ী হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে। যাতে ফুটে উঠেছে সমসাময়িক বিশ্ব রাজনীতি, যুদ্ধ, শান্তির প্রেক্ষাপট। বাংলানিউজের জন্য বইটি বাংলায় অনুবাদ করছেন মাহমুদ মেনন। উল্লেখ্য, জর্জ অরওয়েলের মূল নাম এরিক আর্থার ব্লেয়ার। ১৯০৩ সালের ১৫ জুন ব্রিটিশ ভারতের বিহার রাজ্যের মথিহারিতে জন্মগ্রহণ করেন। মৃত্যুবরণ করেন লন্ডনে ১৯৫০ এর ২১ জানুয়ারি। তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস ‘দি রোড টু উইগ্যান পাইয়ার’, ‘হোমেজ টু ক্যাটালোনিয়া’, ‘এনিম্যাল ফার্ম’।

___________________________________

শুরু থেকে পড়তে ক্লিক করুন

দ্বিতীয় খণ্ডের ৫৪তম কিস্তি
___________________________________

এসব প্রকল্পের কোনোটিই কখনো বাস্তবায়নের ধারেকাছেও পৌঁছায় না, আর তিন সুপার স্টেটের কোনোটিই একের চেয়ে অপরে বড় শক্তি হয়ে ওঠে না। আরো বেশি দেখার বিষয় হচ্ছে, তিন শক্তির প্রত্যেকেই আনবিক বোমা নামের একটি অস্ত্রের মালিক হয়ে আছে, যা মূলত এখন তারা যেসব শক্তি অর্জনের চেষ্টায় রত তার চেয়েও অনেক বেশি শক্তিধর। পার্টি অবশ্য তার স্বভাবজাতভাবেই দাবি করে চলছে তারাই এই আনবিক বোমার প্রথম আবিষ্কারক এবং তা আবিষ্কার হয় ১৯৪০’র দশকে আর তার দশ বছর পরে এর ব্যাপকভিত্তিক ব্যবহারেও তারা ছিল প্রথম।



সে সময় প্রধানত ইউরোপীয় রাশিয়া, পশ্চিম ইউরোপ আর উত্তর আমেরিকার শিল্পকেন্দ্রগুলোতে এমন শত শত বোমা ফেলা হয়। এর প্রভাবে সকল দেশের শাসক শ্রেণি ধরে নিয়েছিল আর গুটি কয় আনবিক বোমার বিস্ফোরণ পুরো বিশ্বের সংগঠিত সমাজব্যবস্থায় ধস আনবে আর এমনকি তাদের নিজেদের শক্তিরও ইতি ঘটবে। এ অবস্থায় কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিক চুক্তি ছাড়া, বিনা সন্ধিতেই ঠিক হয়ে যায় আর কোনো বোমা ফেলা হবে না। তিন শক্তিই তাদের আনবিক বোমা বানানোর কাজ অব্যাহত রাখল আর মজুদ করে রাখল নতুন কোনো মারণাস্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো শক্তি হিসেবে, তারা মনেই করে আজ নয়ত কাল তেমন কোনো মারণাস্ত্র আসবেই। ইতোমধ্যে কেটে গেছে ত্রিশ কিংবা চল্লিশটি বছর আর সেই যুদ্ধকলা অনেকটা নিশ্চল হয়ে পড়েছে।

আগে যতটা দেখা যেত এখন তার চেয়ে বেশি হারে হেলিকপ্টারের ব্যবহার চলে, বোমারু বিমানকে টেক্কা দিয়ে স্বয়ংচালিত ক্ষেপনাস্ত্র জায়গা করে নিয়েছে, আর ঠুনকো যুদ্ধজাহাজ সরিয়ে দিয়ে তৈরি হয়েছে ভাসমান দুর্গ; এর চেয়ে বিশেষ কোনো উন্নয়ন ঘটেনি। ট্যাঙ্ক, সাবমেরিন, টর্পেডো, মেশিনগান এমনকি রাইফেল, হ্যান্ড গ্রেনেডের ব্যবহার আজও রয়েছে। সংবাদপত্রে টেলিস্ক্রিনে একের পর এক হত্যাকাণ্ডের খবর আসে ঠিকই কিন্তু আগের সেসব বেপরোয়া যুদ্ধের মতো, যাতে শত শত, হাজার হাজার এমনকি লাখ লাখ মানুষ কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মারা পড়ত, তেমনটি আর ঘটে না।

তিন প্রধান রাষ্ট্রের কেউই বড় ধরনের ব্যর্থতার ঝুঁকি থাকে এমন কৌশল হাতে নেয় না। বড় কোনো অভিযান বলতে কোনো এক মিত্রপক্ষের ওপর আকস্মিক হামলা। তিন প্রধান শক্তিরই একই কৌশল, অথবা তাদের সকলের বিশ্বাসও একই রকম। যুদ্ধ, দরকষাকষি চালিয়ে যাওয়া আর মোক্ষম সময় বুঝে বিশ্বাসঘাতকতা এই তিনের সমন্বয়ে পরিকল্পনা সাজানো থাকে। উদ্দেশ্য একটাই, নিজের কিংবা শত্রুদেশকে ঘিরে থাকা ঘাঁটিগুলো দখলে আনা, আর অতঃপর শক্রর সঙ্গে সন্ধি কিংবা মিত্রতার চুক্তিতে উপনীত হয়ে শান্তির পতাকা উড়িয়ে বছরের পর বছর সন্দেহকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা। এই সময়ে আনবিক বোমায় ভরা রকেটগুলোকে কৌশলগত অবস্থানে বসানোর কাজ চলতে থাকে আর অবশেষে সেগুলো একযোগে চালিয়ে দেওয়া—যাতে তার প্রভাবে ঘটে যায় ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ আর প্রতিঘাত হয়ে ওঠে অসম্ভব।

এরপর সময় এসে যায় বিশ্বের বাকি শক্তিগুলোর সঙ্গে মিত্রতার চুক্তিতে উপনীত হওয়ার আর নতুন একটি হামলার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার। বলাই বাহুল্য, এই ভাবনা বা পরিকল্পনা স্রেফ তাদের দিবাস্বপ্ন, যার বাস্তবায়ন পুরোই অসম্ভব। উপরন্তু, বিষুবরেখাকে ঘিরে থাকা বিতর্কিত এলাকাগুলো আর মেরুঅঞ্চলের দখল ইস্যু ছাড়া আর কোনো যুদ্ধ কোনোকালেই দেখা যায়নি। শত্রুপক্ষের সীমারেখায় হামলার ঘটনা ঘটেনি কখনোই। এর মানে হচ্ছে, বড় শক্তিগুলোর মধ্যে কিছু কিছু সীমান্ত এলাকা নিয়ে বনিবনা হয়ে আছে।

দ্বিতীয় খণ্ডের ৫৬তম কিস্তির লিংক



বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।